ডেস্ক রিপোর্ট: প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি কীভাবে আবার ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচন যা সকলে মেনে নিয়েছিল সে নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট মাত্র ৩০টি আসন পেয়েছিল।
আজ সন্ধ্যায় তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্বকালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং সে নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন তুলতে পারবে না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেছিল এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট মাত্র ৩০টি আসন পেয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি কি দেশ ও জনগণের জন্য ভালো কোন কিছু করছে যার মাধ্যমে তারা তাদের প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস গড়ে তুলবে যে কারণে জনগণ তাদের দলকে আবার ক্ষমতায় বসাবে।
তিনি বলেন, বিএনপি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে ছিনি মিনি খেলা শুরু করেছে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, জিয়াউর রহমান দেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করার পর থেকে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য প্রহসনমূলক হ্যাঁ/না ভোট এবং সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়াও ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রহসনমূলক নির্বাচন করেছিলেন যাতে কোনো রাজনৈতিক দল অংশ নেয়নি।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ ভোট কারচুপি কখনো মেনে নেয়নি বলেই নির্বাচনের দেড় মাসের মধ্যে আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপি সরকারের পতন ঘটিয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, ২০০৬ সালে ১.২৩ কোটি জাল ভোটারের তালিকা নিয়ে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়াস চালালে তা বাতিল করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আসে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও কাজী জাফরুল্লাহ প্রমুখ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
আগামী ২৪ ডিসেম্বর রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও যুব মহিলা লীগের নবনির্বাচিত নেতাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।
প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি কে এম শাখাওয়াত মুন সাংবাদিকদের জানান, এর আগে দুই সংগঠনের নবনির্বাচিত নেতারা গণভবনে প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস জয় করে তার দল জনগণের ম্যান্ডেটের মাধ্যমে বারবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসবে।
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ কখনো ভোট ও জনগণের সমর্থন ছাড়া ক্ষমতায় আসে না। সামরিক শাসনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে কেউ সাহায্য করেনি।”
তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসে আওয়ামী লীগই একমাত্র দল যারা ২০০১ সালে পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ করে শান্তিপূর্ণভাবে দেশের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার দল কখনই চায় না কোনো গণতান্ত্রিক শক্তি ক্ষমতায় এসে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিঘিœত করুক।
তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ জনগণের দল কারণ এটি জনগণের মধ্য থেকে গঠিত হয়েছে এবং বিএনপি সামরিক স্বৈরশাসকের পকেট থেকে গঠিত হয়েছে এবং তারা নিজেদের তাদের ভাগ্য গড়া ছাড়া দেশের জন্য কোন কিছুই করেনি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, দেশের ব্যাপক উন্নয়ন করে জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছে এবং তাদেরকে একটি সুন্দর ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, অন্যদিকে, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার দেশবাসীকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিং দিয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ তাদের শীর্ষ নেতারা অনেক ফৌজদারি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, জনগণ কেন বিএনপিকে ভোট দেবে। তারেক রহমান ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, ২১ আগস্ট ২০০৪ গ্রেনেড হামলা মামলা এবং অর্থ পাচার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজাপ্রাপ্ত এবং এতিমের অর্থ আত্মসাতের দায়ে খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত। অবৈধভাবে উপার্জিত ও লুটপাট করা অর্থ খরচ করে বিদেশে অবস্থান করে তারেক জিয়া এখন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।