Home সারাদেশ ১০ আদিবাসী পরিবারের বাগান দখলের আশংকায় শ্রীমঙ্গলে সংবাদ সম্মেলন

১০ আদিবাসী পরিবারের বাগান দখলের আশংকায় শ্রীমঙ্গলে সংবাদ সম্মেলন

20

বিশেষ প্রতিনিধি, শ্রীমঙ্গল : ১০ আদিবাসী পরিবারের বাগান দখলের আশংকায় শ্রীমঙ্গলে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ ২০২৪) দুপুর ১২টায় শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন বৃহত্তর সিলেট বিভাগীয় ত্রিপুরা উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুমন দেববর্মা। তিনি শ্রীমঙ্গল উপজেলার সদর ইউনিয়নের দিলবরনগর এলাকার নরেশ দেববর্মার ছেলে। তিনি দিলবরনগর এলাকাবাসীর পক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।

শাহীবাগ এলাকার বাসিন্দা মৃত দিলবর মিয়ার ছেলে মো. আনোয়ার হেসেন কর্তৃক মিথ্যা গাছ কাটার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ও প্রতিবাদ জানিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। তিনি ১০ আদিবাসী পরিবারের বাগান দখলের আশংকা প্রকাশ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে সুমন দেববর্মা আরও বলেন, শ্রীমঙ্গল উপজেলার বালিশিরা পাহাড় ব্লক-২ বি আর এস দাগ নং- ৫৯৬ দাগে নিকটস্থ দাগের জনসাধারণের চলাচলের জন্য রাস্তা উল্লেখ রয়েছে। যাহার সিট নং-০৩, শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড জেরিন চৌমুহনা হতে বালিশিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৪নং খাসিয়া পুঞ্জির রাস্তা হইতে সংযোগ সড়ক ৫৯৬ নং দাগ পর্যন্ত রাস্তা উল্লেখ রয়েছে, যাহার আরএস ম্যাপ বিদ্যমান রয়েছে। উক্ত রাস্তাটি শতবছরের পুরাতন। এটি একমাত্র রাস্তা ঘিরে যা আদিবাসী ত্রিপুরা, গারোসহ ১০টি পরিবারের যাতায়াত বসবাস এবং ১২ জন মালিকের লেবু, আনারস, কাঠাঁল বাগান রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আনোয়ার হোসেন গতকাল বুধবার (১৩ মার্চ ২০২৪) সংবাদ সম্মেলনে যে অভিযোগ করেছেন তা সত্যি নয়।

সুমন দেববর্মা বলেন, ‘আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করেছেন যে, ‘দিলবরনগর এলাকার মৃত লক্ষীরাম দেববর্মার ছেলে নরেশ দেববর্মা (৬২) এর নেতৃত্বে তার ছেলে সুমন দেববর্মা (৪০) ও শিমুল দেববর্মা (৩৮), হরিমন এর ছেলে রাজেশ দেববর্মাসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩০-৩৫ জন দেশীয় অস্ত্র-সন্ত্র নিয়ে বে-আইনীভাবে প্রবেশ করে বাগানের পাহারাদারদের হাত-পা বেঁধে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এসময় সন্ত্রাসীরা বাগানে লাগানো সুপারী ও লেবু গাছ কেটে ফেলে এবং বাগানের লেবু ও আনারস লুটপাট করে নিয়ে যায়।” – সুমন দেববর্মা সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনাকে সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত দাবী বলে উল্লেখ করেন।

সুমন দেববর্মা সংবাদ সম্মেলনে উল্টো অভিযোগ করে বলেন, আনোয়ার হেসেন বিভিন্ন সময় রাস্তার মধ্যে ১ হাত, ২ হাত করে সুপারি গাছ লাগিয়ে ক্রমেই তার সীমানার ভেতরে রাস্তাটিকে প্রবেশ করিয়া নেয়। এর ফলে রাস্তাটি সংকুচিত হতে থাকে। রাস্তার পার্শ্বে জায়গা থাকার সুযোগ নিয়ে রাস্তা সংকোচিত করে ভিতরে আদিবাসী ত্রিপুরা, গারোসহ বসবাসরত ১০টি পরিবার ও ১২ জনের লেবু, আনারস, কাঠাল এর বাগানগুলো দখল করাই তার উদ্দেশ্য। রাস্তা সংকোচিত করার ফলে বাগান মালিকগনের সার, গোবর নিয়ে গাড়ী প্রবেশ করতে পারে না। এতে করে লেবু, আনারস, কাঠাল শহরে নিয়ে আসার জন্য দীর্ঘপথ ঠেলা গাড়ী দিয়ে মেইন রোডে আনতে হয়।
গ্রামবাসী দীর্ঘদিন যাবত প্রতিবাদ করে কোন সুরাহা মেলেনি। জনসাধারণের চলাচলের জন্য ব্যবহৃত উক্ত রাস্তাটি আনোয়ার হেসেন এর অবৈধ দখলমুক্ত করতে গত ৭ জুন ১শ’ ৩৫জন গ্রামবাসীর স্বাক্ষরিত একটি আবেদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে জমা দেয়া হয়। গ্রামবাসীরা রাস্তার বিষয়ে কোন সুষ্ঠু সমাধান না পেয়ে গত ১১ মার্চ মৌলভীবাজারের জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালত বরাবরে আনোয়ার হোসেনকে বিবাদী করে মোকদ্দমা দায়ের করে। মামলা নং-১৪/২৪ইং(স্বত্ব) যাহা বিচারাধীন রহিয়াছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মো. আনোয়ার হেসেন এর মরহুম পিতা দিলবর মিয়া এক সময়ে অত্র ইউনিয়নের স্বনামধন্য চেয়ারম্যান ছিলেন। পিতার এমন পরিচয় বহন করে মো. আনোয়ার হেসেন এলাকায় বিভিন্ন প্রকারের প্রভাব বিস্তার করে আসছে। আমরা নিরিহ আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাসিন্দা। সবসময় দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আছি, প্রতিপক্ষ আদিবাসী গ্রামবাসীকে অন্যায়ভাবে আইনি জটিলতায় জড়ানোর অসৎ উদ্দেশ্যে মিথ্যা তথ্য উপাত্ত দিয়া সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এসময় আলপনা রঙ্গী, বালক চরি দেববর্মা, মো. খোরশেদ মিয়া, মবিন মিয়া, আমেনা বেগম ও সারভেয়ার মুহিবুর রহমান মোস্তফাসহ গ্রামের মুরুব্বি ও আদিবাসী পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।