Home রাজনীতি বাধা অতিক্রম করে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে: ফখরুল

বাধা অতিক্রম করে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে: ফখরুল

27

স্টাফ রিপোটার: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আন্দোলন করতে গেলে বাধা আসবেই। সেই বাধা অতিক্রম করে আমাদেরকে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, সুলতানা জেসমিনের হত্যাকে ছোট করে দেখার কারণ নেই। এই দেশে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার যারা গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে।তারা এভাবে হত্যা করে নির্যাতন করে মানুষের উপরে মিথ্যে মামলা দিয়ে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।

রবিবার (৯ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

নওগায় র‍্যাবের হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের হত্যার প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার যখন বলছে এই আইনটা অনেকগুলো সংশোধন করা দরকার এবং দুটি ধারা বাতিল করা দরকার। তখন তথ্যমন্ত্রী পরিষ্কার করে বলেছেন এই আইন বাতিল করা হবে না। এই আইন দিয়ে আপনারা জনগণের কথা বলা যে অধিকার সেটাকে পুরোপুরিভাবে দুঃখ দিতে চান, রুদ্ধ দিতে চান, কণ্ঠকে স্তব্ধ করিতে চান।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দেশে এখন গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্র নেই বলেই কারো অধিকার নেই। এমন একটি সরকার জোর করে ক্ষমতা দখল করে টিকে থাকার জন্য অনেকগুলো আইন তৈরি করেছে। তারা সংবিধানের মৌলিক জায়গাগুলো পরিবর্তন করেছে।

নওগার জেসমিন আক্তারের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, তিনি কোন রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না। একজন যুগ্ম সচিবের কথায় তাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হলো। এটা কোন সভ্য দেশে হতে পারে না। এটা কোন গণতান্ত্রিক কিছু হতে পারে না। একজন নাগরিক ও সরকারি কর্মকর্তাকে এভাবে তুলে নিয়ে যাওয়া ভয়াবহ আইনের লঙ্ঘন।

“জেসমি আক্তার র‍্যাবের নির্যাতনে বা স্ট্রোক করে মারা গেলেন, এটা পরের প্রশ্ন। প্রশ্ন একটাই তাকে তুলে নেওয়া হল কোন আইনে?”

তিনি বলেন, পুলিশ কমিশনার বললেন, ঢাকায় বাহিরে সভা করা যাবে না। বা কোন প্রোগ্রাম করা যাবে না। কেন, কোন আইনে আছে? সভা করতে দেবেন না। বাহিরে প্রোগ্রাম করতে দিবেন না। মগের মুল্লুক নাকি? আমরা পরিষ্কারভাবে দেখছি তারা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ বলে সংবিধান মেনে চলতে হবে। সংবিধান তো বলাই আছে আমার কথা বলার অধিকার দিতে হবে। সরকারের বিরুদ্ধে কি কথা বলা যাবে না? সরকার কি রাষ্ট্র বা গড? আমি অবশ্য আমার কথা বলব। আমাদেরকে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বাধা আসবে, বাধাকে অতিক্রম করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের মূল যে আন্দোলন- বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার আন্দোলন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন, আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার আন্দোলন, আজকে ৩৫ হাজার নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে যে মামলা তা প্রত্যাহার করার আন্দোলন।

তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগ ১৭৩ দিন হরতাল করেছিল। সেই হরতালে অনেক মানুষকে হত্যা করেছিল তারা। তৎকালীন নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন তত্ত্বাবধায় সরকার জনগণের দাবি। তত্ত্বাবধায় সরকার ব্যাবস্থা ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবে না। নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অপকৌশলের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে ২০১২ সালে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা তুলে দেয়। কারণ তারা জানে , তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থাকলে তারা আর ক্ষমতা ফিরে আসতে পারবে না। এভাবে তারা সংবিধান পরিবর্তন করেছে। আওয়ামী লীগ এককভাবে বাকশাল কায়েম করতে চায়। সেই ধারাবাহিকতায় তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছে।

মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খানের সঞ্চালনায় এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলেমা রহমান, বিএনপির মিডিয়া ছেলের সদস্য শাম্মী আক্তার, মহিলা দলের ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক নায়েবা ইউসুফ ও মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রুমা আক্তার প্রমুখ।