Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস শিক্ষিকাকে আটকিয়ে চাঁদা আদায়ের ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে প্রক্টরের গড়িমসির অভিযোগ

শিক্ষিকাকে আটকিয়ে চাঁদা আদায়ের ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে প্রক্টরের গড়িমসির অভিযোগ

43

জাবি প্রতনিধি: গত ৪ আগস্ট নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) এক শিক্ষিকাকে আটকে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষিকা মৌখিকভাবে অভিযোগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে। কিন্তু ঘটনার ১৭ দিন হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর কোন ব্যবস্থা নেয় নি।
এর আগে গত ১০ আগস্ট ঘটনা জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান সংবাদ মাধ্যমকে জানায় আগামী এক দুই দিনের মধ্যে অভিযুক্তদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। কিন্তু সেই এক দুই দিন সতেরো দিনে অতিবাহিত হলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি।
সেসময় তিনি সংবাদ মাধ্যমকে আরো জানায় যে, ঘটনাটি জানার পর ওই শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু তিনি লিখিত অভিযোগ করতে চাননি। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় স্বপ্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নেবে। বিষয়টি সম্পর্কে উপাচার্যও অবগত আছেন। তিনি এই ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
স্বপ্রণোদিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর কবে ব্যবস্থা নিবেন সেটাই এখন দেখার বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনেরা এই ঘটনাকে প্রক্টরের ছাত্রলীগ প্রীতি আখ্যা দিয়েছেন । তাঁরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাঁদাবাজির মতো ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে কালক্ষেপণ করছে । যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হবে। অপরাধীরা ভবিষ্যতে অপরাধ করতে আরো সাহস পাবে।
এ বিষয়ে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ,“আমি শৌকোচ অনেক দিন আগেই লিখে রেখেছি। কিন্তু আমাদের হাতে কোনো লিখিত অভিযোগ আসে নি। আমরা পত্রিকা মারফত ও মৌখিত ভাবে জানতে পেরেছি ঘটনা সম্পর্কে। কিন্তু শৌকোচে লিখার ধরন কি হবে তা নির্ভর করছে লিখিত অভিযোগের উপর।”

প্রক্টর অফিসের কর্মকর্তা মো. সোহেল রানা বলেন, “প্রক্টর স্যার ইত্যিমধ্যে শৌকোচে স্বাক্ষর করেছেন, কিন্তু নোবিপ্রবির সেই শিক্ষিকা এখনো লিখিত অভিযোগ না দেয়ার শৌকোচটি লিখা হয় নি। অভিযুক্তরা দাবী করেছে যে তারা টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছে এখন লিখিত অভিযোগ না আসলে শৌকোচে যদি ভিন্ন কথা লিখা হয় তাহলে বিষয়টা সাংঘর্ষিক হয়ে যাবে। তাই শৌকোচের ভাষা কি হবে তা নির্ভর করছে লিখিত অভিযোগের উপর। সেই শিক্ষিকার সাথে প্রক্টর স্যার কথা বলেছেন এবং দ্রুত লিখিত অভিযোগ দেয়ার কথাও হয়েছে।”

এ বিষয়ে ভিসি অধ্যাপক নুরুল আলমকে একাধিক বার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়াম এলাকায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) এক শিক্ষিকাকে আটকে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের জয় পাল এবং বাংলা বিভাগের মারুফুল হাসান মারুফের বিরুদ্ধে। তারা উভয়ই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী। জয় পাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক এবং মারুফ ছাত্রলীগকর্মী হিসেবে পরিচিত। তারা উভয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনী হলের আবাসিক ছাত্র।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত জয়পাল স্বীকারও করেন। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানায়, জোরপূর্বক টাকা আদায়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তারা মিষ্টি খাওয়ার জন্য আমাদের টাকা দিয়েছে। তারপরও আমরা ভুল বুঝতে পেরে বিকাশের মাধ্যমে টাকা ফেরত দিয়েছি এবং বাংলা বিভাগের শিক্ষকের মাধ্যমে ওই শিক্ষিকার কাছে ক্ষমাও চেয়েছি।