Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস ৩১৭ নং কক্ষে নির্যাতন চালাতেন ধর্ষণে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর

৩১৭ নং কক্ষে নির্যাতন চালাতেন ধর্ষণে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর

19

জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) এক দম্পতিকে ডেকে এনে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় নতুন নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের ৩১৭ নম্বর কক্ষে থাকতেন ধর্ষনে অভিযুক্ত জাবি শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান। তার সকল অপকর্মের সাক্ষী এই কক্ষটি। চাঁদা বা মুক্তিপণের দাবিতে এখানেই আটকে রেখে নির্যাতন করা হতো। তিনি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী বলে জানা গেছে।

গত শনিবার সন্ধ্যার পর বহিরাগত এক ব্যক্তিকে এই রুমেই আটকে রেখে হলের পাশের জঙ্গলে নিয়ে তার (ব্যক্তি) স্ত্রীকে ধর্ষণ করেন মোস্তাফিজ ও তার সহযোগীরা।

নাম পরিচয়ে অনিচ্ছুক মীর মশাররফ হোসেন হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী জানান, ঐ রুমে বিভিন্ন সময়ে বহিরাগতদের ধরে এনে শারীরিক নির্যাতন করা হতো। বেশিরভাগ সময় দেখা যেতো রুমটি তালাবদ্ধ। মাঝেমধ্যে উচ্চস্বরে গানের আওয়াজ আসতো রুম থেকে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একজন যুগ্ম-সম্পাদক ( নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, হলের ৩১৭ নম্বর কক্ষটিকে মোস্তাফিজ ও তার সহযোগীরা টর্চার সেল হিসাবে ব্যবহার করতেন। ওই কক্ষে তারা নিয়মিত ইয়াবা সেবন করতেন। এছাড়া সিএন্ডবি, ডেইরি গেট ও হলের সামনের দোকানগুলো থেকে তারা নিয়মিত চাঁদা আদায় করতেন। তাদের অত্যাচারে হলের সাধারণ শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দোকানদাররা অতিষ্ঠ। জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, ছাত্রলীগে অপরাধী ও আদর্শচ্যুত নেতাকর্মীদের কোনো জায়গা নেই। শনিবার রাতে মোস্তাফিজ জঘন্য কাজ করেছে। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। সে অপরাধী। আমরা চাই ধর্ষণকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি হোক।

মূল অভিযুক্তকে পালাতে সহায়তা করার নির্দেশ দেওয়ার বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, শনিবার সকালে আমি ঢাকায় গিয়েছিলাম। রাত ১টায় ক্যাম্পাসে আসি। তাই সহায়তাকারী কারও সঙ্গে দেখা করার কোনো সুযোগ নাই। ক্যাম্পাসে আসার পর প্রশাসন আমাকে দায়ীদের ধরিয়ে দিতে সহযোগিতা করার কথা জানায়। সেজন্য আমি হলের সবাইকে ফোন দিয়ে অপরাধীদের ধরিয়ে দিতে বলেছি। ধর্ষকের কোনো দল নাই। এছাড়া শাহ পরানের সঙ্গে আমার কাল থেকে আজ পর্যন্ত যোগাযোগই হয়নি। হলের কক্ষকে টর্চার সেল হিসাবে ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি অবগত নই। হলটি অনেক বড়। এর পুরো খোঁজ রাখা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। দায়ীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্টের কাছে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, মোস্তাফিজ ও তার সহযোগীরা ঐ রুমে থাকতেন। তাদের সকল অপকর্মের বিষয়ে আমরা বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেছি। হল প্রশাসন তাদের সর্বোচ্চ দাবি করে। এছাড়াও এসবের সাথে আর কেউ জড়িত আছে কি না সে বিষয়েও আমরা খোঁজ নিচ্ছি।