Home জাতীয় বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠিত হল ‘জয় বাংলা উৎসব’

বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠিত হল ‘জয় বাংলা উৎসব’

54

স্টাফ রিপোটার: স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের মূল উদ্দীপক স্লোগান ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা উপলক্ষে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হল ‘জয় বাংলা উৎসব’।

১৪ মার্চ রাজধানীর বনানীস্থ শেরাটন হোটেলের বলরুমে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে উৎসবের উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস এর সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদার। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্লোগান হিসেবে জয় বাংলা’র প্রস্তাবক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এমপি।

অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বক্তৃতায় বলেন, “জয় বাংলা আমাদের মুক্তি সংগ্রামের স্লোগান। জয় বাংলা মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান। জয় বাংলা আত্মত্যাগের স্লোগান। যে স্লোগানের মধ্য দিয়ে আমরা বিজয় অর্জন করেছি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন ছয় দফা দিলেন, তখনই তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন জয় বাংলাকে মাঠে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমরা তখন ছাত্রলীগের কর্মী। আমাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ নির্দেশনার অন্তর্নীহিত কারণ ছিল সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মানুষের ভেতর স্বাধীনতার চেতনাকে জাগ্রত করা। উদ্বুদ্ধ করা।

এ স্লোগানের মাধ্যমেই আমাদের সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং বিজয় অর্জন। প্রতিটি পদক্ষেপ তিনি নিয়েছিলেন সুপরিকল্পিতভাবে। যে কারণেই আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি, মর্যাদা পেয়েছি। ‘জয় বাংলা’র মধ্য দিয়ে এটাই আমরা বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছাতে চাই, আমরা বিজয়ী জাতি, আমরা বিজয় অর্জন করেছি।

মাথা নত করে আমরা চলি না, চলব না। বিজয়ীর বেশে মাথা উঁচু করে বিশ্ব দরবারে প্রতিটি বাঙালি যে যেখানে থাকে, সে মাথা উঁচু করে চলবে। বাঙালি জাতির মাথা উঁচু করে চলার স্লোগান এই ‘জয় বাংলা’।”

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) কে ধন্যবাদ জানান দেশের প্রতিটি দুর্যোগে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসার পাশাপাশি জয় বাংলা স্লোগান উদযাপনের এ উৎসবটি আয়োজনের জন্য।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস এর সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, “‘জয় বাংলা’ জাতীয় স্লোগান হিসেবে আইনে পরিণত হল। পৃথিবীতে ৩৬টি দেশে জাতীয় স্লোগান আছে, আজ আমাদের দেশসহ এ সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৭-এ। আমরা অত্যন্ত গর্বিত আনন্দিত। পঞ্চাশ বছর পর হলেও ‘জয় বাংলা’ স্বীকৃতি পেয়েছে।

এই ‘জয় বাংলা’ ছিল আমাদের মুক্তির পণ। এই জয় বাংলা নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধে নেমেছিলাম। জয় বাংলা আমাদের মূলমন্ত্র। বাংলাদেশ যতদিন জীবিত থাকবে, ততদিন জয় বাংলা জীবিত থাকবে। বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। উপহার দিয়ে গেছেন শেখ হাসিনাকে।তার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়ন হবে ইনশাল্লাহ।”

জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় সংসদে প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এমপি।

উৎসবে উপস্থিত হয়ে তিনি বলেন, “২০১৯ সালের ৯ মার্চ, মহান জাতীয় সংসদে আমার প্রথম বক্তৃতায় আমি প্রস্তাব করেছিলাম, জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান করার জন্য। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই, কিছুদিন আগে মন্ত্রী পরিষদের সভায় আপনারা এ সিদ্ধান্তটা নিয়েছেন এবং ইতিমধ্যে গ্যাজেটটাও জারি হয়ে গেছে। এ ঘোষণার ফলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা অনেক খুশী হয়েছেন। দেশের প্রত্যেকটি নাগরিক যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন, তারা জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা করায় আজ আনন্দিত।

যখন আমরা ক্ষমতায় ছিলাম না স্বাধীনতায় বিশ্বাসী অনেক শিক্ষক এ জয় বাংলা স্লোগানকে লালন করেছেন, ছাত্র-ছাত্রীদের শিখিয়েছেন। সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারিরা যারা এ স্লোগান বুকে ধারণ করেছেন কিন্তু তা করতে গিয়ে নির্যাতিত-বঞ্চিত হয়েছেন। তাদের দলীয় বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, পদোন্নতি পাননি, তারাও আজ আনন্দিত। আমি ব্যাংকারদের প্রতি ধন্যবাদ জানাতে চাই, তারা এ উৎসব আয়োজনে এগিয়ে আসার জন্য।”

উৎসবে কৌশিক হোসেন তাপসের সংগীতায়োজনে সাতটি একক ও দলীয় পরিবেশনার দেশাত্ববোধক গান পরিবেশিত হয়। গানগুলো পরিবেশন করেন সৈয়দ আবদুল হাদী, সাবিনা ইয়াসমিন, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, ফাতেমা তুজ জোহরা, এস আই টুটুল, বালাম জাহাঙ্গীর, ইবরার টিপু ও কৌশিক হোসেন তাপসসহ তরুণ প্রজন্মের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীরা।

আয়োজকরা জানান, খুব শিগগিরই সর্বস্তরের শ্রোতাদের জন্য গানগুলো মুক্তি পেতে যাচ্ছে।

অনুষ্ঠানে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ ও এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সম্পাদিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষের স্মারক প্রকাশনা ‘মুক্তিদাতা শেখ মুজিব’ গ্রন্থের মোড়ক উম্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সচিত্র স্মারক গ্রন্থ ‘মুক্তিদাতা শেখ মুজিব’-এর মুখবন্ধ লিখেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই। নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম ও দৈনিক বাংলা কর্তৃক প্রকাশিত ৩৮৪ পৃষ্ঠার স্মারক গ্রন্থটির মূল্য ৪ হাজার টাকা।

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন ও বহুমাত্রিক চিন্তা জাতির সামনে সবিস্তারে তুলে ধরার প্রয়াস রয়েছে গ্রন্থটিতে।

অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার ছিল নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম ও দৈনিক বাংলা। ইভেন্ট পার্টনার ছিল ওয়ান মোর জিরো কমুনিকেশন্স।