বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) মেডিকেল সেন্টারের স্বাস্থ্যসেবার মান নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
মাসের পর মাস অফিস না করেই বেতন নেবারও অভিযোগ রয়েছে চিকিৎসক ডা. অভিষেক বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। গত এক বছরের বেশি সময় ধরে কখনোই তাকে অফিস সময়ে সেবা দিতে দেখা যায়নি। তবে নিয়মিত গোপালগঞ্জ সদরে নিজস্ব ক্লিনিকে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এছাড়াও অন্য দুই চিকিৎসক ডা. লিখন চন্দ্র বালা ও ডা. রোকাইয়া আলম তাদের মন মত অফিস করছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডাক্তার শূণ্য চিকিৎসা কেন্দ্রে উপস্থিত নার্স, ব্রাদার ও বয় হিসেবে কর্মরত কর্মচারীদের দিয়েই চলছে মেডিকেল সেন্টার। তারাই শিক্ষার্থীদের সমস্যার কথা শুনে ঔষধ প্রদানসহ ডাক্তারের ভূমিকা পালন করছেন।
এদিকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতি সেমিস্টারে চিকিৎসাসেবা বাবদ ফি ২০০ টাকা করে নেওয়া হলেও চিকিৎসকের সেবা না পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ জানিয়ে বলেন, মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসকেরা কর্মরত থাকলেও তারা নিয়মিত অফিসে আসেন না। ফলে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে গিয়েও ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অনেকটা বাধ্য হয়েই আমাদের ছোটখাট সমস্যার জন্যও গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে যেতে হয়। এদিকে অনেক সময় ঠান্ডা, জ্বরের ঔষধসহ স্যালাইনও পাওয়া যায় না।
তারা আরও জানান, মাসের পর মাস আমারা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোন উদ্বেগ নাই। অপরদিকে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চব্বিশ ঘণ্টা চিকিৎসা সেবা থাকলেও আমরা তা পাচ্ছি না। এসময় তারা মেডিকেল সেন্টারের মান উন্নয়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব দপ্তরের তথ্যসূত্রে জানা যায়, প্রতি মাসে সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. অভিষেক বিশ্বাস অফিস না করেই মাসে ৪৯ হাজার ৯০ টাকা বেতন পাচ্ছেন। যা হিসেবের অঙ্কে প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা৷ হিসাব দপ্তরের কর্মকর্তাদের দাবি, ঐ চিকিৎসককে কখনোই তারা দেখেনি। তিনি ব্যাতীত অন্য দুজন মেডিকেল অফিসার ডা. লিখন চন্দ্র বালা ও ডা. রোকাইয়া আলম কর্মরত থাকলেও মাসের বেশি সময় তাদের সেবা থেকে বঞ্চিত হন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মাঝেমধ্যে তারা অফিসে আসলেও অফিস সময় শেষ হওয়ার আগেই দুপুরের খাবারের বিরতিতে চলে যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. অভিষেক বিশ্বাস জানান, আমি অফিস করি না, বেতন নেই সেটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বুঝবে। তবে আপনারা শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করতে চাইলে অভিযোগ করতে পারেন। আমি তাদের সাথে বুঝব।
এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার মোঃ দলিলুর রহমানকে জানানো হলে তিনি বলেন, একজন চিকিৎসক এমন কথা বললে আমার আর কোন কথা থাকে না। আপনারা উপাচার্যকে অবগত করতে পারেন ।
উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুবকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি জানান, আসলে ডা. অভিষেক অনেক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন সার্জন। তিনি চুক্তি ভিত্তিতে আমাদের সাথে তার চিকিৎসা সেবার কথা রয়েছে। তিনি অফিস না করলেও চেম্বারে আমাদের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিনামূল্যে সেবা প্রদান করে থাকেন। তাছাড়া করোনাকালীন সময়েও তিনি আমদের যথেষ্ট সাহায্য করেছেন। এসব বিষয় বিবেচনা করে তাকে নানা বিষয়ে ছাড় দেওয়া হয়।