Home সারাদেশ বিজয়ের মাসে বিজয়ের বেশে জামালপুরে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন

বিজয়ের মাসে বিজয়ের বেশে জামালপুরে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন

35

সুমন আদিত্য,জামালপুর প্রতিনিধিঃ অবশেষে ১ ডিসেম্বর ২০২৩ শুক্রবার রাত ৮টায় জামালপুর রেলওয়ে স্টেশনে এসে পৌছায় চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ গামী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন।

হাজার হাজার মানুষ জামালপুর স্টেশনে বিজয় দেখতে এবং বিজয় ট্রেনকে অভিনন্দন জানাতে সন্ধ্যার পর থেকে স্টেশনে আসতে শুরু করে। বিজয় স্টেশনে যখন প্রবেশ করে তখন পুরো স্টেশনে জনস্রোত ছিল এবং সবাই আনন্দ উল্লাস করছিল। অনেক শিশু,নারী,পুরুষ বিভিন্ন উপজেলা থেকে এসেছিল বিজয় ট্রেন দেখার জন্য।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্টেশনে জনস্রোত। সবাই ট্রেনটি ছুয়ে দেখছে,ট্রেনের বগিতে উঠছেন। স্টেশনের পূর্বদিকে মঞ্চ করা হয়েছে। বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বক্তব্য রাখছেন,শ্লোগান দিচ্ছেন জনসাধারন,কেউ কেউ দলবেঁধে নৃত্য করছে। স্টেশন এবং ট্রেনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ফুল দিয়ে মিষ্টিমুখ করিয়ে বরণ করে নেয়া হচ্ছে এরকম নানা আনন্দ উল্লাসের মধ্যদিয়ে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে জামালপুর স্টেশনে জামালপুরবাসী বরণ করে নিচ্ছে।

স্থানীয়ভাবে জানা যায়,জামালপুরবাসী গত একযুগ ধরে আন্দোলন করছে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি যেন জামালপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। এই দাবীর পিছনে জামালপুর বাসীর যুক্তি ছিল-জামালপুরের প্রচুর মানুষ চট্টগ্রাম যাওয়া-আসা করে। এই ট্রেনের ৪০ ভাগ যাত্রী জামালপুর স্টেশন থেকে উঠে। এই যাত্রীরা যদি ময়মনসিংহ স্টেশন থেকে উঠে তাহলে তাদের জামালপুর থেকে গিয়ে বিজয় ধরতে হয়। এতে তাদের তিন ঘন্টা সময় অপচয় হয়,দুইশ টাকা সিএনজি ভাড়া গুনতে হয়। অনেক পরিশ্রম করে ময়মনসিংহ যেতে হয়। যেহেতু ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে এসে ময়মনসিংহ স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকে এবং যাত্রী নিয়ে সাড়ে আটটায় ছেড়ে যায় তাহলে ট্রেনটি জামালপুর স্টেশনের এই ৪০ ভাগ যাত্রী নিয়ে জামালপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে গেলে সমস্যা কোথায়। এই সাধারন বিষয়টির জন্য জামালপুরবাসীদের এক যুগ ধরে আন্দোলন করতে হয়েচ্ছে। ময়মনসিংহের একটি মহল এবং ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট এই ট্রেনটি যেন জামালপুরে না আসতে পারে তারা সবসময় এই প্রক্রিয়াটি চালিয়েছে বলে স্থানীয় জনসাধারন জানায়।

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের জামালপুর জেলার সভাপতি বিশিষ্ট সংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম জানান, বিজয় ট্রেনটি এই মাসের ৫ তারিখে জামালপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু ময়মনসিংহের একটি মহল আন্দোলন শুরু করলে ট্রেনটি জামালপুর আসে নাই। তারপর আমরা শুনি ১২ তারিখ আসবে। কিন্তু ১২ তারিখেও ট্রেনটি আসে নাই। ট্রেনটি যেন ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে যায় এই জন্য জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রী এবং ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেলমন্ত্রীর কাছে ডিউ লেটার পাঠালে ট্রেনটি জামালপুর আসার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। জামালপুরবাসী দির্ঘদিন অনেক ধর্যের পরিচয় দিয়েছে। আমরা জামালপুর জেলার এমপি সকল এমপি, ধর্মপ্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান,আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সংগঠনিক সম্পদক মির্জা আজম মহোদয়,প্রধানমন্ত্রীর সবেক মূখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ এবং জামালপুরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে থাকি। তারা আমাদের আশ্বাস দেন বিজয় এক্সপ্রেস জামালপুর স্টেশন থেকেই ছেড়ে যাবে আমরা প্রানপণ চেষ্টা করছি।

এবিষয়ে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পদক এবং সংবাদিক সুমন মাহমুদ বলেন, আমরা ১২ নভেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের জন্য ১৫ তারিখ আমরা বাদ্য হয়েই জামালপুর স্টেশনে সমাবেশ করি,বিজয় এক্সপ্রেসের দারীতে পুনরায় আন্দোলনের ডাক দেই এবং আমরা হুশিয়ারি দেই বিজয় এক্সপ্রেস জামালপুর স্টেশনে বিজয় মাসে না আসলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবো। পরিশেষে আমরা বিজয় অর্জন করে আজ থেকে ট্রেনটি জামালপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে যাচ্ছে। এই আনন্দে আমরা জামালপুরবাসী স্টেশনে এসেছি বিজয়কে বরণ করে নিতে। আমরা ট্রেনের কর্মকতা-কর্মচারীদের ফুল দিয়ে মিষ্টিমূখ করিয়ে বরণ করে নিয়েছি বিজয় ট্রেনকে। বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি জামালপুর স্টেশনে আসার জন্য যারা এর নেপথ্যে কাজ করেছেন তাদের সকলকে আমরা জামালপুরবাসী ধন্যবাদ জানাই।

বিজয় এক্সপ্রেসকে অভিনন্দন জানাতে আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম,প্রধানমন্ত্রী সাবেক মূখ্যসচিব বর্তমানে এসডিজিএস এর সমন্নয়ক ও জামালপুর-৫ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ,এফবিসিসিআই এর পরিচালক ও জামালপুর-৫ আসনের স্বতন্ত্রপ্রার্থী রেজাউল করিম রেজনু (সিআইপি),চট্টগ্রামস্থ জামালপুর সমিতিসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ জামালপুর স্টেশনে এসেছিল, বক্তব্য দেন এবং সবাইকে মিষ্টিমুখ করান।

রাত ৯টা ১৫ মিনিটে জামালপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছেড়ে যায়।

স্টেশন সূত্রে জানা যায়,জামালপুর স্টেশনের মোট ২২৭ টি টিকেট সব টিকেট বিক্রি হয়েছে এবং প্রচুর এক্সট্রা টিকেট বিক্রি হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে ২৫২টি টিকেট জামালপুর স্টেশনের জন্য বরাদ্দ আছে।