Home রাজনীতি হাসপাতাল থেকে বাসায় খালেদা জিয়া

হাসপাতাল থেকে বাসায় খালেদা জিয়া

35

সুব্রত সরকার: করোনা ঝুঁকির কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার চিকিৎসক দল। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মেডিকেল বোর্ডের অন্যতম চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী (এফ এম সিদ্দিকী) এ কথা বলেন।

খালেদা জিয়া কতটা শঙ্কামুক্ত এমন প্রশ্নের জবাবে এফ এম সিদ্দিকী বলেন, দুইবার রক্তক্ষরণ হয়ে উনার জীবন সংকটাপন্ন অবস্থায় চলে গিয়েছিলো। আমার ভ্যাসেলে ব্লাড আপাতত বন্ধ করে দিয়েছি তবে পুনরায় উনার যে আর রক্তক্ষরণ হবে না এমন নিশ্চিয়তা নাই।

তিনি বলেন, উনার যে মূল অসুখ সিরোসিস অব লিভার। এর কোনো সমাধান করতে পারিনি। ভ্যাসেলে গুলো হাই প্রেশারে রক্ত ধারণ করে আছে। এটা আবার রক্ত ধারণ করে ফুলে ফেঁপে উঠতে থাকবে। ২ থেকে তিন মাস পর হয়তো আবার সমস্যা হবে।

এফ এম সিদ্দিকী বলেন, রক্তের প্রেশারটাকে আমার যদি বাইপাস করে অন্য একটা চ্যানেল দিয়ে সে যেখানে যেতে চায় সেখানে যদি রাস্তা করে দেই তাহলে এই প্রেশারটা এখানে থাকে না। যেটাকে বলে টিআইপিস। যে প্রযুক্তি আমাদের দেশে নেই, সেদক্ষ হাতের লোকও নেই।

তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করছি, ওই ধরনের রক্তক্ষরনের সম্ভাবনা আপতত দৃষ্টিতে নাই। তবে স্মল স্ক্যালে রক্তক্ষরণ হতে পারে। যেটা বাসায় রেখে চিকিৎসা করা সম্ভব। হাসপাতালে করোনার ঝুকির চেয়ে বাসায় নিরাপদ।

এফ এম সিদ্দিকী বলেন, আমরা দেখতে পেয়েছি সারাদেশে করোনার ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। শুধুমাত্র এই হাসপাতালের ৩৮০ জনের কর্মকর্তা কর্মচারি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এ অবস্থায় প্রেক্ষিতে উনার স্বাস্থ্যের অবস্থা চিন্তা করে মেডিকেল বোর্ড সিধান্ত নিয়েছি যেহেতু উনার শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্ট্যাবল আছে তাই বাসায় রেখেই আমাদের তথ্যাবদানে উনার চিকিৎসা করা প্রয়োজন। তা না হলে উনার চিকিৎসার ম্যানেজম্যান্ট আরো জটিল হয়ে যাবে।

অক্টোবর মাসে দ্বিতীয় বারের মতো ভর্তি হয়েছিলেন সেময় তার শরীর স্ক্যান করে একটা লাম্প পাওয়া গিয়েছিলো। সে সময় এটি পরীক্ষা জন্য দেশের বাইরে পাঠানে হয়েছিলো। সে রিপোর্ট টিউমার হিসেবে নিশ্চিত হয়েছে। সেটি ২৫ অক্টোবর রিমুভ করা হলেও এর যে চিকিৎসা প্রয়োজন ছিলো সেটা আদো সম্ভব হয়নি। সেটা স্থবির অবস্থায় রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত ১৩ নভেম্বর খালেদা জিয়া হাসাপাতালে ভর্তি হলে, ২৮ নভেম্বর আমি এক সংবাদ সম্মেলনে তার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরেছিলাম। বলেছিলাম যে তার খাদ্য নালীর ওপরের অংশ থেকে গুরুতর রক্তক্ষরণ হয়েছিল। এতে তিনি শকে চলে গিয়েছিলেন।

এরপর ২৩ তারিখে আবারও তার ম্যাসভি ব্লিডিং হয়। আমাদের চিকিৎসকরা সেটা বন্ধ করতে পেরেছিলেন। ক্ষুদ্রান্তে যে ভয়াবহ ব্লিডিংটা হয়েছিল, স্বাভাবিক অ্যান্ডোসকোপ করে সেটা বোঝা যাচ্ছিল না। আমি তখন বলেছিলাম, উনাকে যদি টিপস না করা হয় (একটা বিশেষ প্রক্রিয়া) এবং উচ্চ চাপে এভাবে যদি ভ্যাসেলে ব্লাড আসতে থাকে তাহলে উনার আবার ব্লিডিং হবে এবং যেকোনো ব্লিডিং ভয়াবহ হতে পারে।

তিনি বলেন, ২৪ ডিসেম্বর আমরা তাকে ক্যাপসুল অ্যান্ডোসকোপের মাধ্যমে ক্ষুদ্রান্তে যখন আমরা উৎসটা বের করতে পারলাম তখন আমরা ওষুধ দিয়ে উনার ব্লিডিং বন্ধ রেখে আমরা একটা বিশেষ ধরনের অ্যান্ডোসকোপি করার প্রস্তুতি নিই। যেটা সচরাচর বাংলাদেশে খুব একটা হয় না। সেটা খুব জটিল এবং ঝুঁকিপূর্ণ। ৩ জানুয়ারি আমরা সেই বিশেষ অ্যান্ডোস্কোপিটা করি। ডা. এ কিউ এম মহসীন ও ডা. শামসুল আরেফিনের নেতৃত্বে সেটা করা হয়।