Home সারাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জিমে গোপন ভিডিও ধারনের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জিমে গোপন ভিডিও ধারনের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৩

36

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের একটি ব্যায়ামাগারে (জিম) গোপনে আপত্তিকর ভিডিও ধারণের প্রতিবাদ করায় এক গৃহবধূসহ তিনজনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার সন্ধ্যায় শহরের মৌলভীপাড়ায় বিএস ফিটনেস ক্লাব নামক একটি জিমে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ৯৯৯’এ কল করলে তাদেরকে উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে জিমের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূইয়া বিপ্লব, জিমের ফিটনেস ট্রেইনার মিতু আক্তার ও সাইমকে গ্রেপ্তার করেছে সদর মডেল থানা পুলিশ।
এই ঘটনায় রাতেই ওই গৃহবধূর ভাসুর ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের এপিপি মাসুদুর রহমান সোহাগ গ্রেপ্তারকৃত তিনজন সহ ৪জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৮/৯জনকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তবে অভিযুক্তদের দাবী, ওই নারীর পক্ষ নিয়ে তার লোকজন জিমে হামলা করেছে।
লিখিত অভিযোগ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ওই গৃহবধূ ও তার বোন শহরের মৌলভীপাড়ায় বিএস ফিটনেস সেন্টারে নিয়মিত ব্যায়াম করেন। সেখানে মেয়েদের ব্যায়াম করার আলাদা ব্যবস্থা থাকায় দুই বোন সেখানে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে জিমের ট্রেইনার মিতু আক্তার গোপনে ভিডিও ধারণ করেন বলে তাদের সন্দেহ হয়। পরে তারা নিশ্চিত হন ট্রেইনার মিতু গোপনে তাদের ভিডিও ধারণ করেছে। বুধবার বিকেলে তারা দুই বোন ট্রেইনার মিতুকে ভিডিও করার কথা জিজ্ঞেস করলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। পরে ট্রেইনার মিতু জিমের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূইয়া বিপ্লবকে জানায়। এই খবর পেয়ে বিপ্লব তাদের দুই বোনের কাছে যান মিতুকে নিয়ে। সেখানে মিতু ওই গৃহবধূর চুলের মুঠি ধরে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে জিমে থাকায় শহরের উত্তর পৈরতলার সোহেল মিয়া নামের এক যুবক তাদেরকে বাঁচাতে আসলে বিপ্লবসহ তার সহযোগীরা তাদের সবাইকে লোহার রড দিয়ে বেধরক মারধর করে আটকে রাখে। আশপাশের সড়কে উৎসুক মানুষ জমায়েত হয়ে ভিডিও করে ঘটনাটি ফেসবুকে দেয়।
শেষে ৯৯৯’ এ কল পেয়ে পুলিশ আহতবস্থায় দুই বোন ও সোহেলকে উদ্ধার করে। গণরোষানল থেকে বাঁচাতে জিমের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূইয়া বিপ্লব, ট্রেইনার মিতু আক্তার ও সাইমকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। গুরুতর আহত হওয়ায় ওই গৃহবধূ ও সহায়তা করতে আসা সোহেলকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূইয়া বিপ্লব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ভিডিও ধারনের বিষয়ে একজন নারীর ফোন পেয়ে ব্যায়ামাগারে যাবার সময় সোহেল নামে একজন ফোন করে গালিগালাজ করে। কয়েকজন লোকজন নিয়ে ব্যায়ামাগারে পৌঁছেন। ব্যায়ামাগারে ভাঙচুর দেখে সোহেলকে আটক করা হয়। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে নেওয়ার সময় পেছন থেকে আমাকে ছুরিকাঘাত করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসাইন জানান, জিমে দুই বোনের ছবি উঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় ওই জিমের মালিক ও ট্রেইনার পক্ষের লোকজনদের সাথে ওই দুই নারীর পরিবারের লোকজনদের ঝগড়া হয়। এসময় বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনায় জিমের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূইয়া বিপ্লবসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।