Home রাজনীতি বাংলাদেশ এখন ধনীদের রাষ্ট্র, গরীবের নয়–মেনন

বাংলাদেশ এখন ধনীদের রাষ্ট্র, গরীবের নয়–মেনন

34

সৈয়দ আমিরুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধি : “দেশের ক্রমবর্ধমান উন্নয়নের পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান বৈষম্যের কথা রাষ্ট্রপতির ভাষণের ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় আমি প্রতিবারই বলেছি। কিন্তু মাননীয় স্পীকার বৈষম্য নিয়ে সারা পৃথিবীতে কথা হচ্ছে, অথচ দেশে বৈষম্য নিরসনের কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। বঙ্গবন্ধু যে সাম্য ও সমতার অর্থনৈতিক নীতির কথা বার বার বলতেন ও সকল সীমাবদ্ধতার পরও অনুসরণ করতেন স্বাধীনতার এই পঞ্চাশ বছরে আমরা তার যোজন যোজন দূরে পিছিয়ে গেছি। বাংলাদেশ এখন ধনীদের রাষ্ট্র, গরীবের নয়। খালি চোখেই দেখা যায় এই ধনীকদের এক ক্ষুদ্র অংশ উন্নয়নের সবকিছুতেই ভাগ বাসাচ্ছে।”

আজ বুধবার (২৬ জানুয়ারি ) দুপুর ১২.৪৫ মিনিটে জাতীয় সংসদে একাদশ জাতীয় সংসদের ১৬তম অধিবেশনে মহামান্য রাষ্ট্রপতির ভাষণ সম্পর্কে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের উপর আলোচনায় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি সভাপতি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ঢাকা -০৮ আসনের মাননীয় সংসদ জননেতা কমরেড রাশেদ খান মেনন এসব কথা বলেন।
সংসদে কথা বলার সুযোগ দেওয়ার জন্য মাননীয় স্পীকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাশেদ খান মেনন এমপি বলেন, ধন্যবাদ মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে তার বক্তৃতায় সরকারের উন্নয়নের বিশদ বিবরণ প্রদান করার জন্য। সংসদীয় রীতি অনুসারে রাষ্ট্রপতি সংসদে দেয়া ভাষণে মন্ত্রীপরিষদ অনুমোদিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ কারণে এই উন্নয়ন, প্রশাসন পরিচালনা, জিনিষ পত্রের দাম বাড়িয়ে দিতে ব্যবসায়ীদের একতা, আর ভুক্তভোগী জনগণের অনৈক্যসহ রাষ্ট্র ও জনগণ সম্পৃক্ত বিষয়ে তার রসালো ভঙ্গিতে দেয়া কঠিন সত্যের উচ্চারণ থেকে আমরা বঞ্চিত থেকে গেলাম।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণার কথা উল্লেখ করে রাশেদ খান মেনন বলেন, মাননীয় রাষ্ট্রপতি এই বক্তৃতায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাইকে দৃঢ় হতে বলেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু টিআইবি প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায়, বাংলাদেশ কেবল দক্ষিণ এশিয়ায় আফগানিস্তানের ওপরে অবস্থান করছে। তিনি এই দফার প্রধানমন্ত্রীত্বের প্রথমটার্মে এই সংসদেই বলেছিলেন ফুয়েল না দিলে ফাইল নড়ে না। আর সেই দুর্নীতির ফুয়েলের দাম বেড়েই চলেছে। আর সাথে যুক্ত হয়েছে বিদেশে বিশাল পরিমাণ অর্থ পাচার। সবচাইতে দুভার্গ্যজনক যে অর্থমন্ত্রী এই সত্যকে স্বীকার না করে সংসদ সদস্যদের কাছ থেকে অর্থ পাচারকারীদের তালিকা চান। এর অর্থ হচ্ছে সংসদ সদস্যরা অসত্য কথা বলছেন।

তিনি বলেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতি করোনা মোকাবিলায় সরকারের সাফল্যের কথা বলেছেন। এটা অনস্বীকার্য্য যে করোনা মোকাবিলায় পাশের দেশ ভারত বা নেপাল থেকে আমরা সফল। কিন্তু টিকা প্রদানে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ কেবল আফগানিস্তানের উপরে। আর টিকা সংগ্রহ নিয়ে বেক্সিমকোকে একক আর্থিক সুবিধা দিতে গিয়ে অন্যখান থেকে টিকা আমদানী চরম বাধাগ্রস্থ হয়েছিল। বেক্সিমকোর নামে আমদানির টিকার হিসাবও আমরা পাই নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপে চীন আমাদের টিকা দিয়েছিল। এখনও দেশেই টিকা উৎপাদনের জন্য যে চুক্তি হয়েছিল তারও কোন ফলাফল আমরা দেখছি না।
মেনন বলেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে উপাচার্যদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। ফলে তাদের কুকর্মের দায় তার উপরও এসে পড়ে। কিন্তু এই উপাচার্যরা কি ধরণের স্বৈরশাসক, দুর্নীতিবাজ হয়ে ওঠেন, চাকরী বাণিজ্যে লিপ্ত হন তার উদাহরণ আমরা দেখেছি। বর্তমানে তারা সকলে মিলে শাহজালালের উপাচার্যের জন্য দল পাকিয়েছেন। এটা যেমন বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের জন্য বিব্রতকর, তেমনি সরকারের জন্যও বিব্রতকর। এ কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সাবেক সভাপতি হিসাবে আমি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়সহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের নিয়ে সার্চ কমিটির বিধানের কথা বলেছিলাম। এতে হয়ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্ত্বশাসন ক্ষুন্ন হবে বলে কথা উঠবে। কিন্তু শেষ বিচারে তারা ঐ স্বায়ত্বশাসনকে বাদ দিয়ে সরকারের মুখাপেক্ষী হন না কেবল, তদ্বিরেও সকল সীমা ছাড়িয়ে যান। মাননীয় স্পীকার, অবশেষে আজ সকালে শাহজালাল বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রীর অনুরোধে অনশনরত ছাত্ররা তাদের অনশন ভঙ্গ করে। এইজন্য আমি তাদেরকে অভিনন্দন জানাই এবং তাদের দাবি মেনে নেয়ার আহবান জানাচ্ছি।

কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়নের সুফল যাতে কৃষকেরা পায়, তা উল্লেখ করে মেনন বলেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতির কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়নের অভূতপূর্ব সাফল্যের কথা বলেছেন। বলেছেন গার্মেন্টস শিল্পের প্রবৃদ্ধির কথা। রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কথা। আমি এবার এসব নিয়ে বিশেষ কিছু বলব না। কেবল বলব কৃষকের ফসলের ন্যায্য মূল্য পাবার প্রতিষ্ঠানিক কাঠামোর কথা যেটা ভারতে ছিল এবং তা বাতিল করার বিরুদ্ধে তিন কৃষি আইন নিয়ে ভারতের কৃষকরা অভূতপূর্ব আন্দোলন করছে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়কারী গার্মেন্টস শ্রমিকদের প্রায়শয়ঃই আমরা তাদের মজুরী ও কাজের পরিবেশ নিয়ে রাস্তার আন্দোলনে দেখি। রেমিট্যান্স আয়কারী প্রবাসী শ্রমিকের সাথে অসদাচারণের কথা নাই বললাম। আর নারী শ্রমিকরা সৌদী আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যৌন নির্যাতনসহ তারা যে নির্যাতন ও মৃত্যুর সম্মুখিন তার বিষয়ে সরকার ও সমাজ কার্যত উদাসীন।

বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ডকে কোন যুক্তিতেই সমর্থন করা যায়না উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানবাধিকার লংঘনের দায়ে র‌্যাবের সাতজন প্রাক্তন ও বর্তমান কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবস্থা গ্রহণ ও বাইডেনের গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ না জানানো নিয়ে বিএনপিসহ তাদের সমমনা দলগুলো বেশ উল্লসিত। এ ব্যাপারে সরকারের মূল্যায়নটি রাষ্ট্রপতির ভাষণে থাকলে ভাল হত। কারণ এই বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও মন্ত্রীদের বক্তব্যে মনে হয় আমরা যেন অপরাধী। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করে সব ঠিকঠাক করে নেয়া হবে। সামনের গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে ডাকা হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। যে মার্কিন মুল্লুক নিজের দেশের অভ্যন্তরে প্রতিদিন মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে, যারা একাত্তরে বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে ইতিহাসের ঘৃণ্যতম মানবাধিকার লংঘনের ঘটনায় পাকিস্তানীদের পক্ষে দাড়িয়েছিল তাদের অস্ত্র অর্থ দিয়ে সহায়তায় করেছিল আর এই সাম্প্রতিক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনকেরী মানবাধিকার লংঘনকারী যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসি আটকাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেছিল তাদের বাংলাদেশের মানবাধিকার লংঘনের ঘটনার কথা বলার অধিকার নাই। বাংলাদেশের মানুষ এই সমস্যা নিয়ে কথা বলতে, মিটিয়ে নিতে সক্ষম। এ কারণেই বিএনপি যখন র‌্যাব সৃষ্টি করেছিল তখন আমরাসহ আওয়ামী লীগ তার বিরোধীতা করেছিল। আবার সেই র‌্যাবই যখন বর্তমান সরকারের আমালে বিচার বহির্ভত হত্যাকান্ড, গুমের ঘটনা ঘটিয়েছে তখন জোট শরীক ওয়ার্কার্স পার্টিসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন তার প্রতিবাদ করেছে এখনও করছে। মেজর সিনহার হত্যাকান্ডের পর সেটা আপাতত: বন্ধ রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তাই ঐ বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ডকে কোন যুক্তিতেই সমর্থন নয়, তাকে বন্ধের ব্যবস্থা নিতে হবে।

মেনন বলেন, নির্বাচন নিয়ে যত কম কথা বলা যায় তত উত্তম। বিরোধী বিএনপি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সরব কেবল নয়, সরকার উৎখাতের শ্লোগান দিচ্ছে। কিন্তু এসব কথা বলার সময় তারা মাগুরা, মীরপুর, ফালুর নির্বাচন ও সর্বোপরি তত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচনকে তাদের পক্ষে নেয়ার জন্য বিচারপতি আজিজকে দিয়ে দেড় কোটি ভূয়া ভোটার তালিকা প্রণয়ন, তত্বাবধায়ক সরকারে নিজেদের লোক না বসাতে পেরে রাষ্ট্রপতি ইয়াজদ্দিনকে প্রধান উপদেষ্টা করে তত্বাবধায়ক সরকার গঠনে তাদের সে সকল অপকর্মের কথা ভুলে যায়। তাদের ঐ ষড়যন্ত্রের পরিণতিতেই এদেশকে আরেকটি সেনা শাসন দেখতে হয়েছিল।

তিনি আরো বলেন, তারা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি কার্যক্ষম স্বাধীন নির্বাচন কমিশন, মনোনয়ন বাণিজ্য, অর্থ-ধর্ম ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপমুক্ত নির্বাচনী ব্যবস্থার কথা বলে না। কারণ তারা এই ব্যবস্থাই বহাল রাখতে চায়। আমাদের বাম দাবীদার বন্ধুরা নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের কথা বললেও তাদের মূল দাবী এখন নির্বাচনকালীন সরকার। শিগ্রী তাদের মধ্যে কেউ কেউ সরাসরি আর কেউ বা যুগপৎ, সমন্বিত আন্দোলন ইত্যাদি নামে তাদের সাথে শরীক হবে। সেই আলামত স্পষ্ট।

রাশেদ খান মেনন বলেন, ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য, অর্থ, পেশিশক্তি বিশেষ করে প্রশাসনের সরাসরি হস্তক্ষেপ ও নির্বাচন কমিশনের নিশ্চেষ্ট ভূমিকা সমগ্র নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পর্কে জনমনে আস্থা সম্পূর্ণ বিনষ্ট করেছে। নারায়ণগঞ্জের ব্যতিক্রমের নির্বাচন নিয়ে মন্ত্রীদের সন্তোষ প্রকাশে লাভ নাই। দেশের মানুষ এ ব্যতিক্রমহীন ভাবে এ ধরণের জাতীয় নির্বাচনই দেখতে চায় সেটাই নিশ্চিত করতে হবে। এই সরকারকে বহাল রেখেই সেটা করা সম্ভব। প্রয়োজন সদিচ্ছা ও নির্বাচনী আইন, আচরণবিধ মানা ও অর্থ, পেশীশক্তি ও প্রশাসনের ভূমিকা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ।

মেনম বলেন, সরকার দেরিতে হলেও নির্বাচন কমিশন নিয়োগের আইন এনেছে এর জন্য অভিনন্দন। তবে আইনটি অসম্পূর্ণ এবং এ কারণে বিতর্ক অব্যাহত থাকবে।
এ বছর সংবিধানের পঞ্চাশ বছর পূতি হবে। বঙ্গবন্ধু সংক্ষিপ্ততম সময়ের মধ্যে যে সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন তা সংসদীয় ব্যবস্থার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তার আমলেই সংবিধাণের দ্বিতীয় ও চতুর্থ সংশোধনী সংবিধানের মৌল বিষয়েরই পরিবর্তন ঘটিয়েছিল। আর সামরিক শাসকরা নিজেদের ক্ষমতার স্বার্থে আর পাকিস্তান আমলের রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে ঐ সংবিধানকে ভোঁতা ছুরি দিয়ে জবাই করেছিল।

তিনি আরো বলেন, সংবিধানের দ্বাদশ ও পঞ্চদশ সংশোধনীতে সেই সংবিধানের মৌল চরিত্র কিছুটা ফিরিয়ে আনলেও এমনসব বিধি বর্তমান যা সরকার পরিচালনায় প্রধান নির্বাহীর একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে এবং সংবিধানকে ধর্মীয় রূপ দিয়েছে। বিএনপি দ্বাদশ সংশোধনীর সময় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য বিধান এবং সংসদীয় ব্যবস্থা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীসভার ‘নাম্বর ওয়ান এমাং দি ইকুয়াল’ এই ব্যবস্থায় ফিরে আসার জন্য দেশের তৎকালীন বিরোধীদলের উপনেতা, আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা আবদুস সামাদ আজাদের নেতৃত্বে আমাদের প্রস্তাবগুলো মানে নাই। সেই সময়ের বিএনপির মূল নেতাদের অন্যতম বর্তমানে এলডিপির সভাপতি কর্নেল অলি আহমদ সম্প্রতি এই জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন। তিন জোটের অঙ্গীকার অনুযায়ী সংসদীয় ব্যবস্থায় ফিরে আসতে বিএনপি-কে বাধ্য করতে বিচারপতি সাহাবুদ্দিনকে এমনকি পদত্যাগের হুমকি দিতে হয়েছিল। সংবিধানের ৭০ বিধি সংশোধন করে সংসদ সদস্যদের মত প্রকাশের অধিকার অক্ষুন্ন রাখতে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবও তার মানে নাই। যার ফলে সংসদ সদস্যরা স্বাধীন মত ব্যক্ত করতে পারেন না। অপরদিকে রাষ্ট্রধর্ম সম্পর্কে এরশাদের বিধির কিছু সংশোধন করে বহাল রাখায় ধর্মবাদীরা আহমদিয়াদের অমুসলিম ঘোষণা করার, ব্লাসফেমী আইন প্রণয়ন করার জন্য দাবি তুলছে। সংবিধানে আদিবাসীদেরও ‘আদিবাসী’ হিসাবে স্বীকার না করায় আদিবাসীরা নিজেদের ‘পরিচয়হীন’ মনে করছে। এসব কারণ ছাড়াও এই পঞ্চাশ বছরে পৃথিবীতে যে অগ্রগতি হয়েছে তাতে এসব বিষয় ছাড়াও সংসদে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব, দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, মানবাধিকার বিশেষ করে নারী ও শিশুদের অধিকার সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিত করতে সংবিধানের পর্যালোচনা বিশেষ প্রয়োজন হয়ে পরেছে। আমি এজন্য এই অধিবেশনেই সংবিধানের পর্যালোচনার জন্য সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সকল দলের সদস্যদের নিয়ে বিশেষ কমিটি গঠনের জন্য মাননীয় সংসদ নেত্রীকে অনুরোধ করছি।