Home সাহিত্য ও বিনোদন বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী ঋত্বিক ঘটক

বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী ঋত্বিক ঘটক

41

সৈয়দ আমিরুজ্জামান:

বাংলা চলচ্চিত্রে যে কয়েকজন নক্ষত্রের আলোতে আলোকিত, ঋত্বিক ঘটক তাঁদের মধ্যে অন্যতম। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন চলচ্চিত্র প্রেমীদের কাছে তাঁর পরিচালিত ছবিগুলো একেকটি ইতিহাস হয়ে আছে। তিনি ছিলেন যুগ সচেতন চলচ্চিত্রকার। এ ছাড়াও তিনি গল্পকার, নাট্যকার ও অভিনেতাসহ দৃশ্যশিল্পের প্রায় সব রূপেই ছিলেন এক কিংবদন্তী। আজ তাঁর ৯৭তম জন্মবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা।

এই কিংবদন্তী চলচ্চিত্রকারের জন্ম ১৯২৫ সালের ৪ নভেম্বর ঢাকার ঋষিকেশ দাশ লেনে ঘটক বংশে।তিনি ইন্দুবালা দেবী ও সুরেশ চন্দ্র ঘটক দম্পতির ১১তম এবং কনিষ্ঠতম সন্তান। ঋত্বিক ঘটকের বংশের আদি পুরুষ পণ্ডিত কবি ভট্টনারায়ণ। তারই বারেন্দ্রশ্রেণির শাণ্ডিল্য গোত্রের জমিদার বংশে নীলরক্ত ধারণ করেই জন্মেছিলেন ঋত্বিক। কিন্তু তাঁর মাঝে জমিদারী বংশের কোন লেশমাত্র পাওয়া যায় না। মানুষকে তিনি দেখেছেন, মানুষের সংগ্রাম নিয়ে তিনি ভেবেছেন, নিপীড়িত মানুষের দুঃখে তিনি সংগ্রাম করেছেন, আর তাইতো মাত্র অষ্টম শ্রেণির ছাত্র অবস্থাতেই শ্রমিক আন্দোলনের সঙ্গে তিনি জড়িয়ে পড়েন।

তার বাবা সুরেশ চন্দ্র ঘটক ছিলেন ডিসট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট,তার বদলীর চাকুরীর কারণে তারা ঘুরেছেন দেশের নানা প্রান্তে। তাঁর বাবা অবসরের পর রাজশাহীতে গিয়ে বাড়ি করেন। উল্লেখ্য যে তাদের রাজশাহীর বাড়িটাকে এখন হোমিওপ্যাথিক কলেজ করা হয়েছে এবং তার নাম ঋত্বিক ঘটক হোমিওপ্যাথিক কলেজ। ঋত্বিক ঘটকের শৈশবের একটা বড় সময় কেটেছে রাজশাহী শহরে। তিনি রাজশাহীর কলেজিয়েট স্কুল থেকে মেট্রিক পাশ করেন। পরে তিনি বহরমপুরে বড় ভাই মনিশ ঘটকের কাছে চলে যান। সেখানে কৃষ্ণ নারায়ন কলেজে পড়াশুনা করেন। ১৯৪৭ দেশভাগের সময় ঋত্বিক ঘটক ও তাঁর পরিবার কলকাতায় পাড়ি জমান। তিনি রাজশাহী কলেজে পড়া অবস্থায় নাটক শুরু করেন। ঋত্বিক ঘটক তাঁর প্রথম নাটক কালো সায়র লেখেন ১৯৪৮ সালে। একই বছর তিনি নবান্ন নামক পুনর্জাগরণমূলক নাটকে অংশগ্রহণ করেন। এরই মাঝে তিনি নাটকের প্রতি এতই আকৃষ্ট হয়ে পড়েন যে ১৯৪৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে ভর্তি হয়েও এই নাটকের নেশাতেই পড়া-লেখা ছেড়ে দেন।

১৯৫১ সালে তিনি ভারতীয় গণনাট্য সঙ্ঘে (IPTA) যোগদান করেন। এসময় তিনি অনেক নাটক লিখেছেন, অভিনয় করেন ও নির্দেশনা দেন। এসকল নাটকের মাঝে উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হলো জ্বালা, অফিসার, দলিল, সাঁকো, সেই মেয়ে ইত্যাদি। এসময় তাঁর বেশকিছু লেখা গল্প ও নাটক সে সময়ের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটির আন্দোলনর ফসল হিসেবে ১৯৫০ সালের শুরুতে কলকাতায় শুরু হয় বিশ্বের ধ্রুপদ এবং অন্যান্য ভালো ছবি দেখানো। এসময় তিনি ছবি নিয়ে প্রচুর পড়াশোনা করলেন এবং বুঝতে পারলেন জনমানুষের বড় অংশের কাছে নিজের বক্তব্য তুলে ধরার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার চলচ্চিত্র। এই বোধ থেকে উদ্বুদ্ধ হয়েই নিমাই ঘোষের ছিন্নমূল চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সেলুলয়েড দুনিয়াতে প্রবেশ ঘটে ঋত্বিক ঘটকের। এই ছবিতে তিনি একই সাথে অভিনয় করেন এবং সহকারী পরিচালক হিসাবে কাজ করেন।

ঋত্বিকের প্রথম সৃষ্টি ‘নাগরিক’। ১৯৫২ সালে তার একক পরিচালনায় তৈরি হয় নাগরিক চলচ্চিত্রটি। কিন্তু সব থেকে দুঃখের বিষয় হচ্ছে ছবিটি তাঁর জীবদ্দশায় মুক্তি পায়নি। নাগরিক” চলচ্চিত্রটি মধ্যবিত্ত সমাজের জীবন জটিলতা, নগর যন্ত্রণা, উদ্বাস্তু জীবন, যুব প্রজন্মের বেকারত্ব, হতাশা-বিচ্ছিন্নতা বোধ, শ্রেণি বিভাজনের অসুখ-বিসুখ, রাষ্ট্রের হাতে মানুষের পুতুল হয়ে পড়ার আবহই মূল উপজীব্য। এই সিনেমার মূল কেন্দ্রীয় চরিত্র ”রামু”। পরের বছরেই অর্থাৎ ১৯৫৩ সালে ঋত্বিক ঘটকের ‘দলিল’ নাটকটি গণনাট্য সংঘের সর্বভারতীয় বোম্বে সম্মেলনে প্রথম পুরস্কার জিতে নেয়।
এরপর ১৯৫৭ সালে নির্মিত হয় ঋত্বিকের প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘অযান্ত্রিক’। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সফল চলচ্চিত্রকাররূপে খ্যাতিলাভ করেন তিনি।

এরপর ঋত্বিক শরণার্থীদের নিয়ে তার ‘ট্রিলজি’ নির্মাণ করেন ‘মেঘে ঢাকা তারা’ (১৯৬০) ‘কোমল গান্ধার’ (১৯৬১) ও ‘সুবর্ণরেখা’ (১৯৬২)। শক্তিপদ রাজগুরুর কাহিনী অবলম্বনে ‘মেঘে ঢাকা তারা’ যেন অসীম অন্ধকারে আলোর পথ এবং বাঁচতে চাওয়ার ছবি। ‘কোমল গান্ধার’ ছবিতেও উঠে এসেছে সেই একই সুর-জীবনের জয়গান। দেশভাগ-উদ্বাস্তু-ছেলেমেয়েদের নিয়ে নির্মিত নাটকের দলেও ভাগাভাগি। একদল ক্লাসিক নাটকের পক্ষে, অন্যদল চায় বাস্তবের মঞ্চ-রূপ। ছবিটিতে ব্যবহৃত হয়েছে দ্রুতগতি, উচ্চ শব্দের চিৎকার, বাফার। এগুলো সেই সময়কার দর্শকদের এক নতুন চিত্র ব্যাকরণের সঙ্গে ভালোভাবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। ‘সুবর্ণরেখা’র বিষয়বস্তুও ছিল উদ্বাস্তু জীবনের গল্প।

১৯৬৫ সালে সুবর্ণরেখা মুক্তি পাবার পর আট বছরের বিরতি নেন ঋত্বিক। এরপর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে এসে নির্মাণ করেন তাঁর বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। এটি ভারত বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হয়। অদ্বৈত মল্লবর্মণের ধ্রুপদ উপন্যাস থেকে নেওয়া এ ছবিটি পেয়েছিল ব্যাপক প্রশংসা। এ ছবিতে অসাধারণ অভিনয় করেন বাংলাদেশের শক্তিমান অভিনেতা প্রবীর মিত্র। প্রবীর মিত্র ঋত্বিক ঘটক সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করে বলেন -‘এই মাকড়া, এই ছোঁড়া এদিকে আয়—এই সব বলেই তিনি(ঋত্বিক) আমাকে ডাকতেন। কখনোই আমার নাম ধরে ডাকতেন না। বলতেন, এডিটিংয়ের সময় তুই আসিস। তোর সঙ্গে আমার কথা আছে। আমি গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি। তিনি কিছুই বলেন না। কাজের ভেতরেই ডুবে থাকেন। মুখ তুলেন না। ঋত্বিক-দা চলে গেলেন। তাঁর না-বলা কথাটা আমার আর শোনা হয়নি।’

এর মাঝে ১৯৬৬/৬৭-র দিকে কিছুদিন তিনি পুনে ফিল্ম ইন্সটিটিউশনের অধ্যক্ষ ছিলেন। মুম্বাই-এর হিন্দি ছবিতে চিত্রনাট্য রচনার কাজও তিনি করেছেন।

এরপর ১৯৭৪ সালে মুক্তি পায় ঋত্বিকের শেষ ছবি ‘যুক্তিতক্ক আর গপ্পো’। কাহিনীর ছলে তিনি নিজের কথা বলে গেছেন এ ছবিতে। ছবিটিতে নিজের রাজনৈতিক মতবাদকেও দ্বিধাহীনভাবে প্রকাশ করেছেন।
এরপর অনেক দিন তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন মানসিক হাসপাতালে। এরপর ১৯৭৬-এর ৬ই ফেব্রুয়ারি মাত্র ৫০ বছর বয়সে চলচ্চিত্রের এই মহামানব পশ্চিম বঙ্গের কলকাতায় পরলোকগমন করেন। ইহজগৎ থেকে তিনি ছুটি নিলেও, তাঁর সৃষ্টি ছবিগুলো আজও চলচ্চিত্র জগতের সম্পদ।

ঋত্বিক জন্ম নিয়েছেন ও বেড়ে উঠেছিলেন এক বিড়ম্বিত সময়ে। একদিকে দেশভাগ-সাম্প্রদায়িকতা-যুদ্ধ-মন্বন্তর,পদ্মা-গঙ্গার জল লাল হলো মানুষের রক্তে;অন্যদিকে দিগবিজয়ী রবীন্দ্রনাথ-কল্লোলগোষ্ঠী-জাতীয় আন্দোলন-বারো মাসে তেরো পার্বণের বাংলা। এসব ঘটনার আল ধরে, খাঁড়ি ধরে এগিয়ে যেতে যেতে বেড়ে উঠতে উঠতে একই সঙ্গে বেদনা আর সম্ভাবনাকে সঙ্গী করে দাঁড়িয়ে থাকা ঋত্বিক হাতিয়ার বানিয়েছেন লড়াইয়ের। মেঘে ঢাকা তারা, কোমল গান্ধার, সুবর্ণরেখা, যুক্তি তক্কো গপ্পো তাঁর একেকটি বিষবাণ।
চলচ্চিত্র সম্পর্কে ঋত্বিক ঘটক বলতেন-

”আমি প্রতি মুহূর্তে আপনাকে ধাক্কা দিয়ে বোঝাব যে, ইট ইজ নট এন ইমেজিনারি স্টোরি বা আমি আপনাকে সস্তা আনন্দ দিতে আসিনি। প্রতি মুহূর্তে আপনাকে হাতুড়ি মেরে বোঝাব যে যা দেখছেন তা একটা কল্পিত ঘটনা, কিন্তু এর মধ্যে যেটা বোঝাতে চাইছি আমার সেই থিসিসটা বুঝুন, সেটা সম্পূর্ণ সত্যি, সেটার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্যই আমি আপনাকে এলিয়েন্ট করব প্রতি মুহূর্তে। যদি আপনি সচেতন হয়ে উঠেন, ছবি দেখে বাইরের সেই সামাজিক বাধা দুর্নীতি বদলের কাজে লিপ্ত হয়ে উঠেন, আমার প্রোটেস্টাকে যদি আপনার মধ্যে চাপিয়ে দিতে পারি তবেই শিল্পী হিসেবে আমার সার্থকতা।”

আসলেই তিনি শিল্পী হিসেবে সার্থক। তাঁর মহত্য শুধু চলচ্চিত্রেই সীমাবদ্ধ থাকে নি। মানবতার প্রতি তাঁর অসীম ভালোবাসা ছিল। তিনি সবসময় স্বপ্ন দেখতেন ও দেখাতেন এমন এক সমাজ ব্যবস্থার যেখানে শোষক ও শোষিত সম্পর্ক থাকবে না, শ্রেণি বিভাজন থাকবে না। সাম্প্রদায়িকতা, কাড়াকাড়ি, সাংস্কৃতিহীনতা থাকবে না। মানবতার টানে তাইতো ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তাকে কলকাতার রাস্তায় রাস্তায় বাংলাদেশি শরণার্থীদের জন্য ত্রাণকার্যে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়।
ঋত্বিক তার মনের কথাকে কখনোই তথাকথিত সভ্য মানুষের মুখোশ আঁটা বুলির মতো করে বলতে পারেননি। যা বলতে চেয়েছেন কোনো রকম ভীতি কিংবা ভদ্রতার তোয়াক্কা না করেই, বলেছেন সরাসরি। তিনি একবার বলেছিলেন-

‘ছবি লোকে দেখে। ছবি দেখানোর সুযোগ যতদিন খোলা থাকবে, ততদিন মানুষকে দেখাতে আর নিজের পেটের ভাতের জন্য ছবি করে যাবো। কালকে বা দশ বছর পরে যদি সিনেমার চেয়ে ভালো কোনও মিডিয়াম বেরোয় আর দশবছর পর যদি আমি বেঁচে থাকি, তাহলে সিনেমাকে লাথি মেরে আমি সেখানে চলে যাবো। সিনেমার প্রেমে নেশায় আমি পড়িনি। আই ডু নট লাভ ফিল্ম।

তাঁর সমালোচকরা বলে থাকেন ঋত্বিক সিনেমার নেশায় কি পড়বে? বাংলা মদ আর বিড়ির ধোঁয়ার নেশায়ই তো বুঁদ হয়ে আছে। সমালোচকরা সব যুগেই থাকে এবং তারা সমালোচনাও করবে এটাই স্বাভাবিক। মাদার তেরেসার মত মানুষের সমালোচকও পাওয়া যায়।

তাঁর শুধু সমালোচকই ছিলো না অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী ও গুণমুগ্ধ মানুষও ছিল। বাংলার অপর কিংবদন্তী পরিচালক সত্যজিৎ রায়ও বলেছেন, ঋত্বিকের ভিতর সত্যিকারের শিল্পীর যন্ত্রণা ছিলো এবং তিনি আসলেই অনেক বড় মানের নির্মাতা।

তবে এটাও ঠিক যে ঋত্বিক যে মানের নির্মাতা ছিলেন, তাঁর যোগ্য সন্মান সে সময় তিনি পাননি। তাই তো তাঁর সময়ের অনেক অখ্যাত নির্মাতাও তাঁর থেকে বেশি পদক পেয়েছে। কিন্তু ঋত্বিকরা যুগে যুগে একবারই জন্মায় এবং তাঁরা পদক পাবার জন্য কাজ করে না। তাঁরা নিজের মনের তাগিদে, সমাজের তাগিদে কাজ করে যায়। এবং কাজের মাধ্যমেই তাঁরা নিজেদের প্রমাণ করে যায়। আর তাই তো আজ চলচ্চিত্র জগৎ-এর প্রতিটি মানুষের কাছে তাঁর ছবি শিক্ষার এক অবিচ্ছেদ্য মাধ্যম হয়ে থেকে গিয়েছে।

ঋত্বিক ঘটক নির্মিত চলচ্চিত্র

• নাগরিক (১৯৫২) (মুক্তিঃ ১৯৭৭, ২০শে সেপ্টেম্বর),
• অযান্ত্রিক (১৯৫৭), • বাড়ি থেকে পালিয়ে (১৯৫৮),
• মেঘে ঢাকা তারা (১৯৬০),• কোমল গান্ধার (১৯৬১),
• সুবর্ণরেখা (১৯৬১),• তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৭৩),• যুক্তি তক্কো গপ্পো (১৯৭৪)।

ঋত্বিকের চিত্রনাট্যঃ
• মুসাফির (১৯৫৭),• মধুমতী (১৯৫৮),• স্বরলিপি (১৯৬০),• কুমারী মন (১৯৬২),• দ্বিপের নাম টিয়া রঙ (১৯৬৩),• রাজকন্যা (১৯৬৫)।

অভিনেতা হিসেবে কাজ করা চলচ্চিত্র সমূহঃ
• তথাপি (১৯৫০),• ছিন্নমূল (১৯৫১),• কুমারী মন (১৯৬২),• সুবর্ন-রেখা (১৯৬২),• তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৭৩),• যুক্তি,তক্কো,আর গপ্পো (১৯৭৪)।

ডকুমেন্টারীঃ
• আদিবাসীওন কা জীবন স্রোত (১৯৫৫) (হিন্দি),• বিহার কে দর্শনীয়া স্থান (১৯৫৫) (হিন্দি),• সায়েন্টিস অফ টুমরো (১৯৬৭),• ইয়ে কৌন (১৯৭০) (হিন্দি),• আমার লেলিন (১৯৭০),• পুরুলিয়ার ছাউ (১৯৭০)।

শর্ট ফিল্মঃ
• ফিয়ার (১৯৬৫) (হিন্দি),• রেন্ডিজভোয়াস (১৯৬৫) (হিন্দি),• সিভিল ডিফেন্স (১৯৬৫),• দুর্বার গতি পদ্মা (১৯৭১)।

ঋত্বিকের অসমাপ্ত কাজঃ
ফিচারঃ
• অরূপকথা/বেদেনী (১৯৫০-৫৩),• কত অজানারে (১৯৫৯),• বগলার বাংলাদর্শন (১৯৬৪),• রঙের গোলাম (১৯৬৮)।

ডকুমেন্টারীঃ
• উস্তাদ আলাউদ্দিন খান (১৯৬৩),• ইন্দিরা গান্ধী (১৯৭২),• রামকিঙ্করঃ এ পারসোনালিটি স্টাডী (১৯৭৫)।

মঞ্চ নাটকঃ
• চন্দ্রগুপ্ত (অভিনেতা),• অচলায়তন (নির্দেশক ও অভিনেতা),• কালো সায়র (নির্দেশক ও অভিনেতা),• কলঙ্ক (অভিনেতা),• দলিল (নির্দেশক ও অভিনেতা),• কত ধানে কত চাল (নির্দেশক ও অভিনেতা),• অফিসার (অভিনেতা),• ইস্পাত (মঞ্চে প্রদর্শিত হয়নি),• গ্যালিলিও চরিত,• জাগরণ (অভিনেতা),• জলন্ত (রচনা),• জ্বালা (রচনা),• ডাকঘর (নির্দেশনা),• ঢেউ (নির্দেশনা),• ডেকি সর্গে গেলেও ধান বানে(রচনা),• নবান্ন (নির্দেশনা),• নিলদর্পন (অভিনেতা),• নিচের মহল (মঞ্চে প্রদর্শিত হয়নি),• পরিত্রাণ (অভিনয়),• ফাল্গুনি (অভিনয়),• বিদ্যাসাগর (নির্দেশনা),• বিসর্জন (নির্দেশনা),• ম্যাকবেথ (অভিনেতা),• রাজা (নির্দেশনা)
• সাঁকো (অভিনেতা),• সেই মেয়ে (নির্দেশনা),• হযবরল (নির্দেশনা)।

পুরস্কার ও সম্মাননা

১৯৭০: ভারত সরকার তাকে শিল্পকলায় পদ্মশ্রী উপাধিতে ভূষিত করেন।
১৯৫৭: মুসাফির চলচ্চিত্রের জন্য ভারতের ৫ম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তৃতীয় শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য মেধার ছাড়পত্র লাভ করেন।
১৯৫৯: মধুমতী চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার বিভাগে ৬ষ্ঠ ফিল্মফেয়ার পুরস্কার-এ মনোনয়ন লাভ করেন।
১৯৭০: হীরের প্রজাপতি চলচ্চিত্রের জন্য ১৬তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ শিশুতোষ চলচ্চিত্র পুরস্কার (প্রধানমন্ত্রীর স্বর্ণপদক) লাভ করেন।
১৯৭৪: যুক্তি তক্কো আর গপ্পো চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার বিভাগে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৭৪: তিতাস একটি নদীর নাম চলচ্চিত্রের জন্য সেরা পরিচালক বিভাগে বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন।

-লেখক: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট।