Home সারাদেশ সিসিক নির্বাচন: ৩১ নং ওয়ার্ডে কে করছে বাজিমাৎ?

সিসিক নির্বাচন: ৩১ নং ওয়ার্ডে কে করছে বাজিমাৎ?

428

সৈয়দ রাসেল আহমদ,সিলেট অফিস: আসন্ন ২১ জুন সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আর মাত্র ৩ দিন বাকি সিসিক নির্বাচনের। এর মধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে ভোটারদের মধ্যে চুল-ছেঁড়া বিশ্লেষণ। পাড়া মহল্লায় বিভিন্ন চায়ের হোটেলে চুমুকে চুমুকে চলছে ভোটের হিসেবনিকেশ।

সিসিকের নবগঠিত ৩১ নং ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায় বিরামহীন চলছে প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা। বিভিন্ন জনপ্রিয় গানের কথার সাথে মিল রেখে চলছে সুরেলা প্রচারণা। ৩১ নং ওয়ার্ড থেকে এবার কাউন্সিলর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন ৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ইউনুস আহমদ ঘুড়ি মার্কা,নজমুল হোসেন ঠেলাগাড়ি মার্কা,দেলোয়ার হোসেন টিফিন বক্স মার্কা, ইলিয়াস মিয়া লাটিম মার্কা,আব্দুল আহাদ সুমন ঝুড়ি মার্কা,আব্দুল মুকিত ব্যাডমিন্টন ও রাজিব আহমদ ইকবাল মিষ্টি কুমড়া মার্কা নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন।

প্রত্যেক প্রার্থী নিজ নিজ অবস্থান থেকে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে মরিয়া,তবে স্থানীয় জনগণের মতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে ইউনুস আহমদ (ঘুড়ি মার্কা) ও নজমুল হোসেনের (ঠেলাগাড়ি মার্কার) মধ্যে। কেউ কেউ আবার আব্দুল আহাদ সুমনকেও এগিয়ে রাখছেন প্রতিযোগিতায়।

স্থানীয়দের মতে ইউনুস আহমদ এর আগে ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নিজেকে অনেকটাই পাকাপোক্ত করে নিয়েছেন,ভোটের মাঠে পুরোনো হওয়ায় ইউনুস আহমদের জয়লাভের সম্ভাবনা দেখছেন ভোটারদের বড় একটা অংশ। এর আগে ইউপি নির্বাচনে অল্প কয়েকটি ভোটে হারলেও অতীতের নির্বাচনে ওয়ার্ডজুড়ে পরিচিতি এনে দেয় ইউনুসকে।সেই হিসেবে এবারের নির্বাচনে অন্যান্য প্রার্থীদের মতো নিজেকে মানুষের কাছে পরিচয় করিয়ে দেয়ার মতো চ্যালেঞ্জ নিতে হচ্ছে না।

অন্যান প্রার্থীরা যেখানে ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচারণায় ব্যস্ত,তখন ইউনুস প্রায় একলা চলো নীতিতে এগোচ্ছেন। প্রায় একা একাই মানুষের দোয়ারে দোয়ারে যেতে দেখা গিয়েছে তাকে। তার এই কৌশলকে সাধারণ জনগণ ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন,এই কৌশল অবলম্বন করে ইউনুস খুব সহজেই সাধারণ মানুষের নাগালে যেতে পারছেন। অনেকের মতে বেশি মানুষ নিয়ে জটলা তৈরি করলে সাধারণ মানুষ নিজেদের সুখ-দুঃখের কথা বলার সুযোগ পায় না,তাই ইউনুসের এই একলা চলো নীতি তার এগিয়ে থাকার পেছনে বড় একটা ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সাধারণ জনগণ।

তবে পিছিয়ে নেই নজমুল হোসেনও,নিজে প্রথমবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও তার পিতার পরিচয়ে অনেকটাই এগিয়ে যাওয়ার সম্ভবানা দেখছেন অনেকেই। নজমুল হোসেনের পিতা একই ওয়ার্ডের বেশ কয়েকবারের ইউপি সদস্য ছিলেন, সেই বলয়ে তার এগিয়ে থাকা বড় একটি কারণ দেখছেন অনেকেই। তবে কিছু বিতর্কের কারণে ধরাশায়ী হওয়ার সম্ভবানাও দেখছেন কেউকেউ। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পর থেকেই নজমুল হোসেনের কিছু ব্যক্তিগত ছবি সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে,এতে কিছুটা ইমেজ সংকটে পড়লেও তা সামলে উঠে ভোটের মাঠে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন নজমুল।

প্রচার প্রচারণায় উল্লেখযোগ্য ভুমিকায় দেখা গিয়েছে নজমুলকে। বাবার জনপ্রিয়তাকে পূজি করে শক্ত অবস্থান তৈরি করতেও সক্ষম হয়েছেন তিনি।

আব্দুল আহাদ সুমনকে ঘিরেও চলছে আলোচনা,অল্প দিনেই মাঠে নিজের উপস্থিতি জানান দিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যে তাকে নিয়েও স্বপ্ন বুনতে দেখা গিয়েছে অনেককে।নির্বাচনের আগে তেমন আলোচনায় না থাকলেও সময় গড়ানোর সাথে সাথে ভালো একটি অবস্থান তৈরি করতেও সক্ষম হয়েছেন তিনি। পাশাপাশি আওয়ামীলীগ ঘরনার সুমন উঠতি বয়সী ছেলেদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছেন। বিশেষ করে বেশ সংখ্যক ছাত্রলীগ ঘরনার ছেলেদের সুমনের প্রচারণা চালাতেও দেখা গিয়েছে। ইতিমধ্যে প্রচার প্রচারণায়ও শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন সুমন।

তবে সাবেক ইউপি সদস্য দেলোয়ারকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে ধূম্রজাল, ওয়ার্ডের পিরেরচক,মুরাদপুর, মুক্তিরচকের একাংশ দেলোয়ারের ওপর অনেকটাই নাখোশ। কারণ হিসেবে সেসব এলাকায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড কম হওয়া বড় একটা কারণ হিসেবে দেখছেন স্থানীয় জনগন। তবে কিছু মানুষের মতে ইউনিয়নের একজন ইউপি সদস্য হয়ে বড় একটি ওয়ার্ডের খুব বেশি উন্নয়ন করা সম্ভব নয়,তাদের দাবি কাউন্সিলর নির্বাচিত হলে উন্নয়ন খড়ার অবসান ঘটাতে পারবেন তিনি।

লাটিম মার্কার ইলিয়াস মিয়া, ব্যাডমিন্টন মার্কা আব্দুল মুকিত এবং মিষ্টি কুমড়া মার্কা নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা রাজিব আহমদ ইকবালেরও নিজস্ব কিছু ভোটার বলয় রয়েছে। প্রত্যেকেই তাদের পছন্দের প্রার্থীদের জয় নিয়ে আশাবাদী,সেই লক্ষ্যেই প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের কর্মী সমর্থকেরা।

তবে সব ছাপিয়ে ভোটের মাঠের হিসেবনিকেশে কে হাসছেন শেষ হাসি,কার গলায় উঠছে জয়ের মালা? সেই ফলাফলের জন্য ২১ জুন ভোট গণনা পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে।