Home সারাদেশ ব্যবসায়ীকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি

ব্যবসায়ীকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি

33

সিদ্ধিরগঞ্জ সংবাদদাতা: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের বটতলা এলাকার এক ডেভেলপার ব্যবসায়ীকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে ওই এলাকার চিহিৃত ও চাঁদাবাজরা। রবিবার রাতে নয়টায় ওই ব্যবসায়ীর মোবাইল ফোনে তাকে হত্যার হুমকি প্রদান করেন। এতে ওই ব্যবসায়ী ও তার পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতা ও আতংকে দিন কাটাচ্ছে।

এলাকাবাসী ও স্থানীয়রা জানান, সাত খুন হত্যা মামলার ফাঁসির দ্বন্ডপ্রাপ্ত আসামী নূর হোসেনের বড়ভাই নূরু মিয়ার ছেলে তেলচোর পলাশ মিয়া সাজু ডেভেলপার লিমিটেড এর মালিক শাহজাহান সাজুর কাছে একলাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে তেলচোর পলাম মিয়া মোবাইল ফোনে ব্যবসায়ী শাহজাহান সাজুকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এসময় পলাশের নেতৃত্বে তার ছোট ভাই জনি মিয়া,মাটিচোর আলামিন মিয়াসহ ৫০/৬০ জনের একদল সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্রেসজ্জিত হয়ে শিমড়াইল ও বটতলা এলাকায় অস্ত্রের মহড়া দেয়। পরে স্থানীয় কাউন্সিলরসহ এলাকাবাসীল তোপের মুখে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বটতলা এলাকার বাসিন্দা জানান, নূর হোসেনের বড়ভাই নূরু মিয়ার ছেলে তেলচোর পলাশ মিয়া মুন্সিগঞ্জ জেলার বালুয়াকান্দি এলাকার মা ফিলিং স্টেশন নামে একটি তেলের পাম্প চালু করে। এ ফিলিং স্টেশনে চোরাইতেলের রমরমা ব্যবসা করে অল্প সময়ে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা মালিক বনে গেছেন পলাশ মিয়া। পলাশের নেতৃত্বে তার ছোট ভাই জনি মিয়া ও মাটি চোর আলামিনের নেতৃত্বে শিমড়াইল ও বটতলা এলাকায় প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বেশ কিছুদিন যাবৎ।

এ বাহিনীর সদস্যরা দেশীয় অস্ত্রেসজ্জিত হয়ে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে থাকেন প্রকাশ্যে। সম্প্রতি সিদ্ধিরগঞ্জের আলোচিত সজু বাহিনীর প্রধান সজু মিয়া গ্রুপের সদস্যরাও সন্ত্রাসী পলাশ মিয়ার গ্রুপের সাথে একাত্বতা ঘোষনা করেছেন। এতে ওই এলাকার সাধারণ মানুষ আতংকে ও নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে।
রসূলবাগ এলাকার বাসিন্দা সোহান মিয়া জানান, সন্ত্রাসী পলাশ মিয়া, জনি মিয়া ও সজু মিয়াকে গ্রেফতার করলেই তাদের কাছ থেকে অবৈধ অনেক অস্ত্রের সন্ধান মিলবে। তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

বটতলা এলাকার এক মুদি দোকানদার জানান, নূর হোসেন জেলে যাওয়ার পর ব্যবসা বাণিজ্য করে ভালোই দিন কাটাচ্ছিলাম আমরা। সম্প্রতি পলাশ মিয়া ও তার ভাই জনি মিয়ার অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতারের জন্য র‌্যাব ও পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাজু ডেভেলপারের মালিক শাহজাহান সাজু এই প্রতিবেদককে জানান, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ এই এলাকায় সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। আজ রাত নয়টায় পলাশ মিয়া আমার কাছ থেকে একলাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমি বলি কেন চাঁদা দিবো। এ কথা বলার পরপরই সে আমাকে মোবাইল ফোনে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এতে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতা ও আতংকে দিন কাটাচ্ছি। আমি জীবনের নিরাপত্তার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্টমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

ব্যবসায়ীকে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি গোলাম মোস্তফা জানান, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। তবে তিনি কঠোর ভাবে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজদের মোকাবেলা করার হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন কোন অবস্থাতেই সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজদের ছাড় দেওয়া হবে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ান র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে:কর্ণেল তানভীর মাহমুদ পাশা জানান, ব্যবসায়ীকে হুমকির বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। ওই সকল সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের চিহিৃত করে তাদের বিরুদ্ধে খুব শিগ্রই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।