ডেস্ক রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠান’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
‘‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠান’ বাংলাদেশের পারমাণবিক শক্তির ইতিহাসে এক যুগান্তকারী মাইলফলক। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহের মাধ্যমে প্রকল্পটি চূড়ান্ত পর্যায়ে পদার্পণ করেছে। বাংলাদেশ এখন অভিজাত নিউক্লিয়ার এনার্জি ক্লাবের সদস্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার। সে লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন প্রতিষ্ঠা করেন, যা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পথ প্রশস্ত করে।
দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করতে আওয়ামী লীগ সরকার একটি বিস্তৃত পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান তৈরি করেছে। জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে আমরা পারমাণবিক শক্তির মত বিকল্প জ্বালানি ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। সে লক্ষ্যেই আমরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছি, যা আমাদের জাতীয় গ্রিডে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। বন্ধুপ্রতীম রাশিয়ার সহযোগিতায় এখন পর্যন্ত উদ্ভাবিত সর্বাধুনিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের কাজ আজ সফলতার দ্বারপ্রান্তে। এক্ষেত্রে পারমাণবিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA)-এর গাইডলাইন যথাযথভাবে অনুসরণ করেছি।
পরিচ্ছন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে এবং কার্বন নিঃসরণ হ্রাসকরণে বাংলাদেশ সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। এ লক্ষ্য অর্জনে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। অধিকন্তু, সকলের জন্য দূষণমুক্ত ও নিরাপদ বিশ্ব বিনির্মাণে পরিচ্ছন্ন প্রযুক্তির ভূমিকা অনস্বীকার্য। অত্যাধুনিক এই মেগা প্রকল্পটি দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণের পাশাপাশি কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করবে ও জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাবে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জ্বালানি সরবরাহের মাধ্যমে আমাদের আরো একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন শেষ হলো। জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য গৌরবের এবং সম্মানের।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত ‘সোনার বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়তে চেয়েছিলেন। জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস। আমি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সার্বিক সাফল্য কামনা করি।
এই মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”