Home সাহিত্য ও বিনোদন স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসবের পুরস্কার প্রদান

স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসবের পুরস্কার প্রদান

81

স্টাফ রিপোর্টার: করোনা মহামারি সংকটের মধ্যেও অনলাইনে নিয়মিত উৎসব ও প্রদর্শনী আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। “তৃতীয় বাংলাদেশ স্বল্পদৈর্ঘ ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব ২০২১” এ বছরের আয়োজনগুলোর মধ্যে অন্যতম। দেশীয় চলচ্চিত্রের বিকাশ ও উন্নয়ন এবং সুষ্ঠু ও নির্মল চলচ্চিত্র নির্মান ও প্রদর্শনীর গুরুত্ব অনুধাবন করেই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ৩য় বারেরমতো উৎসবটি আয়োজন করেছে। ১৮-২৫ জুন ২০২১ আট দিনব্যাপী “তৃতীয় বাংলাদেশ স্বল্পদৈর্ঘ ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব ২০২১” অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের উৎসবটি উপমহাদেশের প্রথম চলচ্চিত্রকার ‘হীরালাল সেন’ কে এবারের উৎসবটি উৎসর্গ করা হয়।

স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উভয় ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ১১টি বিভাগে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে । স্বল্পদৈর্ঘ্য কাহিনি চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে: শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হয়েছে সারা বিনতে আফজল নির্মিত আশ্রয়; শব্দের ভেতর ঘর চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা হয়েছেন ফুয়াদুজ্জামান ফুয়াদ; বিশেষ জুরি পুরস্কার পেয়েছে মেহেদী হাসান শামীম নির্মিত দ্যা ক্রিমেশন এবং অপরাজিতা সংগীতা নির্মিত রিভোল্ট (দ্রোহ)
প্রামাণ্য চলচ্চিত্রে ক্ষেত্রে: শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ও শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা এই দুই বিভাগেই পুরস্কৃত হয়েছে মো. রাসেল রানা নির্মিত হাউসের ধুয়া; বিশেষ জুরি পুরস্কার পেয়েছে ফরিদ আহমদ নির্মিত আনতারা। অন্যান্য ক্যাটাগরির ক্ষেত্রে: শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রহণের জন্য পুরস্কৃতি হয়েছে ফুয়াদুজ্জামান ফুয়াদ নির্মিত শব্দের ভেতর ঘর; শ্রেষ্ঠ সম্পাদনা ও শ্রেষ্ঠ শব্দ পরিকল্পনা দুই বিভাগেই মো. রাসেল রানা নির্মিত হাউসের ধুয়া; শ্রেষ্ঠ প্রযোজনা পরিকল্পনা মেহেদী হাসান শামীম নির্মিত দ্যা ক্রিমেশন।
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ১ লাখ ২৫ হাজার, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা ১লাখ এবং বিশেষ জুরি পুরস্কার ৫০ হাজার, শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রহণ ২৫ হাজার, শ্রেষ্ঠ সম্প্রাদনা ২৫ হাজার, শ্রেষ্ঠ শব্দ পরিকল্পনা ২৫ হাজার, শ্রেষ্ঠ প্রযোজনা পরিকল্পনায় ২৫ হাজার টাকা পুরস্কার প্রদান করা হয়।
সারাদেশের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের কাছ থেকে প্রায় ৪০০টি চলচ্চিত্র থেকে উৎসব উপলক্ষে গঠিত পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট বাছাই কমিটি ১১৯টি চলচ্চিত্র (৮১টি কাহিনি চলচ্চিত্র ও ৩৮টি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র) উৎসবে প্রদর্শনীর জন্য বাছাই করেন।
চলচ্চিত্র নির্মাতা সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী-কে চেয়ারম্যান করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি জুরি কমিটি চলচ্চিত্রগুলোর মধ্য থেকে পুরস্কারের জন্য চুড়ান্ত করেছেন। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- চলচ্চিত্র নির্মাতা ও গবেষক ফরিদুর রহমান, বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা জাহিদুর রহমান অঞ্জন, বিশিষ্ট চলচ্চিত্র অমিভাত রেজা চৌধুরী, কমিটির সদস্য সচিব একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক আফসানা করিম।
২৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬.৩০টায় জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে উৎসবের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর, বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী, চলচ্চিত্র নির্মাতা সাজ্জাদ জহির, চলচ্চিত্র নির্মাতা জাহিদুর রহিম অঞ্জন। সভাপতিত্ত্ব করেছেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক নাট্যপ্রাণ লিয়াকত আলী লাকী, স্বাগত্ব বক্তব্য রাখেন একাডেমি নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক আফসানা করিম।
উৎসবের চলচ্চিত্র সিলেকশন কমিটির সদস্যরা হলেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র গবেষক অনুপম হায়াৎ, বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা সাজ্জাদ জহির, বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা ও চিত্রগ্রাহক রাকিবুল হাসান, চলচ্চিত্র সমালোচক ও চিত্রনাট্যকার সাদিয়া খালিদ রীতি এবং শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের সহকারী পরিচালক চাকলাদার মোস্তাফা আল মাস্উদ।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি দীর্ঘদিন ধরে চলচ্চিত্রের উন্নয়নে নানামুখী কাজ করে চলছে। ২০১৫ ও ২০১৭ সালে দু’বার ৬৪টি জেলায় একযোগে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব’ আয়োজন, ২০১৬ ও ২০১৮ সালে ৬৪টি জেলায় ‘বাংলাদেশ স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব’ আয়োজন, ২০১৭ সালে দেশব্যাপী ৬৪ জেলায় ‘বাংলাদেশ শিশু চলচ্চিত্র উৎসব’ আয়োজন করা হয়। এছাড়া ৬৪টি জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ফিল্ম সোসাইটি গঠনের উদ্যোগও নেওয়া হয়।

পুরস্কার বিতরণ শেষে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় নৃত্য পরিচালক জয়দ্বীপ পালিত এর পরিচালনায় ‘বিপুলও তরঙ্গ রে’ এবং নৃত্য পরিচালক ফিফা চাকমার পরিচালনায় ‘আজ কেনো মোর প্রাণ সজনী গো’ গানের সাথে নৃত্য পরিবেশন করে একাডেমির নৃতদল। একাডেমির অ্যাক্রোবেটিক শিল্পীদের পরিবেশনায় অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।