Home মতামত গণতন্ত্র বিনা ভাষা, সংস্কৃতি ও জনজীবন সুরক্ষার কোন গ্যারান্টি নেই

গণতন্ত্র বিনা ভাষা, সংস্কৃতি ও জনজীবন সুরক্ষার কোন গ্যারান্টি নেই

52

সুজন বিপ্লব:

গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যতীত ভাষা, সংস্কৃতি, জাতিসত্তা ও আদিবাসী জনজীবনও অবরুদ্ধ ও বিপন্ন হয়ে পড়ছে। দীর্ঘ অগণতান্ত্রিক শাসনের অধীনে পরিচালিত বাংলাদেশে জাতিগত সংখ্যালঘুদের সাথে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সংখ্যালঘুরা নিচিহ্নের পথে রয়েছে। বহুমাত্রিক নিপীড়ন, খুন, গুম, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব ও লুটপাটে বৃহৎ অংশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী দেশ ছেড়েছে নিরুপায় অংশ স্বদেশে নিগৃহীত হচ্ছে। সরকার ভিন্ন কোন মতকে সহ্য করতে পারছেনা। ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক পন্থায় দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। সরকার ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ স্লোগানের অন্তরালে দেশে স্মার্ট দুর্নীতি, লুটপাট, চাঁদাবাজি, দালালি আর ভয়ের রাজত্বে আসন গেড়ে ক্ষমতাসীন শাসকদল জনগণের বুকে পা’দোল খেলাচ্ছে। ৭৫’র ১৫ আগস্ট নির্মম হত্যাকাণ্ড পরবর্তী নয়, বরং সত্য ঘটনা মূলতঃ স্বাধীন সার্বভৌম মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ-এর অগ্রযাত্রাও প্রথম সরকারের পরম্পরায় সকল শাসকের হাতেই খর্ব হচ্ছে। এই জুলুমশাহি ধারাকে অব্যাহত রাখতে একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করা হচ্ছে যেখানে ভিন্ন কোনো রাজনৈতিক মত ও পথকে সহ্য করা হচ্ছে না। এ ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে লোভ আর ভয়কে উপেক্ষা করে সর্বত্র অন্যায় অবিচার রুখে দাঁড়াতে হবে। এজন্য বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে নিজেদের সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে বাঁচার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ লড়াই গড়ে তুলতে হবে। দুর্নীতি, লুটপাটকারী আর তাদের পাহারাদারের দৃঢ়ভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। প্রহসনের এই ডামি নির্বাচন অবিলম্বে বাতিল করে নির্দলীয় সরকারের অধিনে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।

আজ সংসদে যাওয়া অধিকাংশ রাজনীতিক বিনাপুঁজির লাভজনক ব্যবসায়ী কারণ তারা বিনাভোটে নির্বাচিত। আর বর্তমান সংসদতো পুরোই ব্যবসায়ীদের দখলে। এবারের একদলীয় নির্বাচনে প্রার্থীদের হলফনামায় এটা পরিস্কারভাবে ফুটে উঠেছে। সাজানো ভোটের এই একদলীয় সংসদ চলতে থাকলে আরও আইন প্রনীত হবে লুটেরা ব্যবসায়ী আর কর্তৃত্ববাদী শাসনের স্বার্থে। সাধারণ মানুষের স্বার্থ হবে উপেক্ষিত। বর্তমান ও বিভিন্ন সময় ক্ষমতায় থাকা শাসকগোষ্ঠী নিজেদের পরিবার, গোষ্ঠী, দলের অনেকের উন্নয়ন করলেও গণমানুষের উন্নয়ন হয়নি। আর যে উন্নয়ন হয়েছে সেটা অনেকটা লুটপাটের চুইয়ে পড়া ভাগ থেকেই। মানুষ ভোটাধিকার বঞ্চিত, সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে অথচ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি দৈনন্দিন ঘটনায় পরিণত হয়েছে। জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নেই। শিক্ষা, চিকিৎসার বেহাল অবস্থা। অথচ টাকা পাচার, খেলাপি ঋণ আর প্রকল্পের নামে জনগণের টাকা লুটপাট থেমে নেই। এ অবস্থার অবসানে পুরো ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। নির্বাচন ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে হবে। এটা করতে নীতিহীন রাজনীতিকে পরিত্যাগ করে নীতিনিষ্ঠ রাজনীতিকে শক্তিশালী করতে হবে।
আমাদের দেশ ও কৃষক সমাজ এক ভয়াবহ সংকটে নিপতিত হয়েছে। কৃষকরা ফসলের দাম পাচ্ছেনা, ন্যায্য মজুরি বঞ্চিত শ্রমিক, জনগণ ভোটের অধিকার পাচ্ছেনা। আমরা একটি বিকল্প রাজনীতি নির্মাণ করতে চাই যেখানে সকল মানুষের জীবনের দাম থাকবে, রাষ্ট্র হবে শোষণের বিরুদ্ধে জণগণের ভরসাকেন্দ্র।

মানুষ ভয়াবহ সংকটে নিমজ্জিত। একদিকে দ্রব্যমূল্য ও অন্যদিকে পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, বাড়িভাড়াসহ নানান নাগরিক ব্যয় আকাশচুম্বি। ঢাকা শহর পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত নগরের প্রথম কিংবা দ্বিতীয় স্থান দখল করে আছে। আমাদের ঢাকা সিটির প্রায় ৫০ লক্ষ নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ বসবাস করে কিন্তু তাদের জন্য সরকারের কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি বিগত দিনে। শ্রমজীবী মানুষকে এই জালিম-অনির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে সংগঠিতভাবে লড়াইয়ে নামতে হবে। এই দেশকে বাসযোগ্য করতে প্রয়োজন সকলের জন্য বিশেষ করে শ্রমজীবী প্রান্তিক মানুষবান্ধব পরিকল্পনা গ্রহণ করা। সাধারণ শ্রমজীবী মানুষকে বাদ দিয়ে কোন দেশ একদিনও যেমন চলবে না, তাই তাদের কথাও প্রতিদিন আমাদের ভাবতে হবে। উন্নয়ন পরিকল্পনায় তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, জনজীবনের সংকট দূর, প্রহসনের ‘ডামি’ নির্বাচন বাতিল, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, জাতীয় সম্পদ রক্ষার দাবিতে সকল মানুষ বিশেষ করে শ্রমজীবী নিম্নআয়ের মানুষদের নিয়ে তীব্র লড়াই সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে। লুটেরা বুর্জোয়া দ্বিদলীয় মেরুকরণের শাসকজোট আ’লীগ ও বিএনপির বাইরে সকল শ্রেণিপেশার মানুষকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিকল্প বাম গণতান্ত্রিক শক্তি উত্থান ও ক্ষমতায়ন ঘটাতে হবে। জনগণের পক্ষের বিকল্প শক্তি বামপন্থীদের নেতৃত্বে সরকার রাষ্ট্র পরিচালনে নির্বাচিত হলে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ব্যবস্হার সুরক্ষা নিশ্চিত হতে পারে। বামপ্রগতিশীল কমিউনিস্টরাই জনগণের সংগ্রামে নিবেদিত ও পরীক্ষিত বিধায় বামসংগঠন-পার্টির পতাকাতলে সমবেত হয়ে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বানকে ধারণেরও বিকল্প নেই।

ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার, গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আহ্বানে বামপন্থীসহ গণতান্ত্রিক শক্তিসমূহ রাজপথে লড়ছে। দেশে কার্যত একটি একদলীয় শাসন কায়েম হয়েছে। বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন শেখ হাসিনার অধীনে দেশে কার্যত একটি একদলীয় শাসন চলছে। দেশের অর্থনীতি, মানুষের রুটি-রুজি ও জাতীয় স্বার্থ আজ বিপন্ন। এই অবস্থায় গণআন্দোলনকে সর্বাত্মক গণঅভ্যুত্থানে রূপান্তরিত করার মধ্য দিয়ে ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার, গণতন্ত্র ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

২০২৪ খ্রিস্টাব্দের বিগত ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন জনগণ মেনে নেয়নি। তারা নীরব প্রতিবাদস্বরূপ ভোট বর্জন করেছে। এ দেশের মানুষ বার বার গণতন্ত্রের জন্য বুকের রক্ত দিয়েছে, লড়াই করেছে। এরশাদ স্বৈরাচার পতনের পর অদ্যবধি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি। শাসকশ্রেণির রাজনৈতিক দলগুলো শহীদের রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। উপরন্তু বর্তমান সরকার মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করেছে, তারা মানুষের ভাতের অধিকারও দিতে পারেনি। দেশ, জাতি ও জনগণ আজ জিম্মি অবস্থার শিকার। কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি জনগণের বিকল্প শক্তি সমাবেশ ও ক্ষমতা কেন্দ্র গড়ে তোলার মধ্য দিয়েই মানুষের মুক্তি অর্জন করতে হবে। শেখ হাসিনা দেশে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। তার ধারণা ডান্ডা মেরে সকলকে ঠান্ডা করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু যতদিন ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না হয় ততদিন পর্যন্ত এই দেশের মুক্তিকামী মানুষকে দমিয়ে রাখা যাবে না। অবস্থাদৃষ্টে সকল গণতান্ত্রিক শক্তি ও আদিবাসী-দলিত জনগোষ্ঠীকে সমতল ও পাহাড়ের সর্বত্র আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের নতুন ডাক দিতে চাই। অনেকেই ভাবছেন সব শেষ হয়ে গেছে। আইয়ুব খানের মহাসমারোহে উন্নয়নের দশক উদযাপন শেষ হওয়ার আগে তার পতন হয়েছিল। স্বৈরশাসনের অবসান যখন হয় মহাপরাক্রমশালী শাসকের মসনদও বালির বাঁধের মতো মুহূর্তে ভেসে যায়। দুঃখজনক হলেও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে একসময় যাদের সহযোদ্ধা হিসেবে পেয়েছি, আজ স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দায়ে তাদেরই কারো বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংগ্রাম করতে হচ্ছে। দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষকে গণআন্দোলনে শামিল হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ভোটাধিকার, গণতন্ত্র ও মানুষের রুটি-রুজির অধিকার আদায়ের অঙ্গীকার ব্যক্ত করি। বিদেশি ঋণনির্ভর মেগাপ্রকল্প ও মেগা লুটপাট, বিপুল অর্থ পাচারের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতি আজ চরম সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় পৌঁছেছে। বাজার নৈরাজ্যকে নীতিগত সুবিধা দিয়ে সরকার মানুষের মুখের অন্ন কেড়ে নিয়েছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংস করে একদলীয় শাসন কায়েম করতে গিয়ে দেশের জাতীয় স্বার্থ নিলামে তোলা হয়েছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের সামনে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, রুটি-রুজির অধিকার সংহ লুটেরা গোষ্ঠী ও সমাজপতিদের নেতৃত্বে ভারত রাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য আজ ধ্বংস হতে বসেছে। অথচ তারাই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারকে ফ্যাসিবাদী কায়দায় ক্ষমতাসীন থাকার সর্বাত্মক মদদ প্রদান করছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারত রাষ্ট্রের নীতি যতটা না রাজনৈতিক তার অধিক সামরিক। তাই দেশের জনসাধারণের উদ্দেশ্যে নীতিনিষ্ঠ দেশপ্রেমিক অবস্থান থেকে রাজনৈতিক সংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে যাই।

দেশের কোটি মানুষ বেকার, সেখানে আদিবাসী-দলিত প্রান্তিক জনসাধারণের বেকারত্ব ও খাদ্য নিরাপত্তাসহ জীবনধারণের বিষয়টি ভয়াবহ সংকটে পতিত হয়ে গেছে। সম্ভাবনাময় যুবসমাজকে বেকার করে শাসকশ্রেণি ফায়দা হাসিল করছে। সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে প্রাপ্ত উদ্ধৃত:

“তরুণদের ৪১% কাজে নেই, শিক্ষায়ও নেই

  • জনশুমারি ধরে হিসাব করে দেখা যায়, নিষ্ক্রিয় তরুণের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ২৯ লাখ।
  • নিষ্ক্রিয় তরুণের হার সবচেয়ে কম বরিশালে, বেশি সিলেটে।
  • তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি।

বাংলাদেশের প্রায় ৪১ শতাংশ তরুণ নিষ্ক্রিয়। মানে হলো তাঁরা পড়াশোনায় নেই, কর্মসংস্থানে নেই; এমনকি কোনো কাজের জন্য প্রশিক্ষণও নিচ্ছেন না। মেয়েদের মধ্যে নিষ্ক্রিয়তার হার বেশি, ৬১ দশমিক ৭১ শতাংশ। ছেলেদের মধ্যে এ হার কম, ১৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ। এই ধরনের তরুণের সংখ্যা বাড়ছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস, ২০২২ প্রতিবেদনে নিষ্ক্রিয় তরুণের এই হার তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনটি গত বুধবার প্রকাশ করা হয়। বিবিএস নিষ্ক্রিয় তরুণের হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ধরেছে ১৫ থেকে ২৪ বছর। তাদের হার ধরে হিসাব করে দেখা যায়, নিষ্ক্রিয় তরুণের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ২৯ লাখ।
অর্থনীতিবিদ ও শ্রমবাজারবিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেয়েদের বাল্যবিবাহ, কাজ পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতার অভাব, শিক্ষার মানে ঘাটতি, যথেষ্ট কর্মসংস্থান তৈরি না হওয়া, শোভন কাজের অভাব ও সামাজিক পরিস্থিতি নিষ্ক্রিয় তরুণের হার বেশি হওয়ার কারণ।
১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণদের বড় অংশ নিষ্ক্রিয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই জনগোষ্ঠী সামাজিক ‘অস্থিরতার কারণ’ হতে পারে।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ‘বৈশ্বিক কর্মসংস্থান নীতি পর্যালোচনা-২০২৩’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণত উন্নত বিশ্বে নিষ্ক্রিয় তরুণের হার কম হয়। বেশি হয় উন্নয়নশীল ও স্বল্প আয়ের দেশগুলোতে। বাংলাদেশের মতো ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে হারটি উচ্চ। প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০০৫ সালে নিষ্ক্রিয় তরুণের হার গণনা শুরু হয়। ২০২০ সালে বিশ্বে এ হার ছিল সর্বোচ্চ—২৫ শতাংশ ছুঁই ছুঁই। এর কারণ ছিল করোনা মহামারি। ২০২২ সালে তা কমে সাড়ে ২৩ শতাংশে নেমেছে।

ডিসেম্বর শেষে বেকার বেড়ে হয়েছে সাড়ে ২৩ লাখ:
নিষ্ক্রিয় তরুণেরা নানা সামাজিক সমস্যার কারণ হতে পারেন। যেমন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ। বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করেন, বাংলাদেশে এখন যে ‘কিশোর গ্যাং’ সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে, তার একটি কারণ নিষ্ক্রিয় তরুণ বেড়ে যাওয়া।
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টে (এসডিজি) নিষ্ক্রিয় তরুণের হার কমিয়ে ফেলার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশও কমানোর লক্ষ্য ঠিক করেছে। যদিও তা পূরণের অগ্রগতি নেই। বরং নিষ্ক্রিয় তরুণ বাড়ছে। এসভিআরএস-২০২১ অনুযায়ী, তখন নিষ্ক্রিয় তরুণের হার ছিল ৩৯ দশমিক ৬ শতাংশ। এক বছরে তা প্রায় ১ শতাংশীয় বিন্দু বেড়েছে।
শ্রমশক্তি জরিপে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হয় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সংজ্ঞা। সেখানে সর্বশেষ সাত দিনে এক ঘণ্টার জন্য অর্থের বিনিময়ে কাজ করলেই ধরা হয় যে তিনি বেকার নন।
আলমগীর হোসেন, বিবিএসের এসভিআরএস ইন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম প্রকল্পের পরিচালক

এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম এই ধরনের তরুণদের নাম দিয়েছে বিযুক্ত যুবসমাজ। নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, বিযুক্ত যুবসমাজের মধ্যে চার ধরনের প্রবণতা দেখা যায়—১. মানসিক বিষণ্নতা। ২. মাদকাসক্তি। ৩. পারিবারিক ও সামাজিক সহিংসতায় জড়িত হওয়া এবং ৪. উগ্রবাদের দিকে ঝোঁক।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বিযুক্ত যুবসমাজের হার বেড়ে যাওয়া ভালো লক্ষণ নয়। এটা সামাজিক অস্থিরতা তৈরির একটি কারণ হতে পারে।
নিষ্ক্রিয় তরুণের হার কমাতে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় জোর দেওয়া এবং ঝরে পড়াদের আবার শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরিয়ে আনা জরুরি। তিনি বলেন, নারীদের বিনা মূল্যের পারিবারিক শ্রমের বোঝাও কমাতে হবে। নইলে তাঁরা কীভাবে শ্রমবাজারে আসবেন।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক ও অর্থনীতিবিদ বিনায়ক সেন

কত তরুণ নিষ্ক্রিয়:
বিবিএসের জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রতিবেদন-২০২২ বলছে, দেশে বর্তমানে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণদের সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ১৬ লাখ; যা মোট জনসংখ্যার ১৯ শতাংশের কিছু বেশি। স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই জনসংখ্যার ৪০ দশমিক ৬৭ শতাংশ নিষ্ক্রিয়। অর্থাৎ, সংখ্যায় তাঁরা প্রায় ১ কোটি ২৯ লাখ।
নিষ্ক্রিয় তরুণের হিসাবটি বিবিএসের শ্রমশক্তি জরিপে উঠে আসে। ২০২২ সালের জরিপ অনুযায়ী, দেশে নিষ্ক্রিয় তরুণের হার ২২ শতাংশ (১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী)। তবে স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকসের সঙ্গে শ্রমশক্তি জরিপের ফলাফলের কিছু পার্থক্য রয়েছে। কারণ, সংজ্ঞাগত ভিন্নতা।

উচ্চশিক্ষিত হয়েও কেন তরুণেরা বেকার:
বিবিএসের এসভিআরএস ইন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম প্রকল্পের পরিচালক আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমশক্তি জরিপে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হয় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সংজ্ঞা। সেখানে সর্বশেষ সাত দিনে এক ঘণ্টার জন্য অর্থের বিনিময়ে কাজ করলেই ধরা হয় যে তিনি বেকার নন। এসভিআরএসে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে যে ব্যক্তি নিজেকে কী মনে করেন—বেকার না কর্মজীবী। ২০২১ সাল থেকে এসভিআরএসে নিষ্ক্রিয় জনগোষ্ঠীর হিসাব দেওয়া শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কর্মসংস্থান পরিস্থিতি বুঝতেই এই হিসাব তৈরি শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, এই জরিপে নমুনা হিসাবে নেওয়া হয়েছে ৩ লাখের বেশি খানা (পরিবার)।
বিবিএসের হিসাবে, মেয়েদের বিয়ের গড় বয়স ১৯ বছর ৩ মাস। মানে হলো, তাঁদের যখন শ্রমবাজারে প্রবেশের কথা, তখন তাঁরা ঘর ও সন্তান সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। নারীর গৃহস্থালি কাজ কর্মসংস্থান হিসেবে গণ্য হয় না।
কেন নিষ্ক্রিয়:
দেশে বড় অংশের তরুণ নিষ্ক্রিয় কেন, এ প্রশ্নে ছেলে ও মেয়েদের ক্ষেত্রে উত্তর ভিন্ন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেয়েদের একটি অংশ বাল্যবিবাহের শিকার হচ্ছে। আরেকাংশের বিয়ে হচ্ছে অল্প বয়সে। বিবিএসের হিসাবে, মেয়েদের বিয়ের গড় বয়স ১৯ বছর ৩ মাস। মানে হলো, তাঁদের যখন শ্রমবাজারে প্রবেশের কথা, তখন তাঁরা ঘর ও সন্তান সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। নারীর গৃহস্থালি কাজ কর্মসংস্থান হিসেবে গণ্য হয় না।
ঢাকার মিরপুরের এক তরুণী ১৭ বছর বয়সে বাল্যবিবাহের শিকার হন। তিনি এখন এক সন্তানের জননী। পড়াশোনাও বাদ দিয়েছেন। যেহেতু তিনি এখন পড়াশোনা, চাকরি অথবা প্রশিক্ষণে নেই, সেহেতু তিনি পড়েছেন নিষ্ক্রিয় তরুণদের তালিকায়।
জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই তরুণী প্রথম আলোকে বলেন, পড়াশোনা চলছিল। তখন পরিবার থেকে তাঁকে বিয়ে দেওয়া হয়। পড়াশোনা শেষে তাঁর আর চাকরি করা হলো না।
বিবিএসের পরিসংখ্যান বলছে, দেশে তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি। জাতীয়ভাবে বেকারত্বের হার যেখানে সাড়ে ৩ শতাংশের মতো, সেখানে তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৮ শতাংশ।
ছেলেদের মধ্যে নিষ্ক্রিয়তার একটি বড় কারণ তাঁদের পছন্দমতো কাজ খুঁজে না পাওয়া। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেক ক্ষেত্রে তরুণেরা যে কাজ খুঁজছেন, সেটা তাঁরা পান না। আবার যে কাজ আছে, যেটা করার মতো দক্ষতার ঘাটতিও প্রকট।
বরিশালের একটি কলেজ থেকে স্নাতক (পাস) ডিগ্রি অর্জন করে বছর দেড়েক ধরে কাজ খুঁজছেন এক তরুণ। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘পড়াশোনা করে এখন না পারি কারখানায় শ্রমিকের চাকরি করতে, না পারি দোকানে কাজ করতে। ছোটখাটো হলেও একটি সরকারি চাকরির চেষ্টা করছি।’ তিনি বলেন, চাকরির পরীক্ষা দিতে দিতে তিনি বুঝেছেন এত বছরের শিক্ষাজীবনে ভালোভাবে না শিখেছেন বাংলা, না ইংরেজি, না গণিত। অথচ তাঁর পাশের বাড়ির তরুণ মোটরসাইকেল মেরামতের কাজ শিখে এখন নিজেই দোকান দিয়েছেন।
বিবিএসের পরিসংখ্যান বলছে, দেশে তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি। জাতীয়ভাবে বেকারত্বের হার যেখানে সাড়ে ৩ শতাংশের মতো, সেখানে তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৮ শতাংশ। শিক্ষার হার যত বেশি, বেকারত্বের হার তত বেশি। উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্ব প্রায় ১২ শতাংশ। দেশের মোট বেকারের প্রতি চারজনের একজন উচ্চশিক্ষিত।

‘কারিগরি শিক্ষায় জোর দেওয়া জরুরি’
নিষ্ক্রিয় তরুণের হার সবচেয়ে কম বরিশালে, বেশি সিলেটে। বরিশালে ৩৮ দশমিক ৩২, রংপুরে ৩৯ দশমিক ৪, রাজশাহীতে ৩৯ দশমিক শূন্য ৯, ঢাকায় ৩৯ দশমিক ৫৩, খুলনায় ৩৯ দশমিক ৬৬, ময়মনসিংহে ৪০ দশমিক ৫০, চট্টগ্রামে ৪৩ দশমিক ৭৭ এবং সিলেটে ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ তরুণ নিষ্ক্রিয়।
নিষ্ক্রিয় তরুণের সংখ্যা না কমার জন্য অর্থনীতিবিদ ও শ্রমবাজারবিশেষজ্ঞরা কয়েকটি কারণের কথা বলেছেন। প্রথমত, নারীদের বিপুলভাবে শ্রমবাজারে আনা যাচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, বাজারে যে ধরনের দক্ষতার চাহিদা রয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সে অনুযায়ী শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে না। কারিগরি শিক্ষা যথেষ্ট জোর পাচ্ছে না। তৃতীয়ত, শিক্ষার মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে অনেক তরুণের বাংলা ও ইংরেজি ভাষাজ্ঞান দুর্বল। চতুর্থত, দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির সঙ্গে মিলিয়ে নতুন কর্মসংস্থান ততটা তৈরি হচ্ছে না।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক ও অর্থনীতিবিদ বিনায়ক সেন মনে করেন, নিষ্ক্রিয় তরুণের হার কমাতে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় জোর দেওয়া এবং ঝরে পড়াদের আবার শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরিয়ে আনা জরুরি। তিনি বলেন, নারীদের বিনা মূল্যের পারিবারিক শ্রমের বোঝাও কমাতে হবে। নইলে তাঁরা কীভাবে শ্রমবাজারে আসবেন।
বিনায়ক সেন আরও বলেন, বাংলাদেশে প্রজনন হার একটি জায়গায় আটকে আছে। কারণ হলো জন্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহার লক্ষ্য অনুযায়ী বাড়েনি। এ ক্ষেত্রে উন্নতি না করতে পারলে নারীদের মধ্যে নিষ্ক্রিয়তার হার কমবে না।
নিউজঃ রাজীব আহমেদ , দৈনিক প্রথম আলো , ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪”
বিশেষায়িত শিক্ষা শেষে এদেশে কর্মসংস্হানের সুযোগ আটকে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করে নিবন্ধনের নামে বাঘের নিরীহ হরিণ শিকার চলছে। এক্ষেত্রে পেশায় প্রবেশে আগ্রহী আইন স্নাতকের অহেতুক বার কাউন্সিল তালিকাভুক্তি পরীক্ষা চাপিয়ে দিয়েছে। আবার কয়েক ধাপের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে অ্যাডভোকেট সনদ প্রাপ্ত হয়। শুধু আইন নয় এ রকম অনেক সেবামূলক স্বাধীন পেশাকে তালিকাভুক্তিকরণের বিড়ম্বনামূলক হয়রানি পদ্ধতিতে ফেলে জনগণের পকেট কেটে নেওয়া হচ্ছে। জনগণও স্বপ্নবান মেধাবী তারুণ্যের সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্বের অভিশাপমুক্ত না হলে মধ্য ‘আয় থেকে উন্নত দেশ’ তকমা যেন কলঙ্কের কালিমা লেপন করছে। আসল কথা হল অগণতান্ত্রিক শাসকগোষ্ঠী দেশের জন্য মঙ্গলময় হতে পারেনা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী ভোট পূর্বাপর সহিংসতা ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নির্যাতন, খুন ও লুটপাট চোখে আঙুল দিয়ে শিখিয়ে দিচ্ছে মন্দের ভালো ও ভোট ব্যাংক বানানোর গল্প মিথ্যায় পরিপূর্ণ। রাজনৈতিক দেউলিয়া আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি জোট গদি লাভ ও ক্ষমতার লোভে প্রয়োজনে দেশ বেঁচে সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্প্রদায়িক তোষণ করছে। জনগণের সংকট, ছাত্র, যুব, নারী ও মেহনতী মানুষকে গভীর সংকটে পতিত করে মুনাফা লুটে নেওয়াই বুর্জোয়া রাজনীতির লক্ষ্য, ক্ষমতা ছাড়া আ’লীগ ও বিএনপি’র আর কোন উদ্দেশ্য নেই। সমগ্র দেশে অচলায়তনের ফলে সাধারণ মানুষ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্হ হচ্ছে। নাগরিক অধিকার পর্যন্ত এ দেশের কোন মানুষের আর নেই। জনসাধারণের পাশাপাশি সমতলের বসবাসরত আদিবাসী-দলিত সম্প্রদায়কে নানাবিধ বৈষম্যের শিকারে পরিণত হয়ে অস্পৃশ্যতা ও বর্ণবাদী আগ্রাসনে বিদ্ধ হচ্ছে। পার্বত্য জনপদে পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোতে রাজনীতি সচেতনতায় পাহাড়িরা সংগঠিত নিয়ামক শক্তি হওয়ার সুযোগ রয়েছে। শাসকশ্রেণি রুখতে সারাদেশব্যাপী বাম গণতান্ত্রিক শক্তি ও আদিবাসী-দলিত-বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে যুগপৎভাবে লড়াইয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বৈষম্যমুক্ত ও শোষণহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে জনগণের ঐক্যবদ্ধ লড়াই সময়ের বিকল্প ভরসাকে রাখবে চির জাগরূক।

“শ্বাপদসংকুল এই পৃ‌থিবীর নি‌শ্ছিদ্র আঁধা‌রে সংকীর্ণ পদচারণ।
‌শিরদাঁড়ায় বহন ক‌রি এক আরাধ্য বো‌ধের স্রোত।
তা আমায় কাতর ক‌রে,
অ‌স্থির ক‌রে প্রাণময় এক প্রণোদনায়,
গ‌তিশীল তবু দৃঢ় ঋজুতায়।”
অপরাপর প্রা‌ণির সা‌থে মানু‌ষের এক গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য ভা‌বের প্রকা‌শে। ভাষার আ‌বিষ্কার মানুষ‌কে দি‌য়ে‌ছে এক অপ্র‌তি‌রোধ্য ক্ষমতা, নি‌জের বোধ এবং অ‌ভিজ্ঞতা‌কে অপ‌রের কা‌ছে তু‌লে ধরবার। আর এই ভা‌বের বাহন ভাষার প্রথম সুগ‌ঠিত রূপ কিন্তু কাব্য।একটা বি‌শেষ উচ্চতার স্কে‌লে প্র‌তি‌দি‌নের ব্যবহৃত ক্লি‌ষে ভাষাটাও যে একটা স্থায়ী দোত্যনা তৈ‌রি কর‌তে পা‌রে মানুষ দেখল গান বাঁধ‌তে গি‌য়ে অমৃতের সে স্বাদ পেয়েছে। সাংস্কৃতিক আকর্ষণী ক্ষমতা ধারণের মাধ্যমে মানুষের জীবনকে যাপনে পরিশীলিতভাব পৌঁছে দেয়।
মানুষ তাঁর ভাষা, সংস্কৃতি ও ভূমির সাথে জন্মগত কারণে সম্পর্কিত হওয়ায় উৎচ্ছেদকে মানতে পারেনা। রাষ্ট্রীক, সামাজিক ও প্রাকৃতিক বৈরী পরিবেশ মোকাবিলা করেই জীবনের স্বাদ লাভ করতে হয়। সেকারণ বিদ্রোহ ন্যায়সঙ্গত ও বিপ্লব অনিবার্য হয়ে ওঠে। শাসকগোষ্ঠীর চলতি আগ্রাসনের শিকার সাধারণ জনগণের সাথে আদিবাসী ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের মিমাংসা প্রকৃত গণতান্ত্রিক ব্যবস্হা তথা সমাজ পরিবর্তনের ধারায় প্রগতিশীল সমাজ ব্যবস্হার পত্তনে নিহিত। গণতন্ত্রহীন দেশ এখন অমর একুশে ও মুক্তিযুদ্ধের বিপরীত দিকে ধাবিত হয়েছে। মানুষের মর্যাদায় বাঁচতে হলে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা জরুরি।

-লেখক: রাজনীতিক ও লেখক ।