Home সারাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডিবি পুলিশের পরিচয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থককে নির্যাতনের অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডিবি পুলিশের পরিচয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থককে নির্যাতনের অভিযোগ

20

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমান ওলিও’র এক সমর্থককে তুলে নিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার দিবাগত রাতে তাঁকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ফিরোজুর রহমানের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট শেখ ওমর ফারুক একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী আবু মুসা আনসারীর নির্দেশে ওই সমর্থককে নির্যাতন করা হয় বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমানের ওই সমর্থকের নাম মো. ইকবাল হোসেন (৩২)। তিনি সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। ফিরোজুর রহমান সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কাঁচি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তফসিল ঘোষণার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজপুর রহমানের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারসহ নানা কাজ করছিলেন ইকবাল হোসেন। গত বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে সুলতানপুর ইউনিয়নের শীলবাড়ির মোড়ের গলির রাস্তায় অজ্ঞাতনামা সাত-আটজন ব্যক্তি ইকবালের পথরোধ করেন। তাঁরা নিজেদের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয় দিয়ে পিস্তল বের করে হাতকড়া পরিয়ে তাঁকে স্থানীয় একটি ছাত্রাবাসে নিয়ে যান। কোনো শব্দ করলে গুলি করার হুমকি দেন। ইকবালের সঙ্গে হৃদয় মিয়া নামের এক যুবককেও ভয় দেখানো হয়। কিছুক্ষণ পর ছাত্রাবাসের কাছে থাকা কালো রঙের একটি গাড়িতে ইকবালকে তুলে নেন। অভিযোগে আরও বলা হয়, গাড়িতে তুলে ইকবালের চোখ বেঁধে সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী আবু মুসা আনসারীর বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখানে একটি কক্ষে আটকে রেখে মুসা আনসারীর নির্দেশে তাঁকে চড় থাপ্পড় মারা হয়। পিস্তল রেখে ভিডিও ধারণ করে কাঁচি প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনী কাজ করলে পিস্তলসহ তাঁকে র‌্যাবের কাছে সোপর্দ করার ভয় দেখানো হয়। একপর্যায়ে ডান হাতে একটি ইনজেকশন দিলে ইকবাল অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তখন হাত বেঁধে ও মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে তাঁকে ফেলে রাখা হয়। স্বজনেরা ইকবালের খোঁজ না পেয়ে শেখ ওমর ফারুককে জানান। বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সুলতানপুর গ্রামের ছাত্রাবাসের বাঁশঝাড়ের কাছে অচেতন অবস্থায় ইকবালকে পাওয়া যায়। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে থাকতে মুসা আনসারীর লোকজন ভয় ভীতি দেখালে ইকবাল তাঁর খালার বাসায় চলে যান।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট শেখ ওমর ফারুক বলেন, নির্বাচনের শুরু থেকেই আমাদের নানাভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে। কর্মীদের নির্যাতন করছে, ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে আবু মুসা আনসারী বলেন, এসব বিষয় বানানো। মিথ্যা অভিযোগে আনা হয়েছে। আমি কেন কাউকে তুলে আমার বাসায় নিয়ে যাবো। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান জানান, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ তদন্তের জন্য পুলিশ সুপারকে বলেছি।