Home জাতীয় বাঘের অস্তিত্ব টিকে থাকলে সুন্দরবনের অস্তিত্ব রক্ষা পাবে: উপমন্ত্রী নাহার

বাঘের অস্তিত্ব টিকে থাকলে সুন্দরবনের অস্তিত্ব রক্ষা পাবে: উপমন্ত্রী নাহার

809

মোংলা থেকে মো: নূর আলম: সুন্দরবনে বাঘের অস্তিত্ব টিকেট থাকলে সুন্দরবনের অস্তিত্ব রক্ষা পাবে। যেদিন বাঘ থাকবেনা সেদিন সুন্দরবনের অস্তিত্ব বিপদসংকুল হয়ে যাবে। বাঘের কারনে সুন্দরবন সারা পৃথিবীতে পরিচিত। বাঘের সাথে দেশের নাম যুক্ত হয়ে বায়োলজিকাল নাম হয়েছে বেঙ্গল টাইগার। রয়েল বেঙ্গল টাইগার সুন্দরবনের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। বাঘ সুন্দরবনকে রক্ষা করে আর সুন্দরবন উপকূল ও বাংলাদেশকে রক্ষা করে। সুন্দরবনকে ধ্বংস করতে পারে এমন কোন কাজের অনুমতি আমি দেইনা। ৫ নভেম্বর রবিবার দুপুরে সুন্দরবনের হারবাড়িয়াতে বন বিভাগের সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প আয়োজিত সুন্দরবনে বাঘ জরিপে ক্যামেরা ট্রাপিং এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এমপি একথা বলেন।

রবিবার দুপুর দেড়টায় পূর্ব সুন্দরবনের বাঘ জরিপ ক্যামেরা ট্রাপিং এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনা অঞ্চলের বনসংরক্ষক মিহির কুমার দো। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ খুলনার বিভাগীয় বনকর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল, বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের প্রকল্প কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন, পূর্ব সুন্দরবন বাগেরহাটের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা কাজী মো: নুরুল করিম, বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের কনসালটেন্ট ড. সুপ্রিয় চাকমা, জুনিয়র কনসালটেন্ট পিএইচডি গবেষক হাসান আরিফ রহমান, মৎস্য বিশেষজ্ঞ মো: মফিজুর রহমান চৌধুরী, চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারি বনসংরক্ষক রানা দেব, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মো: নূর আলম শেখ, মোংলা প্রেসক্লাব সভাপতি মনিরুল হায়দার ইকবাল প্রমূখ। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এমপি আরো বলেন করোনাকালে বাঘ নিরিবিলি থাকতে পেরেছিলো; তখন সুন্দরবনে অনেক বাঘ দেখা যেতো। এখন পর্যটক বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঘ দেখা যায়না। বাঘ থেকে আমাদের দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা নিরূপণ করা হচ্ছে প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে ক্যামেরা ট্রাপিং করে বাঘ জরিপ চলছে। যে তথ্য উপাত্ত পাবো তা বিশ্লেষণ করে আগামী ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবসে প্রকাশ করা হবে। শব্দ দূষণ পানি দূষণ সুন্দরবনে বাঘের অস্তিত্ব রক্ষায় এখন প্রধান থ্রেট। দূষিত পানি সুন্দরবনে প্রবেশ করছে এটি বাঘের জন্য বড় থ্রেট। স্মার্ট পেট্রোলিংয়ের মাধ্যমে বাঘ হত্যা হরিণ হত্যা বন্ধ করা হয়েছে। এখনো কিছু কিছু জায়গায় হরিণ শিকার হচ্ছে। হরিণ শিকার পুরোপুরি বন্ধ করতে পারলে সুন্দরবন সংরক্ষণ সম্ভব হবে। ক্যামেরা ট্রাপিং এর মাধ্যমে বাঘ জরিপ বিষয়ে সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের কনসালটেন্ট ড. সুপ্রিয় চাকমা বলেন এ পর্যন্ত যত সায়েন্টিফিক মেথড আছে তার মধ্যে বেস্ট মেথড হচ্ছে স্টিল ক্যামেরা ট্রাপিং মেথড।সুন্দরবনের বাঘ অন্য দেশের তুলনায় জেলে ও মানুষ মারার রেকর্ড বেশি। সুন্দরবনে রাস্তা নেই। আমাদের খুঁজে বের করতে হয় বাঘ কোথায় বেশি আছে। তাই সুন্দরবনে বাঘ জরিপে পরিশ্রম বেশি, ঝুঁকি বেশি। ঝুঁকিটা বড় মনে করছিনা। সবাই একসাথে যাই। টিম বেশ শক্তিশালী। আশাকরি দূর্ঘটনা ঘটবেনা। জুনিয়র কনসালটেন্ট পিএইচডি গবেষক হাসান আরিফ রহমান বলেন বিশ্বে ১৩টি দেশে বাঘের অস্তিত্ব ছিলো। এখন ৩টি দেশে বাঘের অস্তিত্ব নেই। এই ৩টি দেশ হলো ভিয়েতনাম, লাও এবং কম্বোডিয়া। এসব দেশে বিপুল পরিমাণে বন আছে কিন্তু বাঘ নেই। ওইসব দেশে চোরা শিকারিরা বাঘ হত্যা করেছে। চায়নিজ ট্রাডিশনাল মেডিসিনে এই বাঘ গুলো কাজে লেগেছে। বাঘ রক্ষায় সচেতনতা বেড়েছে এখন। পৃথিবীতে বাঘের সংখ্যা ৩ হাজারে নেমে এসেছিলো; সেখানে এখন বাঘের সংখ্যা বেড়ে ৫ হাজার হয়েছে। বনভূমির আয়তনের তুলনায় সুন্দরবনের বাঘের পরিমান ভালো। বনজীবি, মানুষ বাঘ ভালোবাসলে বাঘ রক্ষা পাবে। উল্লেখ্য ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি পশ্চিম বন বিভাগের উদ্যোগে বাঘ শুমারির কাজ শুরু হয়েছে। ৫ নভেম্বর রবিবার সুন্দরবনের পূর্ব বন বিভাগে বাঘ জরিপে ক্যামেরা ট্রাপিং এর উদ্বোধন করলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এমপি। সরকারের রাজস্ব খাত থেকে বরাদ্দকৃত এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা।