Home রাজনীতি বিএনপি রাষ্ট্রকে অবৈধ পঞ্চম সংশোধনীকালে ফিরিয়ে নিতে চায়: ওয়ার্কার্স পার্টি

বিএনপি রাষ্ট্রকে অবৈধ পঞ্চম সংশোধনীকালে ফিরিয়ে নিতে চায়: ওয়ার্কার্স পার্টি

36

ডেস্ক রিপোর্ট: ‘বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা কার্যতঃ রাষ্ট্রকে অবৈধ পঞ্চম সংশোধনীকালে ফিরিয়ে নেয়ার প্রয়াসমাত্র। এ কারণেই তারা এই সরকারের আমলে গৃহীত সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে এবং ঐ সংশোধনীর মাধ্যমে বায়াত্তরের সংবিধানের রাষ্ট্রীয় মূলনীতিসমূহ পুনঃস্থাপন এবং সংবিধানকে রদ রহিত বা বাতিল করার প্রচেষ্টা অর্থাৎ অবৈধ পন্থায় ক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে সেসবকে বাতিল করার জন্য ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন’ করার কথা বলেছে। বস্তুতঃ তাদের নেতা জিয়াউর রহমান সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশকে তার অসাম্প্রদায়িক ভিত্তিভূমি থেকে সরিয়ে নেয়ার প্রয়াসে বাহাত্তরের সংবিধানকে বানচাল করার পদক্ষেপ নিয়েছিল তারই পুনরাবৃত্তি তারা ঘটাতে চায়। তাদের ‘রেইনবো নেশন’ ও ‘ন্যাশনাল কনসিলিয়েশনে’র ধারণাও একই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
গত ২৩ ও ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির দু’দিনব্যাপী সভা শেষে গৃহীত রাজনৈতিক প্রস্তাবে একথা বলা হয়। ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে বলা হয় কোভিড-১৯ ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক ক্ষেত্রে যে প্রতিকূল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তার থেকে উত্তরণ ও উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার ফলে বাংলাদেশের সামনে যে চ্যালেঞ্জসমূহ উপস্থিত সে ব্যাপারে বিএনপি ১০ দফা, ২৭ দফার মধ্যে কোন কথা নাই। রাষ্ট্রের ‘মেরামত’ নয়, বরং ধ্বংস সাধনের কথাই তারা উচ্চারণ করে চলেছে এবং সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশের উপর স্যাংশন আরোপের জন্য বিদেশী শক্তিসমূহের সাথে দেন দরবার চালিয়ে যেতেও তারা দ্বিধা করছে না।
ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক প্রস্তাবে বাংলাদেশের নির্বাচনসহ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের অপতৎপরতার নিন্দা জানান হয়। প্রস্তাবে বলা হয়, বাংলাদেশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া-প্যাসিফিক কৌশলসহ “কোয়াডে” অন্তর্ভুক্ত করার জন্য চাপ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এই অপতৎপরতা চালান হচ্ছে এবং বিএনপি তাদের এদেশীয় দোসর হিসেবে কাজ করছে।
ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধকে রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ছায়াযুদ্ধ’ হিসেবে অভিহিত করে বলা হয় এর ফলে পৃথিবীতে যে অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি হয়েছে তার শিকার হচ্ছে তৃতীয় বিশ্বের মানুষ। ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে অবিলম্বে এই যুদ্ধ বন্ধে পৃথিবীর শান্তিকামী দেশ ও মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান হয়।
দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক নাজুক পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রস্তাবে বলা হয় এক্ষেত্রে বড়লোকদের তেলা মাথায় তেল ঢেলে নয়, সাধারণ মানুষকে বাঁচানোর পদক্ষেপ আরও জোরদার করতে হবে। এবং সেই লক্ষ্যে অবিলম্বে বিদেশে অর্থ পাচার ও ব্যাংক লুটপাট বন্ধ ও দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে শাস্তি প্রদান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য রেশনিং ব্যবস্থা, বিশেষ করে শ্রমিক ও শ্রমজীবী মানুষের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা, শ্রমিকদের জন্য ২০ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা, গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য অবিলম্বে মজুরি বোর্ড গঠন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের প্রসূতিকালীন ছুটি সরকারি খাতের মতই ৬ মাস করা, সার্বজনীন পেনশন স্কীমে খেতমজুরসহ গ্রামীণ শ্রমজীবীদের কোন চাঁদা ছাড়া (নন-কনট্রিবিউটরি) অন্তর্ভুক্তি, কৃষকের ধানের নিন্মতম মূল্য নির্ধারণ, তাদের সার ও জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা, সর্বস্তরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও নারী ও শিশুর ওপর সহিংসতা বন্ধের দাবি জানান হয়।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেনন অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন।