মাহবুবুল আলম, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে দলিল লেখক সমিতির ব্যানারে অবৈধ ভাবে দাতা-গ্রহীতাকে জিম্মি করে নির্দিষ্ট হারে চাঁদা আদায়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নিবন্ধন অধিদপ্তর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা রেজিস্ট্রারকে। এদিকে জেলা রেজিস্ট্রার (ডিআর) নির্দেশ দিয়েছেন শাহজাদপুর সাবরেজিস্টার মোঃ সামিউল হাসানকে বিষয়টি তদন্তের জন্য। গত ৬ সেপ্টেম্বর নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহা পরিদর্শক শহীদুল আলম ঝিনুকের স্বাক্ষরিত ১০.০৫.০০০০.০০৫.২২_২৫০(৬১) স্মারকে এ নির্দেশনা দেওয়ার একসপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও তদন্তের কোন অগ্রগতি না হওয়ায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে শাহজাদপুর দলিল লেখকদের মধ্যে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শাহজাদপুর সাবরেজিস্টারের কার্যালয়ে দলিল লেখক সমিতির ব্যানারে দাতা-গ্রহীতাকে জিম্মি করে দীর্ঘদিন ধরে নির্দিষ্টহারে চাঁদা আদায় করে আসছে একটি চক্র। চাঁদা আদায়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক, পাবনা জেলা কার্যালয় তদন্ত করে দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ ও সমিতির প্রধান উপদেষ্টা জাহিদ হাসানের সম্পৃক্ততা পেয়ে প্রতিবেদন পেশ করেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ে। বিষয়টি নিয়ে গত ৮ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশনের এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের মহাপরিচালক জিয়াউদ্দিন আহমেদ ০০.০১.০০০০.১০৯.৩০.০০১.১৯-১৩১২ নং স্মারকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নিবন্ধন অধিদপ্তরে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে নিবন্ধন অধিদপ্তর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের এ নির্দেশ দেন।
বিষয়টি নিয়ে দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এদিকে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে শাহজাদপুর সাবরেজিস্টার সুব্রত কুমার গুণে গুণে উৎকোচ গ্রহণ করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে বরখাস্ত হন এবং তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। মামলাটি এখনও চলমান রয়েছে । এরপর কয়েক মাস অফিস বন্ধ থাকার পর অস্থায়ী সাবরেজিস্টার মোঃ সামিউল হাসানের মাধ্যমে অফিস চালু হলেও থেমে নেই উৎকোচ গ্রহণ। কেবল কৌশল পরিবর্তন করে ভিন্ন পথে মোটা অংকের অর্থ উৎকোচ নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ একাধিক দলিল লেখক ও ভুক্তভোগীদের। হাত বদল করে প্রতিটা দলিল রেজিস্ট্রি করতে সরকারি ফি-এর বাইরে অতিরিক্ত ২৫ শত টাকা আদায় করা হয় অফিসের কেরানি মহির উদ্দিনের মাধ্যমে বলেও প্রকাশ পেয়েছে একাধিক অডিও রেকোর্ডের মাধ্যমে। বিষয়টি নিয়ে দলিল লেখকদের সাথে কথা বললে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘ আমরা নিরুপায়। অতিরিক্ত অর্থ না দিলে দিনের পর দিন দলিল রেজিস্ট্রি হবে না। সমস্ত কাগজপত্র ঠিক থাকলেও ২৫ শত টাকা অতিরিক্ত দিলে তবেই দলিল রেজিস্ট্রি হয় না হলে হয়না। আমরা বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত উৎকোচ দিয়ে দলিল করি।’
এ বিষয়ে শাহজাদপুর সাবরেজিস্টার মোঃ সামিউল হাসান জানান,’ ডিআর স্যার আমাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। খুব তাড়াতাড়ি তদন্ত শুরু করবো।’ অতিরিক্ত উৎকোচ আদায়ের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি অস্বীকার করে জানান,’ সরকারি ফি এর বাইরে কোন অর্থ নেওয়া হয় না। ‘