Home সারাদেশ মোংলায় এক মরদেহ’র দাবিদার দুই পরিবার

মোংলায় এক মরদেহ’র দাবিদার দুই পরিবার

47

আদালত’র ডিএনএ টেস্ট’র আদেশ

মোংলা থেকে মোঃ নূর আলমঃ মোংলায় এক মরদেহ’র দুই পরিবারের দাবির প্রেক্ষিতে আদালত ডিএনএ টেস্ট করার আদেশ দিয়েছেন। গত ১৩ এপ্রিল রাতে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে অর্ধগলিত একটি মরদেহ প্ওায়া যায়। এই মরদেহকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে আবেদন’র প্রেক্ষিতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ”গ” অঞ্চল খুলনা ডিএনএ টেস্ট এবং বাগেরহাট বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-২ মোংলা থানায় নিয়মিত মামলা গ্রহণের আদেশ দিয়েছেন।
মোংলা থানা, দাকোপ থানা, আদালত, সংশ্লিষ্ট পরিবার ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, ১৩ এপ্রিল করমজলে পাওয়া অর্ধ্বগলিত মৃতদেহ ১৪ এপ্রিল দাকোপ থানা পুলিশ ময়না তদন্ত শেষে ৭ এপ্রিল সুন্দরবনে নিখোঁজ জেলে হিলটন নাথ’র পরিবারের দাবির প্রেক্ষিতে লাশ তাদের কাছে হস্তান্তর করে। এঘটনায় দাকোপ থানায় খুন করিয়া লাশ গুম করার অপরাধে অজ্ঞাতনামা আসামি করে হিলটন নাথ’র মা বীথিকা নাথ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে। মামলা নং- ১৬, তারিখ ১৫-০৪-২০২৩। অন্যদিকে ১০ এপ্রিল নিখোঁজ মোংলার পৌর এলাকার ব্যবসায়ী মাহে আলম (৬৫) এর পরিবার সুন্দরবনের করমজলে পাওয়া অর্ধ্বগলিত মরদেহ মাহে আলম’র দাবি করে দাকোপ থানায় ডিএনএ টেস্ট’র আবেদন জানায়। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী মাহে আলম’র ছোট ছেলে সুমন রানা দাকোপ থানায় একটি জিডি করেন। জিডি নং- ১০৯৮, তারিখঃ ২৮-০৪-২০২৩। এ ব্যাপারে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ”গ” অঞ্চল খুলনা ডিএনএ টেস্ট’র জন্য আদেশ প্রদান করে। মোংলার ব্যবসায়ী মাহে আলম ১০ এপ্রিল নিখোঁজ হলে মাহে আলম’র ছোট ছেলে সুমন রানা মোংলা থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন। জিডি নং- ৬৬০, তারিখ ১৪-০৪-২০২৩। পরবর্তীতে মাহে আলম’র পরিবার মোংলার মামারঘাট এবং মোংলা নদী তীরবর্তী অঞ্চলে পৌরসভার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে। সিসিটিভির ফুটেজে মাহে আলমকে অপহরণের দৃশ্য’র প্রমান আছে বলে মাহে আলম’র পরিবার দাবী করেন। এই পরিস্থিতিতে মাহে আলম’র পরিবারের পক্ষ থেকে মোংলা থানায় মামলা করতে গেলে দাকোপ থানায় হিলটন নাথ’র মায়ের দায়ের করা মামলার তথ্য জানিয়ে মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায় মোংলা থানা। অন্যদিকে দাকোপ থানার পক্ষ থেকে বলা হয় মাহে আলম অপহৃত হয়েছে মোংলা থেকে মামলা হলে হবে মোংলা থানায়। এমতাবস্থায় মাহে আলম’র পরিবার আদালতের শরণাপন্ন হন। মাহে আলম’র ছোট ছেলে সুমন রানা গত ২ মে ২০২৩ জেলা বাগেরহাট বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-২ এ মোংলা থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণ করার আরজি জানায়। বিজ্ঞ আদালত মোংলা থানাকে মাহে আলম অপহরণের মামলা এজাহারভূক্ত করার আদেশ দেয়। কিন্তু মামলার বাদী সুমন রানা হতাশা ব্যক্ত করে বলেন গত ৭ মে ২০২৩ মামলার আদেশ’র কপি যার স্মারক নং- ২৬১/২৩, পিটিশন ৩৮২৩ মোংলা থানায় প্রেরণ করা হলেও এখনও থানায় মামলা নথিভূক্ত হয়নি এবং কোন আসামী গ্রেফতার করা হয়নি। এবিষয়ে মোংলা থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শামসুদ্দিন বলেন থানায় এখনও আদেশ’র কপি আসে নাই। আদেশ’র কপি পেলে মামলা নথিভূক্ত হবে। এদিকে এক মরদেহ দুই দাবির প্রেক্ষিতে দাকোপ থানার ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) শেখ শাহিনুর বলেন আদালতের নির্দেশে ডিএনএ টেস্ট’র জন্য গত ৯ মে ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি সিআইডি ঢাকায় বীথিকা নাথ এবং সুমন রানার স্যাম্পল দেয়া হয়েছে। ডিএনএ টেস্ট’র রিপোর্ট পেতে একটু সময় লাগবে। এলাকাবাসী এবং সংশ্লিষ্ট পরিবারের অভিমত অপহৃত মাহে আলম ও নিখোঁজ হিলটন নাথ এবং প্রাপ্ত অর্ধ্বগলিত মৃতদেহের সৃষ্ট রহস্য উন্মোচন হতে পারে পুলিশি তদন্তে। সরেজমিনে ঘুরে জানা যায় মানুষ সেই অপেক্ষায় আছেন।