Home প্রচ্ছদ ভোলায় ১১৬ টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দূর্গা পূজার উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে

ভোলায় ১১৬ টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দূর্গা পূজার উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে

55

কামরুজ্জমান শাহীন,ভোলা॥ দ্বীপ জেলা ভোলার পূজা মন্ডপে মন্ডপে শারদীয় দূর্গা পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে। এবছর জেলার ৭টি উপজেলায় মোট ১১৬ টি পূজামন্ডপে শারদীয় দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে জেলার অধিকাংশ পূজা মন্ডপের প্রতীমা গড়ার মূল কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এখন পূজা মন্ডপগুলোতে প্রতিমা রং করার কাজে চলছে ব্যস্ততা।
বিগত বছরের তুলনায় এ বছর দূর্গাৎসবে দ্বিগুন ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে আয়োজকদের। এরপরও থেমে নেই কোন আয়োজন। হাতে মাত্র আর কয়েক দিন বাকি। তাই রাত-দিন চলছে পূজা মন্ডপগুলোতে প্রতিমা বিভিন্ন রকমারী আলোক সজ্জার সাজানো হবে মন্ডপ ও তার আশপাশ। চলছে সাজ-সজ্জার ধুম। সবমিলিয়ে উৎসবের রঙে সাজছে পূজা মন্ডপগুলো।
ভোলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপের কমিটি সূত্রে জানা গেছে, শেষ পর্যায়ে কোন কোন মন্ডপে চলছে রংতুলির কাজ, ইতোমধ্যে বিভিন্ন মন্ডপে চলছে উৎসবের ব্যাপক প্রস্তুুতি। আবার কোথাও চলছে সাজ-সজ্জা, প্যান্ডেল ও ডেকোরেশনের কাজ। অপরদিকে চলছে কেনা কাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সনাতন ধর্মালম্বীরা। জামা কাপড় তৈরি, কেনা-কাটায় সরগরম বিপণীবিতানগুলো।
ভোলা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানাগেছে, এ বছর জেলার ৭টি উপজেলার ১১৬ টি মন্ডপে শারদীয় দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে ভোলা সদর উপজেলায় ২৭টি, দৌলতখাঁন উপজেলায় ৮টি, বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ২০টি, তজুমদ্দিন উপজেলায় ১৬টি, লালমোহন উপজেলায় ২২, চরফ্যাশন উপজেলায় ১৩টি ও মনপুরা উপজেলায় ১০টি। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিমা তৈরীতে দ্বিগুন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানালেন আয়োজকরা।
রাজবাড়ি, ফরিদপুর, ভাঙ্গা ও বিভিন্ন এলাকা থেকে শিল্পীরা ভোলায় এসে এসব প্রতিমা তৈরী করে থাকেন। ফরিদপুরের ভাঙ্গা’র ভাস্কর শিল্পীরা নিমাই পাল জানান, এবছর তারা ভোলা জেলায় ৫/৬ টি প্রতিমা তৈরীর কাজ করেছে। এর মধ্যে সর্বচ্চো দেড় লক্ষ থেকে দুই লক্ষ টাকা ও সর্বনিম্ম প্রতিমা তৈরীর মজুরী ১ লক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিচ্ছেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর রং, মাটিসহ সব জিনিষের দাম ও শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ ব্যাপারে ভোলা সদর উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটি ও ওয়েষ্টান পাড়া শতদল ক্লাব সংলগ্ন দূর্গা পূজা মন্ডপের সভাপতি শান্ত ঘোষ বলেন, দূর্গা পূজা পরিচালনার লক্ষ্যে সরকার পক্ষ থেকে কিছু অনুদার আমরা পেয়ে থাকি। তবে তা অতি সামান্য। এবছর আমরা সরকারের কাছে অনুদান বৃদ্ধির জন্য আবেদন করছি।
অপরদিকে ভোলা জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি গোরাঙ্গ চন্দ্র দে ও সাধারন সম্পাদক অসিম কুমার শাহ বলেন, আগামী ১ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে দেবী দুর্গার অকালবোধন শুরু হবে। পূজাকে সামনে রেখে পূজা উদযাপন পরিষদের সকল কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। প্রতিটি মন্ডপে সিসি ক্যামেরা, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় পূজা কমিটির নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবককর্মী নিয়োগ করা হবে। শান্তি পূর্ণ পরিবেশে উৎসব পালনের লক্ষ্যে প্রশাসনিক ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে ভোলা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, শারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষ্যে জেলার ৭ উপজেলার থানা পুলিশের পক্ষ থেকে নেয়া হবে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পূজা চলাকালীন দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি সাদা পোশাকে নারী ও পুরুষ পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা বিভিন্ন পূজা মন্ডপসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকা গুলোতে বিশেষ নজরদারী রাখবে।
এছাড়াও পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), কোস্টগার্ড, গ্রাম পুলিশ সদস্য মোতায়েত থাকবেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে শারদীয় দূর্গাউৎসব পালনে পুলিশের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগীতা করবেন বলেও এই কর্মকর্তা জানান।