Home রাজনীতি রাজধানীর প্রবেশপথে অবস্থান নিয়েছে আওয়ামী লীগ

রাজধানীর প্রবেশপথে অবস্থান নিয়েছে আওয়ামী লীগ

65

স্টাফ রিপোর্টারঃ ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ‘ঢাকা বিভাগীয়’ মহাসমাবেশকে সামনে রেখে রাজধানীর প্রবেশপথে অবস্থান নিয়েছে আওয়ামী লীগ। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ আটটি পয়েন্টে পাহারা বসিয়ে অবস্থান নিয়েছে আওয়ামী লীগের নগর ও থানা, ওয়ার্ড নেতাকর্মী ও কাউন্সিলরা। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে বিএনপির নৈরাজ্যের প্রতিবাদে মিছিল সমাবেশ করছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগের সঙ্গে মাঠে নেমে অবস্থান নিয়েছে সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও।
আজ শুক্রবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেইটের পরিবর্তে মহানগর নাট্যমঞ্চে সমাবেশের ডাক দিয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। তবে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ৭৫টি ওয়ার্ডে সতর্ক পাহারা বসিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। একইসঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগও বৃহস্পতিবার বিএনপির অগ্নি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। যদিও তারা ভোর থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডে সর্তক অবস্থান নিয়েছে।
নগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দাবি, বিএনপি একটি চিহিৃত সন্ত্রাসী দল। তাই জনসাধারণের জানমাল রক্ষায় ঢাকা মহানগর উত্তরের বিভিন্ন স্থানে সর্তক অবস্থান নিয়েছেন নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে ঢাকার অন্যান্য প্রবেশমুখে সতর্ক পাহারা বসিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তারা জানান, নগরবাসীর জানমাল রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি আটটি এলাকাকে ভাগ করে পাহারা দেবেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পাহারা দেওয়া হবে টিমভিত্তিক। স্থানীয় নেতারা ওই টিমের দায়িত্বে থাকবেন। রাজধানীর আটটি পয়েন্টের মধ্যে রয়েছে-ডেমরা- যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর, উত্তরা-আজমপুর-বিমানবন্দর, সদরঘাট-সোয়ারীঘাট-বাবুপুরা ব্রিজ,গাবতলী-আমিনবাজার, কমলাপুর রেলস্টেশন, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার প্রবেশমুখ, ফার্মগেট, মহাখালী, আশুলিয়া, আবদুল্লাপুর এলাকা ও তুরাগ থানা।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, যেকোনো ষড়যন্ত্র-নৈরাজ্য প্রতিরোধে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সবসময় প্রস্তুত আছে।
জানা গেছে, বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ মোকাবিলায় ১০ ডিসেম্বর ভোর থেকেই রাজধানীর ওই আটটি পয়েন্টে পাহারা দেওয়ার নির্দেশ ছিল। কিন্তু বুধবার বিকেল ৩টার পর নয়াপল্টনে বিএনপির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের জেরে বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই সর্তক অবস্থায় পাহারা দিচ্ছে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ১২৯টি ওয়ার্ড এবং ৫০টি থানা এলাকায় অবস্থান নিচ্ছেন দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। আর মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ৭৫টি ওয়ার্ড ও ২৪টি থানা আর উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ৫৪টি ওয়ার্ড ও ২৬টি থানায় দলের নেতাকর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথে সর্তক অবস্থায় বলে জানিয়েছেন শীর্ষস্থানীয় নেতারা। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের থানাগুলোর সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা এ কর্মসূচি সমন্বয় করবেন। ডেমরার প্রবেশপথ সুলতানা কামাল সেতুর পাশে অবস্থান নিয়েছেন ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজল। এক প্রশ্নের জবাবে সংবাদ প্রকাশকে তিনি বলেন, জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে এবং সড়কে নৈরাজ্য প্রতিরোধে দলের হাইকমান্ডের নির্দেশনা মেনে আমরা ভোর থেকেই ডেমরা চৌরাস্তায় নেতাকর্মীদের নিয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে অবস্থান নিয়েছি। গেন্ডারিয়া থানার ইস্টার্নক্যাব ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শাহ আলম বলেন, আমরা ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নির্দেশ মতো বিএনপি-জামায়াতের অপতৎপরতা রুখতে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে অবস্থান নিয়েছি। এদিন (বৃহস্পতিবার) সকালে পল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নৈরাজ্যের প্রতিবাদে সর্তক অবস্থান নেয় যাত্রাবাড়ি থানার অর্ন্তগত ৪৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ। এতে উপস্থিত ছিলেন বৃহত্তর ডেমরা থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কৌশিক আহমেদ জসিম, ৪৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, ৪৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক শরিফ উদ্দিন, ৬৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা এনামুল ইসলাম এনাম, ৪৯ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু, ঢাকা মহানগর দক্ষিন কৃষক লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হাসান মাহমুদ অপু ও নজরুল ইসলাম নিপু, ৪৮ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক জাহিদুল কবির রাজু, ৪৯ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মো: সজীব হোসেন ও আকলিমা বেগম সহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী বলেন, আপনারা এবং গোটা দেশবাসী দেখেছে, সমাবেশের দুইদিন আগেই বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা কীভাবে সহিংসতা করেছে। এক পথচারীরও মৃত্যু হয়েছে। এখন থেকে আমরা রাজধানীতে বিএনপির কোনো কর্মীকে ঢুকতে দেব না। সেজন্য দলীয় নেতাকর্মীদের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ঢাবিতে ছাত্রলীগের অবস্থান: শনিবার বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে বিএনপি কিংবা ছাত্রদলের প্রবেশ ঠেকাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মোড় ও হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল, মধুর ক্যান্টিন, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি), দোয়েল চত্বর, পলাশী মোড়, শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ এলাকা ও নীলক্ষেত পয়েন্টসহ কয়েকটি স্থানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এ সময় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন স্লোগান দিতেও দেখা গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জহুরুল হক হলের সাবেক ভিপি সাইফুল্লাহ আব্বাছী অন্তত বলেন, আমাদের ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির যেন কোনো ধরণের বিশৃঙ্খলা করতে না পারে, সেজন্য নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আমরা ক্যাম্পাসে সর্তক অবস্থান নিয়েছি।