Home ধর্ম ভরা পূর্নিমা তিথিতে কুয়াকাটায় পূন্যস্নান।। দর্শনার্থী ও ভক্তবৃন্দের পদচারনায় মুখরিত পুরো সৈকত

ভরা পূর্নিমা তিথিতে কুয়াকাটায় পূন্যস্নান।। দর্শনার্থী ও ভক্তবৃন্দের পদচারনায় মুখরিত পুরো সৈকত

35

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি: ভরা পূর্নিমা তিথিতে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পূন্যস্নান করবেন। পূন্যের আশায় সোমবার কাক ডাকা সকালে একযোগে সমুদ্রের নীল জলে স্নান সম্পন্ন করবে হাজারো নারী-পুরুষসহ পূন্যার্থীরা। এ উপলক্ষে দর্শনার্থী, সাধু, সন্যাসী ও ভক্তবৃন্দের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠছে পুরো সৈকত। সর্বত্র বইছে উৎসবের আমেজ। অধিকাংশ হোটেল মোটেলের কক্ষ আগেভাগেই বুকিং হয়ে গেছে। তাই অনেকেই র্নিঘুম রাত কাটিয়ে পূন্যস্নান সম্পন্ন করবেন। পদ্মা সেতু ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে এ বছর ব্যাপক লোক সমাগমের আশা করছেন উদযাপন কমিটি।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আগতদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের তরফ থেকে কয়েক স্তরের বেষ্টনী তৈরী করা হয়েছে। রয়েছে একটি মেডিকেল টিম, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, আগত দর্শনার্থীদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা। এছাড়া কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো হয়েছে চেক পোষ্ট। যত্রতত্র গাড়ী পার্কিংয়ে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। এদিকে সোমবার রাতে পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহরে শুরু হয়েছে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী শ্রী কৃষ্ণের পাঁচ দিন ব্যাপী রাস উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা এমটাই জানিয়েছেন শ্রী শ্রী মদন মোহন সেবা আশ্রমের সাধারন সম্পাদক এ্যাড.নাথুরাম ভৌমিক।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে, কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথির এই লগ্নে রাস পূর্ণিমা উৎসব ও গঙ্গাস্নান অনুষ্ঠিত হয়। জাগতিক পাপ ধুয়ে মুছে যাবে এমন এ বিশ্বাস নিয়ে পূর্ব দিগন্তে সূর্যো উঠার সঙ্গে সঙ্গে পূণ্যস্নান সম্পন্ন করবে পূণ্যার্থীরা। এর পর কলাপাড়া পৌর শহরের আন্ধারমানিক নদীর তীরে অবস্থিত শ্রী শ্রী মদন মোহন সেবাশ্রম আঙ্গিণায় ১৭ জোড়া রাধা কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন। একই সাথে পাঁচ দিন ব্যাপী মেলায় মিলিত হবেন এসব পূন্যার্থী।
পঞ্জিকা মতে, রবিবার বিকাল ৩ টা ৪৫ মিনিটে শুরু হবে পূর্নিমা। আর থাকবে পরদিন সোমবার দুপুর ২ টা ৪৬ মিনিট পর্যন্ত। তাই প্রতিবছরের ন্যায় এবারও রাতভর পূজার্চনা শেষে সোমবার ভোরে সৈকতে গঙ্গা¯œান করবে সনাতনীরা।
কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কুটুম’র সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির বলেন, প্রতি বছরই এ উৎসবকে ঘিরে কুয়াকাটায় হাজার হাজার লোকজনের সমাগম ঘটে। এবছর এর ব্যতিক্রম নয়। ইতেমধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থী ও পূন্যার্থী সৈকতে এসে জরো হয়েছে। এছাড়া রাস মেলা ও পূন্য¯œান উপলক্ষে কুয়াকাটায় এখন উৎসবমুখর বিরাজ করছে।
কুয়াকাটা আবাসিক হোটেল ফ্রেন্ডস পার্ক’র ব্যবস্থাপক মো.জাহিদ রিপন বলেন, রাস উৎসব ও গঙ্গা ¯œান উপলক্ষে তার হোটেলের সবটি কক্ষই বুকিং হয়েছে গেছে। এ অবস্থা আরও দুই একদিন থাকবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, রাস উৎসব ও গঙ্গা ¯œান একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব। এটি এখন সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের তরফ থেকে কয়েক দফা মিটিং করা হয়েছে। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর উৎসবকে নিরাপদ ও বিড়ম্বনা মুক্ত রাখতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
মহিপুর থানার ওসি মো.ফেরদৌস জানান, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহলের পাশাপাশি পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.জাহাঙ্গীর হোসেন জানান,গঙ্গাস্নান ও মেলায় আগত পূণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের সমন্বয় একটি নিরাপত্তা বেষ্ঠনী তৈরী করা হয়েছে। আশা করি কোন ধরনের সমস্যা হবে না বলে তিনি জানিয়েছেন।