Home জাতীয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী আজ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী আজ

50

ডেস্ক রিপোর্ট: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী আজ। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিব বর্ষের বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে উদযাপিত হবে এ দিনটি। এর আগে বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মদিন থেকে শুরু হয় মুজিব বর্ষ। যা এবছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে । দিনটি জাতীয় শিশু কিশোর দিবস হিসাবেও উদযাপিত হবে।
স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত এই নেতা ১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
এই উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি এবং আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহন করেছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে বাংলাদেশী দূতাবাসগুলোতেও দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় উদ্যাপন করা হবে। দিনটিকে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি এদিন ‘টুঙ্গিপাড়া হৃদয়ে পিতৃভূমি’ শীর্ষক বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিটে জাতির পিতার সমাধি সৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বিকাল ২টা ৩০ মিনিটে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আগামীকাল থেকে সপ্তাহব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে। এবারের আয়োজনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘হৃদয়ে পিতৃভূমি’। সকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এবং সারা দেশের সকল কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। ওই দিন সকাল সাড়ে ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে আওয়ামী লীগ।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদিন টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করবেন।
ওই দিন একটি শিশু-কিশোর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ দেবেন। বিকেলে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। ১৮ মার্চেও আওয়ামী লীগের উদ্যোগে টুঙ্গিপাড়ায় একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা সভায় অংশ নেবেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪০ সালে সর্বভারতীয় মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগদানের মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ (বর্তমানে মওলানা আজাদ কলেজ) ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
তিনি ১৯৪৯ সালে তৎকালীন আওয়ামী মুসলিম লীগের পূর্ব পাকিস্তান শাখার যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালে তিনি পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের টিকেটে ইস্ট বেঙ্গল লেজিসলেটিভ এসেম্বলীর সদস্য নির্বাচিত হন। ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আজীবন সোচ্চার এই অবিসংবাদিত নেতাকে রাজনৈতিক জীবনে বহুবার কারাবরণ করতে হয়।
তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬-দফা ও পরবর্তীতে ১১ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন এবং বঙ্গবন্ধু উপাধি লাভ করেন। তাঁর সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ধাপে ধাপে স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে থাকে।
১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জিত হলেও তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে বাঙালি জাতির ওপর নানা নির্যাতন শুরু করে। বঙ্গবন্ধু একাত্তরের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। যা ইউনেস্কোর ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব দ্য ওয়াল্ড রেজিস্ট্রার এ অর্ন্তভুক্তির মাধ্যমে বিশ্বপ্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
অন্যদিকে, ২৬ মাচর্ (২৫ মার্চ মধ্যরাতে) তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং তাঁর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙ্গালীর বহু আকাক্সিক্ষত বিজয় ও স্বাধীনতা অর্জিত হয়। বিংশ শতাব্দীতে নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে যারা বিশ্বনন্দিত নেতা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদের অন্যতম।