Home সারাদেশ মোংলার নিখোঁজ মাহে আলম’র ঘটনায় অপহরন মামলা আসামী গ্রেফতার

মোংলার নিখোঁজ মাহে আলম’র ঘটনায় অপহরন মামলা আসামী গ্রেফতার

235

মোংলা থেকে মোঃ নূর আলমঃ গত ১০ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ মোংলার ব্যবসায়ী মাহে আলম’র ঘটনায় মোংলা থানায় অপহরণ মামলা হয়েছে। জেলা বাগেরহাট বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-২ এই মামলা নিতে মোংলা থানাকে আদেশ প্রদান করে। গত ৭ মে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট এই আদেশে স্বাক্ষর করেন। ১১ মে বুধবার সকালে মোংলা থানায় অপহরণ মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়। মামলা রেকর্ডভূক্ত হওয়ার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসামী মোশাররফ হোসেনকে গ্রেফতার করে।
মামলার এজাহার, থানা পুলিশ এবং বাদী ও মাহে আলম’র পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১০ এপ্রিল ব্যবসায়ী মাহে আলম সকাল ৯টায় মোংলা বাজারে যাওয়ার উদ্দ্যেশে বের হয়ে আর ফিরে আসেনা। অনেক খোঁজাখুজি করে না পেয়ে মাহে আলম’র ছোট ছেলে সুমন রানা ১৪ এপ্রিল মোংলা থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন। জিডি নং-৬৬০, তারিখ ১৪-০৪-২০২৩। পরবর্তীতে মামারঘাট এলাকায় মোংলাপোর্ট পৌরসভার সিসিটিভির ক্যামেরায় সংরক্ষিত ১০ এপ্রিলের ফুটেজে সকালে মাহে আলমকে দেখা যায়। তার পরনে নীল সাদা প্রিন্টের হাফহাতা শার্ট এবং হাতে একটি শপিং ব্যাগ দেখা যায়। ফুটেজে আরো দেখা যায় আসামী মোশাররফ হোসেন দূর থেকে দৌড়ে এসে সকাল ১০টার দিকে মাহে আলম’র হাত ধরে বোটে উঠিয়ে অপহরণ করে সুন্দরবনের করমজলে নিয়ে যায়। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য উপাত্ত নিয়ে মোংলা থানায় মামলা করতে চাইলে থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানান। পরবর্তীতে মাহে আলম’র ছোট ছেলে সুমনা রানা গত ২ মে বাগেরহাটের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-২ এ থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণের আরজি জানায়। আদালত মোংলা থানাকে ১৫৪ ধারায় এজাহারভূক্ত নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ডভূক্ত করার জন্য আদেশ দেন। এই আদেশ’র প্রেক্ষিতে ১১ মে বুধবার সকালে মোংলা থানা ব্যবসায়ী মাহে আলম’র অপহরণের মামলা রেকর্ড হয়। মামলা নং- ১৬/১০৫, তারিখ ১১-০৫-২০২৩। ধারা ৩৬৪/১১৪/১০৯/৩৪ পেনাল কোড। ধারা অনুযায়ী হত্যার উদ্দেশ্যে মাহে আলমকে অপহরণ করা হয়। মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শামসুদ্দিন বলেন আদলতের আদেশের নথি পেয়েই ১১ মে বুধবার সকালে মামলা রেকর্ড করি। মামলা রেকর্ডভূক্ত হওয়ার পরেই অভিযান চালিয়ে আসামী মোশাররফ হোসেন (৪৮) কে গ্রেফতার করি। আসামী মোশাররফ হোসেনকে বুধবারই বাগেরহাট আদালতে প্রেরণ করা হয়। আসামী মোশাররফ হোসেন’ মোংলার কেওড়াতলা এলাকার মৃত- মোঃ আব্দুর রাজ্জাক’র ছেলে। অন্যদিকে গত ১৩ এপ্রিল রাতে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে অর্ধগলিত একটি মরদেহ পাওয়া যায়। অর্ধ্বগলিত মৃতদেহটি ১৪ এপ্রিল দাকোপ থানা পুলিশ খুলনা মেডিকেল কলেজে ময়না তদন্ত সম্পন্ন করে। ময়না তদন্ত শেষে পুলিশ লাশ গত ৭ এপ্রিল সুন্দরবনে নিখোঁজ জেলে হিলটন নাথ’র পরিবারের দাবির প্রেক্ষিতে তাদের কাছে হস্তান্তর করে। লাশ খ্রিষ্টিয় ধর্মীয় রীতি অনুযায়ি হিলটনের পরিবার মোংলা উপজেলার পশ্চিম চিলা গ্রামে গত ১৫ এপ্রিল শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন। এঘটনায় দাকোপ থানায় খুন করিয়া লাশ গুম করার অপরাধে অজ্ঞাতনামা আসামি করে হিলটন নাথ’র মা বীথিকা নাথ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে। মামলা নং- ১৬, তারিখ ১৫-০৪-২০২৩। এমতাবস্থায় ১০ এপ্রিল নিখোঁজ মোংলার পৌর এলাকার ব্যবসায়ী মাহে আলম (৬৫) এর পরিবার সুন্দরবনের করমজলে পাওয়া অর্ধ্বগলিত মরদেহ মাহে আলম’র দাবি করে দাকোপ থানায় ডিএনএ টেস্ট’র আবেদন জানায়। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী মাহে আলম’র ছোট ছেলে সুমন রানা দাকোপ থানায় একটি জিডি করেন। জিডি নং- ১০৯৮, তারিখঃ ২৮-০৪-২০২৩। এ ব্যাপারে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ”গ” অঞ্চল খুলনা ডিএনএ টেস্ট’র জন্য আদেশ প্রদান করে। দাকোপ থানার ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) শেখ শাহিনুর বলেন মরদেহ দুই পরিবারের দাবির প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ডিএনএ টেস্ট’র জন্য গত ৯ মে ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি সিআইডি ঢাকায় হিলটন নাথ’র মা বীথিকা নাথ এবং মাহে আলম’র ছোট ছেলে সুমন রানার স্যাম্পল দেয়া হয়েছে। ডিএনএ টেস্ট’র রিপোর্ট পেতে একটু সময় লাগবে।