Home রাজনীতি শক্তি খাটিয়ে চলবেন, সরকার বরদাশত করবে না: বিএনপিকে হানিফ

শক্তি খাটিয়ে চলবেন, সরকার বরদাশত করবে না: বিএনপিকে হানিফ

30

বিশেষ প্রতিনিধি: শক্তি খাটিয়ে সমাবেশ করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্য বিএনপি নেতাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি। তিনি বলেন, দেশে সংবিধান আছে, আইন মেনে চলতে হবে। কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়। আপনারা (বিএনপি) সমাবেশ করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুমতি চেয়েছেন, অনুমতি দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেখানে অনুমতি দিয়েছে সেখানেই সমাবেশ করতে হবে, না হলে করবেন না। শক্তি খাটিয়ে চলবেন, সরকার বরদাশত করবে না।

সোমবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে নোয়াখালী শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্র গড়ার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। ঠিক এই সময়ে বিএনপি-জামায়াত আবার দেশকে পিছনে ফিরিয়ে নিতে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এই অশুভ শক্তি দেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি। ক্ষমতায় থাকতে কোনো উন্নয়ন করেনি বরং দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। তারা আবার বাংলাদেশকে পিছন দিকে নিয়ে যেতে চায়। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার সময় বিএনপি-জামায়াত সরকারের অর্জন কি ছিলো- এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, তারা বাংলাদেশকে বিশ্বে পরপর পাঁচ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিলো। খাদ্য সংকট, বিদ্যুৎ সংকট ছিল ভয়াবহ। দেশের মানুষ আর দুর্নীতি দেখতে চায় না। তাদের নেতৃত্বে দেখতে চায় না।

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নামে ‘মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহারে দাবি জানানো বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে হানিফ বলেন, এই মামলা কে দিয়েছে? আওয়ামী লীগ সরকার দেয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় হয়েছে। সেই সময় সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। তিনি বিএনপির পেয়ারের লোক। এতিমের টাকা আাত্মসাতের মামলায় খালেদা জিয়া আদালতে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারেননি। যদি মিথ্যা মামলা হবে তাহলে কেন প্রমাণ করতে পারেননি- বিএনপি নেতাদের প্রতি এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আপনাদের অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, প্রয়াত আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ মামলা লড়েছিলেন। ‍কিন্তু খালেদাকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারেননি। মামলার তারিখ ৬০ বার পরিবর্তন করেছেন। ভেবেছেন দীর্ঘসূত্রিতা করে আওয়ামী লীগ সরকার চলে গেলে মামলা প্রত্যাহার করে নিবেন।

বিএনপি নেতারা দিশেহারা হয়ে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছেন- এমন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব বরাবরের মতো নতুন করে মিথ্যাচার শুরু করেছেন। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান এতিমের টাকা আত্মাসাৎ করেছিল আদালত কর্তৃক তা প্রমাণিত। মিথ্যাচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি নেতা অপকর্ম করে ফলে মামলা হয়। মামলা হলেই বলে মিথ্যা মামলা। রাস্তায় বাস পুড়িয়ে, ট্রেনে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করবেন আর মামলা হলে বলবেন আমাদের নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে। তাহলে কি আসমান থেকে ভূত-প্রেত এসে এসব আগুন দেয়। হরতাল ডেকে গাড়িয়ে আগুন দেন, অবরোধ করে গাড়িতে আগুন দেন আর মামলা হলে জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চান।

মির্জা ফখরুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনার নেতা খালেদা জিয়া আর তারেক রহমানের মাত্র কয়েকটি মামলায় দণ্ড হয়েছে। এখনো নাইকো-গ্যাটকো মামলার মতো আরো মামলা রয়ে গেছে। প্রমাণ আছে, বিচার চলছে। রায় হলে আপনাদের অনেক নেতাকেই কারাগারে কাঁটাতে হতে পারে। দেশের মানুষকে মিথ্যাচার করে বিভ্রান্ত করা যাবে না। হানিফ বলেন, বিএনপির কয়েকটা সমাবেশে লোক হওয়ার পর দলের নেতারা দিশেহারা হয়ে হুঁশ হারিয়ে ফেলেছেন। দুই- চারটা মিছিলে লোক দেখে হুঁশ হারাবেন না।

বিএনপি-জামায়াতের যেকোনো অশুভ তৎপরতা রুখে দেয়ার জন্য আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের বৃহৎ ও প্রাচীন রাজনৈতিক দল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন নিয়ে লড়াই, সংগ্রাম করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে উন্নত রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে শেখ হাসিনা এগিয়ে চলেছেন। অন্ধকারে নিমজ্জিত বাংলাদেশকে আলোয় উদ্ভাসিত করেছেন। তার এই পথচলাকে তাঁর পাশে থেকে সহায়তা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনকি সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলি ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর। সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক অধ্যক্ষ খায়রুল আনম সেলিম।