Home জাতীয় ভোমরা স্থল বন্দরে সিঅ্যান্ডএফ কমিটি নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড

ভোমরা স্থল বন্দরে সিঅ্যান্ডএফ কমিটি নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড

44

সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ ভোমরা স্থল বন্দরে সিঅ্যান্ডএফ কমিটি নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ’র আহ্বায়ক কমিটি গঠন নিয়ে চলছে তুলকালাম কাণ্ড। গত আট মাসের ব্যবধানে সিঅ্যান্ডএফ’র আহ্বায়ক কমিটি তিন বার পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রতিবারই কমিটি গঠন নিয়ে লাখ লাখ টাকার গোপন লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সর্বশেষ গত সোমবার শ্রম আদালতের নির্দেশনায় আহ্বায়ক এজাজ আহমেদ স্বপনকে সরিয়ে মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এক্ষেত্রেও গোপনে ২০ লাখ টাকা লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, সিঅ্যান্ডএফ সদস্য এজাজ আহমেদ স্বপনের দায়ের করা হাইকোর্টে একটি রীট পিটিশনের প্রেক্ষিতে শ্রম আদালতের নির্দেশনায় গত ৩০ নভেম্বর ২০২১ তারিখে তাকে (এজাজ আহমেদ স্বপনকে) আহ্বায়ক এবং আশরাফুজ্জান আশু, মিজানুর রহমান, মাকসুদ খান ও রামকৃষ্ণ চক্রবর্তীকে সদস্য করে পাঁচ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচনের নির্দেশ দেওয়া হয়। আর এই কমিটি গঠন করতে ৫ লাখ টাকা অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে।

এরপর, এজাজ আহমেদ স্বপনের সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্স নিয়ে জটিলতা দেখা দিলে শ্রম আদালতের নির্দেশনায় গত ১৪ মার্চ তার পরিবর্তে মাকসুদ খানকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি ঘোষনা করা হয়। এই কমিটি ঘোষনার ৮ দিন পর স্বপন তার লাইসেন্স জটিলতা কাটিয়ে উঠলে হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চের আদেশের প্রেক্ষিতে গত ২২ মার্চ শ্রম আদালত কর্তৃক তাকে আবারও আহ্বায়ক পদে পূর্ণবহাল করা হয়। এক্ষেত্রে সিএন্ডএফ সদস্য রাম কৃষ্ণ চক্রবর্তীর মাধ্যমে দুই দফায় ২ লাখ টাকা লেন দেনের অভিযোগ রয়েছে।
শ্রম আদালত এজাজ আহমেদ স্বপনকে গত ২৩ মার্চ এক চিঠিতে ৬০ দিনের মধ্যে সাধারন নির্বাচনের নির্দেশনা দেয়। তা সত্ত্বেও গত ২৯ মার্চ আহ্বায়ক কমিটির ৪ সদস্য এক বৈঠকে বসে এজাজ আহমেদ স্বপনকে অপসারনসহ তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, ৪৮ লাখ টাকার তহবিল তছরুপ, দূর্নীতি এবং সঠিক ভোটার তালিকা করে যথা সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যর্থতার অভিযোগ আনেন। এরপর শ্রম আদালতের নির্দেশনায় গত ১১ এপ্রিল মিজানুর রহমানকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়। এক্ষেত্রেও গোপনে ২০ লাখ টাকা লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে সাবেক আহ্বায়ক এজাজ আহমেদ স্বপন অভিযোগ করে বলেন, প্রথম দফায় তিনি যখন আহ্বায়ক হন তখন তাকে ৫ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। এরপর তার লাইসেন্স নিয়ে জটিলতা দেখা দিলে তিনি যখন পূনরায় ওই পদে আসেন তখন তাকে সিএন্ডএফ সদস্য রাম কৃষ্ণ চক্রবর্তীর মাধ্যমে দুই দফায় ২ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। আর সর্বশেষ মিজানুর রহমান যে আহ্বায়ক করা হয়েছে এ ক্ষেত্রে ২০ লাখ টাকার গোপন লেনদেনকরা হয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। স্বপন আরো জানান, খুলনা বিভাগীয় শ্রমঅধিদপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এই টাকা বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে গ্রহন করেছেন। এছাড়া প্রতি সপ্তাহে ওই কর্মকর্তাকে ভোমরা সিএন্ডএফ থেকে ১০ হাজার টাকা যাতায়াত খরচ দেয়া হতো।
এদিকে, ভোমরা সিএ্যান্ডএফ এসোসিয়েশনের বারবার কমিটি পরিবর্তন নিয়ে সাধারণ সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা অভিযোগ করে বলছেন, প্রতিবারই এই কমিটি গঠন নিয়ে চলছে টাকার খেলা।

গত ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখ সিঅ্যান্ডএফ সদস্যদের এক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এদিন নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার কথা থাকলেও সাধারণ সদস্যদের মতামতকে পাশ কাটিয়ে একটিমাত্র প্যানেল খাড়া করা হয়। এই সাধারণ সভায় সিএন্ডএফ সদস্য কাজী নওশাদ দিলওয়ার রাজুকে সভাপতি ও মোস্তাফিজুর রহমান নাসিমকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে কমিটি গঠন করা হয়। পরে সিঅ্যান্ডএফ সদস্য এজাজ আহমেদ স্বপনের দায়ের করা হাইকোর্টে একটি রীট পিটিশনের প্রেক্ষিতে শ্রম আদালত কর্তৃক ওই কমিটি ১৪ সেপ্টেম্বর বাতিল ঘোষণা করা হয়। এরপর ৩০ নভেম্বর এজাজ আহমেদ স্বপনকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়।