Home জাতীয় মোংলায় মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বন্ধু রিগনের ৯৮তম জন্ম বার্ষিকী পালন

মোংলায় মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বন্ধু রিগনের ৯৮তম জন্ম বার্ষিকী পালন

48

মোংলা থেকে মো. নূর আলমঃ ইতালি নাগরিক, মুক্তিযুদ্ধের অকিৃত্রিম বন্ধু, কবি-সাহিত্যিক-অনুবাদক ও শিক্ষানুরাগী ফাদার মারিনো রিগনের ৯৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার মোংলায় বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসুচি পালন করা হয়। কর্মসুচির মধ্যে ছিলো মোংলার শেলাবুনিয়ায় তাঁর সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
শনিবার সকাল ৯টায় ফাদার রিগনের সমাধিতে সেন্ট পল্স উচ্চ বিদ্যালয়, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সেন্ট পল্স ধর্মপল্লী, মালগাজী সেবক সংঘসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট মোংলার আহ্বায়ক সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাংবাদিক মো. নূর আলম শেখ, সেন্ট পল্স উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ব্রাদার জয়ন্ত এন্ড্র কস্তা, সেন্ট পল্স ধর্মপল্লীর পালক পুরোহিত দানিয়েল মন্ডল, মালগাজী সেবক সংঘ’র জোসেফ সরকার প্রমূখ। শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পনের আগে ফাদার রিগনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট দাড়িয়ে নিরাবতা পালন করা হয়। উল্ল্যেখ্য ফাদার মারিনো রিগন ১৯৫০ সালে যাজকীয় দায়িত্ব পালনের জন্য বাংলাদেশে আসেন। দেশের বিাভিন্ন অঞ্চল ঘুরে অবশেষে মোংলার শেলাবুনিয়ায় তিনি স্থায়ী নিবাস গড়ে তোলেন। জীবদ্দশায় তিনি মোংলা এলাকায় ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া তিনি রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলিসহ ৪৮টি কাব্যগ্রন্থ, লালনের সাড়ে তিনশো গান, কবি জসিম উদ্দিনের সোজন বাদিয়ার ঘাটসহ বিভিন্ন লেখক ও কবিদের অসংখ্য গান এবং কবিতা ইতালি ভাষায় অনুবাদ করেন। মুক্তিযুদ্ধের অসামন্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ২০১২ সালে মুক্তিযুদ্ধে মৈত্রী সম্মাননা প্রদান করেন এবং ২০০৮ সালে তাঁকে বাংলাদেশ সরকার সম্মানসূচক নাগরিকত্ব প্রদান করেন। ১৯২৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ফাদার রিগন ইতালির ভেনিস নগরের পাশে ভিল্লাভের্লা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৪ সালে বাংলাদেশে অবস্থানকালে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে চিকিৎসার জন্যে ইতালি নিয়ে যাওয়া হয়। ইতালিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফাদার রিগন ২০১৭ সালের ২১ অক্টোবর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর অন্তিম ইচ্ছানুয়ায়ি বাংলাদেশ সরকার মৃত্যুর এক বছর পরে ইতালি থেকে মরদেহ এনে ২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর মোংলার শেলাবুনিয়ায় তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করে।