Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস বাঙালী জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় ১৪ ডিসেম্বর : কুড়িকৃবি ভিসি

বাঙালী জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় ১৪ ডিসেম্বর : কুড়িকৃবি ভিসি

29

বিশেষ প্রতিনিধি: কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কে. এম. জাকির হোসেন বলেছেন, বাঙালী জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হচ্ছে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর। দিনটিতে আমরা দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হারিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে পাক হানাদারবাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর, রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনীর হাতে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান নির্মমভাবে শাহাদত বরণ করেন। আমি তাঁদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত ও শান্তি কামনা করি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। শহীদ দিবস উপলক্ষে একটি বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।

ভাইস চ্যান্সেলর বলেন, দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তি সংগ্রামের পর চারদিকে যখন বিজয়ের রব, মুক্ত পরিবেশে মানুষ যখন রাস্তায় বের হয়ে আসতে শুরু করেছে, ঘরে ফিরতে শুরু করেছে, বিজয়কে বরণের আনন্দে দুলছে ঠিক তখনই এক শোকাবহ ঘটনার অবতারণা ঘটায় স্বাধীনতার শত্রুরা। পরিপূর্ণ বিজয়ের আগ মূহুর্তে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ও তাদের দোসররা পরাজয় নিশ্চিত জেনে জাতির মেধাবী শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নৃশংসভাবে হত্যা করে। তাদের এই হত্যাযজ্ঞের মূল লক্ষ্যই ছিলো এ জাতি স্বাধীনতা পেলেও আর কখনো যাতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাক হানাদারবাহিনী স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার-আলবদর বাহিনীর সহযোগিতায় এ দেশের প্রথিতযশা হাজার হাজার শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পীসহ বহু গুণীজনকে চোখ বেঁধে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে তাদের ওপর চালায় নির্মম-নিষ্ঠুর নির্যাতন, তারপর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। সেই থেকে বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে প্রতিবছর এই দিনটিকে জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে, পালন করে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পরেও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ও তাদের দোসরদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। তারা এখনও বহিঃবিশ্বে বাংলাদেশকে হেয় প্রতিপন্ন করতে নানা ধরনের কূট-কৌশল ও অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।

বুদ্ধিজীবীরা দেশ ও জাতির উন্নয়ন ও অগ্রগতির রূপকার। তাঁদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা, সৃজনশীল কর্মকান্ড, উদার ও গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনা জাতীয় অগ্রগতির সহায়ক। জাতির বিবেক হিসেবে খ্যাত আমাদের বুদ্ধিজীবীরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের জনমত সৃষ্টি, যুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারকে পরামর্শ প্রদানসহ বুদ্ধিবৃত্তিক চেতনা দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধকে সাফল্যের পথে এগিয়ে নিতে বিপুল অবদান রাখেন। বুদ্ধিজীবীরা দেশের জন্য, মানুষের জন্য, কল্যাণের জন্য সর্বোপরি স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়ে নতুন প্রজন্মের কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আগামী দিনে দেশমাতৃকার প্রয়োজনে তাঁদের পথ অনুসরণ করাই হোক শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের বড় শিক্ষা।

ভাইস চ্যান্সেলর আরো বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ ও পথ অনুসরণ করে অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সমাজ গড়তে পারলেই তাদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে। আমি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে সকল শহীদ বুদ্ধিজীবীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাঁদের পরিবারের সকল সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। “জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।