Home রাজনীতি সাহস থাকলে প্রধানমন্ত্রীর ভাতিজা কোটা ছাড়া মাঠে নামুন, মেয়র তাপসের উদ্দেশ্যে ইশরাক

সাহস থাকলে প্রধানমন্ত্রীর ভাতিজা কোটা ছাড়া মাঠে নামুন, মেয়র তাপসের উদ্দেশ্যে ইশরাক

40

স্টাফ রিপোটার: বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপসকে উদ্দেশ্য বলেছেন, ভাতিজা কোটায় অবৈধভাবে মেয়র হয়েছেন। বিডিআর হত্যাযজ্ঞসহ অনেক অভিযোগ আপনার বিরুদ্ধে আছে। আপনি নিজেকে গেরিলা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দাবি করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনীর বাইরে আলাদাভাবে গঠন করা হলো মুজিব বাহিনী। এই মুজিব বাহিনী পাশ্ববর্তী রাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধানের নেতৃত্ব হয়েছিলো। উদ্দেশ্য দেশ স্বাধীন হলে মুক্তিযোদ্ধাদের হটিয়ে নিজেদের কৃতিত্ব নেওয়া। আমার বাবা বলেছে এই মুজিব বাহিনীই গাজীপুর ক্যাম্পে তাকে হত্যা করতে চেয়েছিলো।

মেয়র তাপসের কঠোর সমালোচনা করে ইশরাক বলেন, ডেঙ্গুতে শতশত মানুষ মারা যায়, অথচ তিনি পরিবার নিয়ে বিদেশে প্রমোদ ভ্রমণে ব্যস্ত থাকেন। কিছুদিন আগে বললেন, আবার নামতে ইচ্ছে হয়, আপনি নাকি বিচারপতিদের টেনেহিঁচড়ে নামিয়েছেন। সাহস থাকলে প্রধানমন্ত্রীর ভাতিজা কোটা ছাড়া মাঠে নামুন। আমরা দেখিয়ে দিতে চাই আমাদের কি কি করতে মনে চায়। পুলিশ ছাড়া মাঠে নামুন, দেখবো কেমন বেটা আপনি। আসলে এরা (আওয়ামী লীগ) দুর্বৃত্ত, মাফিয়া পরিবার দ্বারা নিয়ন্ত্রণ গোষ্ঠী। এদের কোনো রাজনৈতিক শিষ্টাচার নেই। তারা এখন ব্যস্ত লুন্ঠিত অর্থ নিরাপদ রাখার জন্য।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গোপীবাগে এক প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। যাত্রাবাড়ী ও নয়াবাজারে বিএনপির সমাবেশ সফল করতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ইশরাক বলেন, আমরা কোনো নোংরামি বা রেষারেষিতে যেতে চাই না। আমাদের এই শিক্ষা দেওয়া হয়নি। দেশনেত্রীর রাজনৈতিক শিষ্টাচার আগামীদিনে ইতিহাস হয়ে থাকবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ দেশকে যেদিকে নিয়ে যাচ্ছে আজ ওদের ভাষায় কথা বলা ছাড়া পথ নেই।

তিনি বলেন, ১৫ বছর ধরে মানুষ অন্যায় অবিচার সহ্য করে আসছে। আজ দেশের মানুষ যখন তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঘুরে দাড়াচ্ছে, সফলতার দিকে এগুচ্ছে আন্দোলন। এমন একটি সময়ে আদালতের মাধ্যমে বলা হলো, তার বক্তব্য প্রচার করা হবে না। দেশে কিসের আইন চলছে? যেদিন খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়া হলো সেদিনই কোর্টকে তছনছ করে দেওয়া উচিত ছিলো। যেদিন এক কাপড়ে দেশনেত্রীকে বাড়ী থেকে উচ্ছেদ করা হলো তখন আমরা পরাধীন মেনে নিয়েছি। সেদিন আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছি।

তিনি বলেন, আজকে যে আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে শক্তি দাবি করে অথচ, তারা যুদ্ধের সময় দেশেই ছিলেন না। প্রমোদ ফূর্তিতে ব্যস্ত ছিলো। পরবর্তীতে তারাই কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা করে। আমি রণাঙ্গনের সম্মুখ গেরিলা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসাবে বলতে চাই, আওয়ামী লীগ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি। আর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বিএনপি। শহীদ জিয়ার ঘোষণার মাধ্যমে দেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিলো। সে জিয়াউর রহমানই আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক নিবন্ধন দিয়ে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেছিলেন।

তিনি বলেন, প্রায় ৫০ লক্ষ নেতাকর্মীকে জেলে নিয়েছেন। আজকে আমার এ বক্তব্যের জন্য আমাকেও জেলে যেতে হতে পারে। আর কত জেলে নিবেন। এরপরতো আপনাদের বাসায় রাখতে হবে। খালেদা জিয়া বন্দী, আন্দোলন থেমে নেই। আমি জেল-গুলিকে ভয় পাই না। অনেক ভাই শহিদ হয়েছেন। আমিও দেশনেত্রীর মুক্তি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে শহিদ হতে প্রস্তুত। এখন ক্রান্তিলগ্ন, এ থেকে পিছনে ফেরা যাবে না। আমাদের লাখ লাখ নেতাকর্মী। কতজনকে গুলি করবে। তারেক রহমান দেশ ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে যেভাবে আন্দোলন কর্মসূচি দিচ্ছেন তা সবাই সম্মেলিত বাস্তবায়ন করতে পারলেই মানুষ কষ্টার্জিত স্বাধীনতার সুফল ভোগ করবে, ফিরে পাবে বাকস্বাধীনতা, ফিরে পাবে ভোটাধিকার।

ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মো. মোহনের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম আহবায়ক আব্দুস সাত্তার, মহানগর নেতা সাব্বির আহমেদ আরেফ, মকবুল ইসলাম টিপু, এমএ শাহেদ মন্টু, লিয়াকত আলী, লতিফুল্লাহ জাফরু, তাজউদ্দীন আহমেদ তাইজু, আব্দুল কাদের, মোহাম্মদ আজিজ, কাউন্সিলর মামুন আহমেদ, যুবদলের দক্ষিণের আহবায়ক খন্দকার এনামুল হক এনাম, শ্রমিক দলের আহবায়ক সুমন ভূইয়া, ছাত্রদলের পাভেল সিকদার প্রমুখ।