Home জাতীয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপি-ছাত্রলীগের সমাবেশ, ১৪৪ ধারা জারি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপি-ছাত্রলীগের সমাবেশ, ১৪৪ ধারা জারি

30

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একই স্থানে ও একই সময়ে জেলা বিএনপি ও জেলা ছাত্রলীগ পাল্টা-পাল্টি সমাবেশ আহ্বান করায় সমস্ত পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। শনিবার ভোর ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। শনিবার দুপুরে পৌর এলাকার ফুলবাড়িয়া কনভেনশন সেন্টার প্রাঙ্গনে পাল্টা-পাল্টি সমাবেশ আহ্বান করা হয়েছিল। এর মধ্যে সমাবেশের আগের দিন শুক্রবার দুপুরে (০৭ জানুয়ারি) জেলার শীর্ষ ৩ নেতাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) এর সত্যতা স্বীকার করেছেন। গত সপ্তাহে ডাকা জেলা বিএনপি এই সমাবেশে কেন্দ্রীয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুইয়া, উকিল আব্দুস সাত্তার ভূইয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামলসহ কেন্দ্রীয় বিএনপির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থাকার কথা। এদিকে একইস্থানে একই সময়ে ছাত্র সমাবেশ আহবান করে জেলা ছাত্রলীগ। এমন পরিস্থিতিতে শহরবাসীর মধ্যে উদ্বেগ-উৎকন্ঠার সৃষ্টি হয়। সমাবেশস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপি সমাবেশের জন্য শহরের ৩টি জায়গা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে শহরের পৌর মুক্ত মঞ্চ, টেংকের পাড় (লোকনাথ দিঘীর) ও ফুলবাড়িয়া কনভেনশন সেন্টার এলাকাকে নির্ধারণ করা হয়। বিএনপির পক্ষ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসককের নিকট অনুমতি চেয়ে চিঠি দেয়া হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে ফুলবাড়িয়া কনভেনশন সেন্টার এলাকায় সমাবেশ করার মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়। এর পরপরই তারা প্রচার-প্রচারণা চালায়। জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে একই স্থানে গণতন্ত্র রক্ষা দিবস উপলক্ষে ছাত্র জমায়েতের আয়োজন করে। এ নিয়ে শহরে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা দেখা দেয়। জেলা বিএনপি তাদের সমাবেশ সফল করতে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছে। ছাত্রলীগও সভা করতে মরিয়া। শুক্রবার শহরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের তৎপরতা জোরদার করা হয়। অন্যদিকে জেলা বিএনপির শীর্ষ তিন নেতা জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকন, আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান আহবায়ক কমিটির সদস্য মোঃ হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি বলেন, আমরা প্রশাসনের সাথে কথা বলেই সমাবেশ আহবান করেছি। আমাদের কর্মসূচী বানচাল করতেই ছাত্রলীগ সেখানে তাদের সমাবেশ আহবান করে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার দুপুরে পুলিশ জেলা বিএনপির আহবায়কসহ তাদের শীর্ষ চার নেতাকে ধরে নিয়ে গেছে। তবে তাদেরকে কোথায় নিয়ে রাখা হয়েছে সেটা আমরা জানতে পারিনি।
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল বলেন, আমরা প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সমাবেশ করার জন্য বিএনপির আগেই প্রশাসনের অনুমতি নিয়েছি। আমাদের সমাবেশ বানচাল করার জন্য বিএনপি তাদের সমাবেশস্থলে পাল্টা সমাবেশ আহবান করেছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ এমরানুল ইসলাম জানান, বিএনপি ও ছাত্রলীগ কেউই সমাবেশের জন্য প্রশাসনের কোন অনুমতি নেয়নি। তাই জনগনের জানমালের নিরাপত্তা ও আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় শুক্রবার সন্ধ্যায় পুরো পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছেন জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট। ভোর ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ফুলবাড়িয়া কনভেনশন সেন্টার, সেন্টার সংলগ্ন খালি জায়গাসহ সমগ্র পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। তিনি বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে শহরের ১৪৪ ধারার বিষয়ে মাইকিং করা হচ্ছে। নেতাকর্মীদের আটক ও গ্রেফতার বিষয়ে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমরা জানাচ্ছি। শহরে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপরাধ ও প্রশাসন মোল্লা মোহাম্মদ শাহিন জানান, ৩ নেতাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগেও জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সমাবেশ আহ্বান করা হয়। তবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের কারণে সে সময় সমাবেশ করতে পারেনি। (৫ জানুয়ারী) পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর এই স্থানে সমাবেশ আহ্বান করে।