Home রাজনীতি লুটেরাদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা করা যাবে না: সিপিবি

লুটেরাদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা করা যাবে না: সিপিবি

35

স্টাফ রিপোটার: বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নেতৃবৃন্দ বলেছেন, মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে, দুঃশাসন কায়েম করে, সাম্প্রদায়িকতাকে প্রশ্রয় দিয়ে, লুটেরাদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করে, সাম্রাজ্যবাদকে তোষণ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা করা যাবে না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র উন্মোচন করে সাম্রাজ্যবাদ এবং লুটেরা পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে দেশ পরিচালনা করলেই কেবল ৭৫’র ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের বদলা নেয়া হবে। কারণ সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যা ছিলো দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। এর মধ্যে দিয়ে প্রতিক্রিয়াশীল ক্যু সংগঠিত করা হয়েছিল।
১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু স্মরণে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্র উন্মোচনে ট্রুথ কমিশন গঠনেরও আহ্বান জানান।
আজ ১৫ আগস্ট ২০২৩ বিকেল ৫টায় রাজধানীর মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম। বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স, সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, প্রেসিডিয়াম সদস্য কমরেড শামসুজ্জামান সেলিম ও সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড মিহির ঘোষ।
কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সূচিত প্রগতিশীল ধারাকে উল্টে দিয়ে দেশকে পাকিস্তানি ধারায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সামরিক শাসনের অধীনে সংবিধানের মূলনীতি পরিবর্তন করে দেশকে পশ্চাৎমুখী করা হয়েছিল। এখন শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষের স্বার্থের বিপরীতে পুঁজিবাদী মুক্তবাজার অর্থনীতির ধারাতেই দেশ পরিচালনা করছে। তাঁরা সমাজতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িকতা বর্জন করে সাম্রাজ্যবাদী ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে তোষণ করে ক্ষমতায় টিকে আছে।
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ’৭৫’র ১৫ আগস্ট স্পষ্টতই একটি দেশ বিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল ক্যু সংঘটিত হয়েছিলো। ১৯৭৫ এর আগে থেকেই আমাদের দেশে পুঁজিবাদী ধারা শুরু হয়েছিল। এই সুযোগে দেশি-বিদেশি প্রতিক্রিয়াশীল চক্র ১৫ আগস্ট তাদের ষড়যন্ত্র কার্যকর করে।
তিনি সংবিধানের অসম্পূর্ণতা দূর করে চার মূলনীতির ভিত্তিতে ’৭২ এর সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। তিনি জনগণের প্রতি চলমান দুঃশাসন বিরোধী ও ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামকে অগ্রসর করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রহীনতা, সাম্প্রদায়িকতা, লুটপাটতন্ত্র ও সাম্রাজ্যবাদ-আধিপত্যবাদী শক্তিকে পরাস্ত করা ছাড়া গণতন্ত্রকে স্থায়ী করা ও মানুষের মুক্তি অর্জন করা যাবে না।
সিপিবির সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, দেশ একটি ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পৌঁছে গেছে। অর্থনীতি চরম বিপর্যয়ের দিকে। এসময় সরকারের উদ্যোগ মানুষের বিপরীতে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি প্রগতিশীল অগ্রগতি। এই অগ্রগতি ধরে রাখা যায়নি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশকে পিছিয়ে নেয়ার চেষ্টা ছিল। এই হত্যাকাণ্ড ছিল রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াশীল ঘটনা।
কমরেড শামসুজ্জামান সেলিম বলেন, ইতিহাসে কারও সত্যিকারের অবস্থান তুলে ধরলে সেটা গ্লোরিফাই করা হয়না কমিউনিস্টরা ইতিহাসে ব্যক্তির ভূমিকাকে মূখ্য করে না দেখলেও রাজনীতিতে ব্যক্তির অবস্থানকে বিবেচনায় রাখে। সে বিবেচনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব।
সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড মিহির ঘোষ বলেন, ‘বর্তমান প্রজন্মের কাছে ইতিহাসকে স্পষ্ট করতে হবে। সাম্রাজ্যবাদী ষড়যন্ত্রের কারণে শেখ মুজিব সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র উন্মোচন করতে পারলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন হবে।