বিশেষ প্রতিনিধি: যথাযোগ্য মর্যাদায় এবং ভাবগম্ভীর পরিবেশে বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গনে অমর একুশে এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপন করা হয়। বিদসটি উদ্যাপনে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়। দিবসের প্রথমভাগে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করণ, জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ, অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ, বাণীপাঠ, আলোচনাসভা এবং বিশেষ মোনাজাত এবং অনুষ্ঠানের দ্বিতীয়ভাগে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়। এরপর জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন মুম্বাইস্থ বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনের উপ-হাইকমিশনার জনাব চিরঞ্জীব সরকার। ভাষা সংগীত ”আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারী, আমি কি ভুলিতে পারি ?” গানে অস্থায়ী শহীদ মিনারের পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। মুম্বাই-এ নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার জনাব চিরঞ্জীব সরকার আলোচনাসভায় বাংলাদেশের মহান শহীদ দিবসের তাৎপর্য এবং স্বাধীনতা অর্জনে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। মহান ভাষা সংগ্রামে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের অবদানের কথা তিনি গভীর শ্রদ্ধাভরে উল্লেখ করেন। ভাষাশহীদদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিষয়টি তিনি শ্রদ্ধারসাথে স্মরণ করেন। এ সময় তিনি উলেøখ করেন যে, ভাষা আন্দেলনে আমাদের আত্মত্যাগ বিশ্বের ইতিহাসে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে। বাঙ্গালী জাতির রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক স্বকীয়তা সমুন্নত রাখার এর অবদান সুদূর প্রসারী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের ইউনেস্কো কর্তৃক ২১শে ফেব্রুয়ারী কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষনার প্রেক্ষাপটও তিনি তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন। বিশেষ মোনাজাতে মাতৃভাষা সংগ্রামের সকল শহিদসহ জাতির পিতার মহান আত্মার এবং তাঁর পরিবারের শহিদ সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। এ সময় দেশ ও জাতির শান্তি, উন্নতি এবং চলমান বিশ্ব অস্থিতিশীল পরিস্থিতি হতে উত্তরণ কামনা করে দোয়া করা হয়।

দিবসের দ্বিতীয়ভাগে বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গনে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপনের এ আয়োজনে স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠনের অংশগ্রহনে বাংলাসহ মারাঠি, হিন্দি, মারওয়ারী, গুজরাটি ও অসামী ভাষায় দেশাত্মবোধক সংগিত ও নৃত্য পরিবেশন করা হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানে মুম্বাই-এ বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীরা সংগিত ও কবিতা পাঠে অংশ গ্রহন করেন। এ সময় দিবসটির উপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। মুম্বাই-এর ডিপ্লোমেটিক কোরের প্রতিনিধি এবং বিশিষ্ট আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহনকারী ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর (অবসরপ্রাপ্ত) বেশ কয়েকজন সদস্য, স্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, উপ-হাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা/কর্মচারী ও তাঁদের পরিবারবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে আগত অতিথিদের বাঙ্গালি খাবারে আপ্যায়িত করা হয়।