ডেস্ক রিপোট: পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে অনলাইনে প্রকাশ হওয়া যে কোনো তথ্য নিমেষেই হাজির করে দেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন নয়া প্রযুক্তি চ্যাটবট। প্রশ্ন বা চাহিদার কথা জানাতেই যা দেরি, তা বের করে দেয় কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে। এটি অবশ্য আহামরি কিছু নয়, কারণ গুগলও সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে অনেক স্মার্ট। চ্যাটবটের বিশেষত্ব অন্যখানে। যে কোনো বিষয়ে একটা প্রবন্ধ লিখে দিতে বললে, সে রেডি করে দেবে। কবিতা চাইলে কবিতা লিখে দেবে। বিশ্বের যে কোনো এলাকার একটি ছবি চাইলে তাও দেখাবে। চ্যাটবটের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এতোটাই বেশি, প্রকাশিত তথ্য খুঁজে আনার পাশাপাশি নিজেরই লিখার ও আঁকার ক্ষমতা রয়েছে, যা অন্য কোনো অনলাইন প্রযুক্তিতে এখনো সম্ভব নয়।

রোববার দিবাগত রাতে চ্যাটবটকে বলা হলো, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা সম্পর্কে একটি আর্টিকেল লিখো। ১০ সেকেন্ডের মধ্যে চ্যাটবট ৪৫৫ শব্দের একটি আর্টিকেল লিখে দিলো। পাঠকদের জন্যে সেটির অনুবাদ তুলে ধরা হচ্ছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় অবস্থিত দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিগুলোর একটি। বিশ^ অর্থনীতিতে বড় নিয়ন্ত্রক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দেশটির। দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি এবং দ্রুত বাড়তে থাকা একটি মধ্যবিত্ত শ্রেণী রয়েছে। ফলে বাংলাদেশে একটা সম্ভাবনাময় বাজার সৃষ্টি হয়েছে।

গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। দেশটি দারিদ্র বিমোচনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবাসহ জরুরি সব ক্ষেত্রে উন্নতি করেছে। বাংলাদেশের উন্নয়নের পেছনে বেশ কয়েকটি বিষয় কাজ করে। বিশাল শ্রম শক্তি, বর্ধনশীল ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টর এবং সর্বোপরি ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগ।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান চালিকাশক্তির একটি হচ্ছে ক্রমেই বাড়তে থাকা ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টর, বিশেষ করে গার্মেন্টস শিল্প। চীনের পর বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক। এই সেক্টরে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। বিজিএমইএ এই সেক্টরের উন্নয়ন এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করায় ভূমিকা রাখছে।

বাংলাদেশে খুব দ্রুত বিকশিত হতে থাকা আরেকটি খাত হলো সার্ভিস সেক্টর। দেশটিতে উচ্চশিক্ষিত এবং দক্ষ জনশক্তি রয়েছে। এই সুবিধা কাজে লাগাতে বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে এসেছে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো। বিশেষ করে আইটি ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট শিল্প দ্রুত বড় হয়ে উঠছে। সরকার এই খাতে বিনিয়োগের জন্য করছাড় এবং অন্যান্য সুবিধা দিচ্ছে।

গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ আনতে সক্ষম হয়েছে, বিশেষ করে চীন ও ভারত থেকে। দেশটিতে বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালা রয়েছে। মূলধনী যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা আছে। সেই সঙ্গে আরো কিছু প্রণোদনা ও সুবিধা থাকায় দেশি-বিদেশি

বিনিয়োগকারিরা আকৃষ্ট হচ্ছে। বিনিয়োগ বাড়াতে সরকার দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেেছ। নতুন বিমানবন্দর, বন্দর এবং হাইওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে সরকার সেই ব্যবস্থাই করছে, যাতে এদেশে ব্যবসাবাণিজ্য করা সহজ হয়।

তবে অর্থনীতির এ উজ্জ্বল চিত্রের পাশাপাশি এখনো বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে বাংলাদেশের সামনে। সীমাহীন দুর্নীতি বড়ো সমস্যা। দুর্নীতির কারণে বিদেশিরা বিনিয়োগে উৎসাহ পায় না। দেশিয় ব্যবসাবাণিজ্যও আশানুরূপ গতি পায় না। আইনি দুর্বলতাও রয়েছে, যে কারণে ব্যবসায়ীরা তাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হয়। এসব অসুবিধার কথা সরকারও জানে, প্রতিকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে ব্যবসার পরিবেশ উন্নত করার চেষ্টা চলছে।

চ্যাটবটের লিখাটি শেষ হয়েছে এভাবে, সর্বোপরি; বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় খেলোয়াড় হওয়ার সম্ভাবনা বাংলাদেশের রয়েছে। বিকাশমান ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টর এবং আকর্ষণীয় বিনিয়োগ নীতিমালার কারণে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগের আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠছে সারাবিশ্বে। সরকার যে সব পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেগুলো অব্যাহত থাকলে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বেড়ে ওঠা অর্থনীতির তালিকায় আরো এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

এখানে একটি বিষয় শুধু লক্ষণীয়, বাংলাদেশ যে এলডিসি থেকে উত্তরণের সনদ পেয়ে গেছে, এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি চ্যাটবট তার লেখা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেনি।
আমাদের সময়.কম