Home জাতীয় স্মার্ট ও টেকসই নগরায়নেরর লক্ষ্যে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী নারী ও শিশুসহ সকলের সুরক্ষা...

স্মার্ট ও টেকসই নগরায়নেরর লক্ষ্যে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী নারী ও শিশুসহ সকলের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে

22

সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা

স্টাফ রিপোটার: স্মার্ট ও টেকসই নগরায়নেরর লক্ষ্যে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী নারী ও শিশুসহ সকলের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, নগরীর কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের ভাল থাকাকে সমান ভাবে প্রভাবিত করে। তাই ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টসমূহ অর্জনে পরিবেশবান্ধব কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সুপারিশমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। সুপারিশসমূহ রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহার ও অঙ্গীকারে অন্তর্ভুক্তি করা অতীব জরুরি।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) তার কনসোর্টিয়াম সদস্য সংস্থা সমূহ (বারসিক, কাপ ও ইনসাইট্স) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন তারা। বস্তিবাসী অধিকার সুরক্ষা কমিটির সভাপতি হোসনে আরা বেগম রাফেজার সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বিশেষজ্ঞ মতামত দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিশিষ্ট গবেষক অধ্যাপক ইজাজ আহমেদ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী, ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো. আব্দুস সোবহান। কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওর (কাপ)-এর নির্বাহী পরিচালক খোন্দকার রেবেকা সান-ইয়াত, বারসিকের প্রজেক্ট ম্যানেজার ফেরদৌস আহমেদ, ডিএসকে কো-অর্ডিনেটর মো. রকিবুল ইসলাম, ইয়্যুথ প্রতিনিধি শাহিনুর আক্তার, বস্তিবাসী নেত্রী ফাতেমা আক্তার, কাপের প্রজেক্ট ম্যানেজার মাহবুল হক, ইনসাইটসের নিগার রহমান প্রমূখ।
সংবাদ সমে¥লনে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, আমাদের রাজনৈতিক দল ও সরকারগুলো সিন্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা খুবই বিবেচনায় নেয়। ঢাকা শহরের দূষণের দিকে থেকে পৃথিবীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ জায়গা দখল করে আছে। আর এর অন্যতম ভুক্তভোগী বস্তিবাসিসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। জনস্বাস্থ্যের দিক থেকে ঢাকা শহরের প্রান্তিক মানুষেরা সবচেয়ে বেশি প্রান্তিক। এটা বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে।
অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, ঢাকা শহরের ৭০ শতাংশ বর্জ্য সংগৃহীত হয়, তাহলে বাকি ৩০ শতাংশ বর্জ্য কোথায় যায়? এই বর্জ্যগুলোকে কাজে লাগাতে পারি। বর্জ্য থেকে জৈব সার উৎপাদন করা যেতে পারে। আমাদের কৃষি জমিতে জৈব উপাদানের পরিমাণ এক শতাংশের নিচে নেমে গিয়েছে, এটি আমাদের জন্য মারাত্মক উদ্বেগের বিষয়। কৃষি জমির উর্বরতা ফিরিয়ে আনার জন্য কৃষি জমিতে জৈব উপাদান ফিরিয়ে দেওয়ার কোন বিকল্প নেই।
প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান বলেন, সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের যেমন দায়িত্ব রয়েছে, একইভাবে দায়িত্ব রয়েছে নাগরিকদেরও। তিনি বলেন, দেশে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ সালে হয়েছে, কিন্তু কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা হলো ২০২১ সালে। দেশের পরিবেশ বিষয়ে সরকারগুলো কতটা আন্তরিক, তা এ থেকেই বুঝা যায়। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সরকার আরো উদ্যোগী হবেন এবং রাজনৈতিকদলগুলো নির্বাচন উত্তর তা বাস্তবায়ন করবেন এটাই প্রত্যাশা।
নগরের দরিদ্র যুবাদের পক্ষ থেকে শাহিনুর আক্তার বলেন, সবচেয়ে প্রান্তিক এ শহরের বস্তিবাসী মানুষ। যারা নিজেদের আত্মপরিচয় থেকেও বঞ্চিত। আমাদের না আছে থাকার জায়গা, না আছে সুস্থ জীবনের আশা। প্রতিবার সরকার আসে আর সরকার যায়, কিন্তু আমাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না। একটি স্মার্ট ও জলবায়ু সহিষ্ণু নগরে একটি টেকসই কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দাবিতে আমরা বছরের পর বছর ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত সুপারিশে বলা হয়, সকল নগরবাসীর (প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী ও লিঙ্গ বৈচিত্র্য গোষ্ঠী) সমান সুযোগ ও অধিকার সমুন্নত রেখে, জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ উন্নয়নে পরিকল্পিত, সমন্বিত ও টেকসই কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি), প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ, বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তরকরণ, চলমান অর্থনীতি (সার্কুলার ইকোনমী) প্রবর্তন এবং টেকসই ও মানসম্পন্ন নগর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কর্মসূচির বাস্তবায়ন করতে হবে। কমিউনিটি নেতৃত্বাধীন টেকসই কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক প্রশাসন, ডিজিটাল মনিটরিং ও তদারকি ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।