Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস ফেসবুকে কমেন্টের জেরে বশেমুরবিপ্রবির এক শিক্ষার্থীকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ

ফেসবুকে কমেন্টের জেরে বশেমুরবিপ্রবির এক শিক্ষার্থীকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ

252

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি: ফেসবুকে কমেন্ট করাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মুঠোফোনে ডেকে একই বিভাগের সিনিয়র শিক্ষার্থীদের দ্বারা শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।

গত শনিবার (২৭ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরমান মাসুদকে মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকপাড়ে বেধড়ক মারধর করে একই বিভাগের সিনিয়র শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আশরাফুল ইসলাম বিজয়,নোমান আহমেদ তাসনিম, শেখ নাঈম, রিজভী আহমেদ, আবির হাসান সাজিদ, ইমন শেখ।

এ ঘটনায় শারীরিক নির্যাতনের শিকার মোঃ আরমান মাসুদ নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারণে গোপালগঞ্জ সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ পত্রে তিনি জানান, আমি অত্র বিশ্ববিদ্যালয় টুরিজম এন্ড হসপিটালিটি মেনেজমেন্ট বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। গত ইং ২৫/০৮/২০২২ তারিখ ফেসবুকে সারকাজম নামক গ্রুপে মজা করে ১টি কমেন্ট করি। তারপর, গত ইং ২৭/০৮/২০১২ তারিখ আনুমানিক সন্ধ্যা ৭.০০ ঘটিকার সময় উক্ত কমেন্টের জের ধরিয়া ইমন শেখ (২৪) মুঠোফোনে কল করিয়া আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লিপুস কেন্টিনে ডেকে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ইমন শেখ (২৪) সহ আশরাফুল ইসলাম বিজয় (২৪), নোমান আহম্মেদ তাসনিম (২৫), শেখ নাঈম (২৫), রিজভী আহম্মেদ (২৩), আবির হাসান সাজিদ (২৩) সহ আরো অনেকে আমাকে জোর পূর্বক লিপুস ক্যান্টিন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকপাড়ে নিয়ে গিয়ে বিনা কারণে আমার নাম ধরিয়া অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আমি তাহাদের গালিগালাজ করিতে নিষেধ করিলে বিবাদীগণ আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল, ঘুষি, লাথি মারিয়া নিলাফোলা জখম করে ও মারামারির একপর্যায়ে বিবাদীগণ পাশে থাকা বাঁশ দিয়ে আমাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করিয়া হাড়ভাঙ্গা রক্তজমাট জখম করে এবং হুমকি দিয়ে বলে যে, তুই যদি এই বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করিস বা আইনের আশ্রয় নিস তাহলে তোকে খুন করিয়া তোর লাশ গুম করিয়া ফেলিব। এমতাবস্থায় আমার প্রাণের ঝুঁকি থাকায় থানায় আসিয়া লিখিত অভিযোগ দায়ের করিলাম।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই মুহূর্তে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। নানাভাবে আমাকে ও আমার বন্ধুদের চাপ দেওয়া হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানান, ইতোপূর্বেও এ সকল শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের নানারকম অপকর্মে জড়িত ছিল। এ ধরনের ঘটনা পূর্বেরও ঘটেছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে জানালেও তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

এ বিষয়ে উক্ত বিভাগের চেয়ারম্যান বাপন চন্দ্র কুরি বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এ বিষয়ে আমাকে একটি লিখিত অভিযোগ পত্র দিয়েছেন। আমরা অবজারভ করেছি তার হাতে পায়ে বিভিন্ন জায়গায় মারধর করা হয়েছে। আমরা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিয়ে যথেষ্ট সচেতন। তার নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার কোন কারণ নাই। এ বিষয়ে বিভাগ দায়বদ্ধ।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থী জিডি করতে চাইলে আমি তার তরফ থেকে জিডি করে নিতে বলি এবং পরবর্তী সেই জিডির কপি জমা প্রদান করতে বলি। এ বিষয়ে ঐ কয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুসারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোঃ নাসির উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আমাদের জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আমারা অনুসন্ধান করে জিডি হলে জিডি আর মামলা করার মত হলে মামলা করা হবে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টার পর আশরাফুল ইসলাম বিজয়ের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় এবং তিনি জানায়, এটা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।