Home জাতীয় বাইকের বেপরোয়া গতি, অনিরাপদ জাবি সড়ক

বাইকের বেপরোয়া গতি, অনিরাপদ জাবি সড়ক

386

তানভীর রিফাত, জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বেপরোয়া গতিতে চলছে বাইক এবং ব্যক্তিগত গাড়ি। ফলে রাস্তাঘাটে রীতিমতো আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ে বাইক এবং ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে চালকেরা কোনো ধরনের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করেন না। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পর্যাপ্ত তদারকি নেই বলেও উল্লেখ করেন তারা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন থেকে বিশমাইল পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় আড়াই কি.মি. রাস্তা অত্যাধিক ঝুকিপূর্ণ।
যেখানে স্পিড ব্রেকার আছে মাত্র ৮টি। দীর্ঘ এই রাস্তার জন্য যা একেবারেই যথেষ্ট নয়। রাস্তাটির চৌরঙ্গী এবং ট্রান্সপোর্ট
সংলগ্ন এলাকা সবেচেয়ে বেশি ঝুকিপূর্ণ। যেখানে বেশ কয়েকটি হলের সংযোগ সড়ক থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে
পথচারী এবং সাইকেল আরোহী শিক্ষার্থীরা।

গতকাল (৪ এপ্রিল) রাত ৯টায় দুর্ঘটনার শিকার সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সিলভী বলেন, আমরা ট্রান্সপোর্ট অফিস সংলগ্ন সড়কের একেবারে পাশ দিয়ে ধীরগতিতে সাইকেল চালাচ্ছিলাম। এমন সময় বিপরীত দিক দিয়ে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে একটি বাইক এসে আমাদের আঘাত করে। সাইকেলে থাকা আমি আর আমার বান্ধবী রাস্তায় পড়ে যাই। বাইক চালক আমাদের কোনোরকম সাহায্য না করেই দ্রুত পালিয়ে যায়।”

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী বিথী বলেন, “পরশুদিন (৩ এপ্রিল) ইফতারির পর নতুন রেজিস্ট্রার সংলগ্ন রাস্তায় আমার পাশ দিয়ে দ্রুতগতিতে একটি বাইক টেনে বেরিয়ে যায়। আমি কোনোরকমে পাশ কাটিয়ে বড় ধরনের এক্সিডেন্ট থেকে বেঁচে যাই।”

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আরও বলেন, “হেডলাইটের সঠিক ব্যবহারের ব্যাপারেও অনেকে জানেন না। দূর থেকে চোখে লাইট পড়ার কারনে ক্যাম্পাসে সাইকেল চালানো এমনকি হাটাও কষ্টকর হয়ে পড়ে।”

এ ব্যাপারে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি রাকিবুল রনি বলেন, “চৌরঙ্গী থেকে নতুন রেজিস্ট্রার পর্যন্ত রাস্তা সবেচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে কমপক্ষে দুটি স্পিড ব্রেকার ছাড়া কোনোভাবেই গতি রোধ করা সম্ভব না। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বাইককে ফটো লাইসেন্সের আওতায় আনা যেতে পারে। অধিক গতিতে বাইক চালকদের শাস্তি কিংবা জরিমানার আওতায় আনতে হবে। এ ব্যাপারে সকলের সচেতনতা এবং প্রশাসনকে আরও উদ্যোগী হতে হবে।”

ছাত্রলীগের জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, “ঝুকিপূর্ণ রাস্তাসমূহে অতিরিক্ত স্পিড ব্রেকার নির্মাণ করতে হবে। আমরা আহ্বান জানাই যেন সকলে ধীরগতিতে বাইক চালায়। পাশাপাশি বহিরাগতদের ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যাপারে প্রশাসনের নজরদারি কাম্য। সর্বোপরি সকলের সচেতনতাই পারে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা রোধ করতে।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ.স.ম. ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, “দুর্ঘটনার বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। তারপরও আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবো এবং ঝুকিপূর্ন এলাকায় স্পিড ব্রেকার নির্মানের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিত করবো। তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দরকার শিক্ষার্থীদের সচেতনতা।”

তবে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (এস্টেট) মো. আ. রহমানের মন্তব্য জানতে মুঠোফোনে কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।