স্টাফ রিপোটার: আজ ১ মে মহান মে দিবস তথা অন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে সকাল ১১টায় মিছিল—সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় ন্যূনতম মোট মজুরি ২০ হাজার টাকা ঘোষণা, ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস, কাজ ও অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিতকরণ, ধর্মঘটের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণকারী বিল প্রত্যাহার, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়ন, শ্রমিক ছাঁটাই—নির্যাতন বন্ধ, সকল শ্রমিকের জন্য রেশনিং—এর ব্যবস্থা ইত্যাদি দাবি সম্বলিত প্লেকার্ড—ফেস্টুনে সুসজ্জিত একটি মিছিল সংগঠনের কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে প্রেসক্লাব—পল্টন হয়ে বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ চত্বরে এসে শেষ হয় এবং সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন ঢাকা মহানগরের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মানস নন্দী, বাসদ (মার্কসবাদী) ঢাকা মহানগরের সমন্বয়ক ডা. জয়দীপ ভট্টাচার্য, দর্জি শ্রমিকনেতা আক্কাস আকন্দ, ভজন বিশ্বাস প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, “১৮৮৬ সালে শ্রমিকের ৮ ঘণ্টা কাজের যে দাবিতে আন্দোলনে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছিল, শ্রমিকশ্রেণির সেই অধিকার আজও বাস্তবায়িত হয়নি। অনেক মানুষের জীবন ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে এই মে দিবস আজ শ্রমিকশ্রেণির শোষণমুক্তির লড়াইকে উজ্জীবিত করার দিনে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এই দিবসের সত্যিকার লড়াইয়ের ইতিহাসকে শাসকশ্রেণি কিছুতেই সামনে আনতে চায় না। মালিকদের স্বার্থে শোষণের চাকাকে সচল রাখতে এই রাষ্ট্র ও সরকার প্রতিনিয়ত শ্রমিকদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে নিত্যনতুন নিপীড়ন।
এদেশে শ্রমিকদের বাঁচার মতো ন্যূনতম মজুরি দেওয়া হয় না, ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার, ছুটি—বোনাস নিশ্চিত করা হয়নি। শ্রমিকদেরকে অতিরিক্ত শ্রম দিতে বাধ্য করা হয়, কিন্তু ওভারটাইমের ন্যায্য পাওনা দেওযা হয় না। নেই প্রতিষ্ঠানের নিরাপদ কর্মপরিবেশ। একের পর এক শ্রম আইনে যতটুকু শ্রমিক অধিকার ছিল, তাও হরণ করা হচ্ছে। অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল পাশের মাধ্যমে ধর্মঘটের মতো গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের অপচেষ্টা চলছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও স্বল্প মজুরির কারণে শ্রমিকদের জীবন আজ দিশেহারা। তাই মে দিবসের চেতনায় মজুরি—দাসত্বের শৃঙ্খল ভাঙনের সাথে সাথে এই শোষণমূলক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে তথা শোষণমুক্তির লড়াইকে বেগবান করার বিকল্প নেই।”