Home জাতীয় প্রস্তাবিত অত্যাবশ্যক পরিষেবা আইন’২২ বাতিলের দাবি

প্রস্তাবিত অত্যাবশ্যক পরিষেবা আইন’২২ বাতিলের দাবি

43

ডেস্ক রিপোর্ট: অত্যাবশ্যক পরিষেবা আইন’২২ অনুমোদন কে প্রতিবাদহীন ভাবে আধুনিক দাসত্ব পরিচালনার প্রচেষ্টা হিসাবে অভিহিত করে তা বাতিলের আহবান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি আহসান হাবিব বুলবুল এবং সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ। এক যৌথ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, যে সময় নিত্যপণ্যের উচ্চ মুল্যের কারণে শ্রমজীবী মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় খাদ্যের সংস্থান করতে পারছেনা, চারদিকে বাজারমূল্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে মজুরি বাড়ানোর দাবি উঠছে, সেই সময় বহু সিমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বিদ্যমান শ্রম আইনে শ্রমিকের যৌথ দরকষাকষির এবং প্রয়োজনে ধর্মঘটের যে সামান্যতম সুযোগ আছে তা হরণ করতে ধর্মঘট আহবান বা সমর্থন কে অপরাধ হিসাবে গণ্য করা এবং সর্বেচ্চ ১ বছরের কারাদন্ড ও ১ লক্ষ টাকা অর্ত দন্ডের বিধান রেখে ” অত্যাবশ্যক পরিষেবা আইন’২২’ নামে আইন পাশের নিন্দনিয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রচলিত শ্রম আইনের ১ (৪) ধারায় কোথায় শ্রম আইন কার্যকর হবে না তার তালিকা দেওয়া আছে, ২১১ (৪) ধারায় সরকারের ধর্মঘট নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা, ২২৬ ধারায় শ্রম আদালত কর্তৃক ধর্মঘট নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা এবং ২৯৪ ধারায় বেআইনি ধর্মঘটের কারণে শা¯িÍর সুনির্দিষ্ট বিধান থাকা সত্ত্ওে শ্রমিকদের ধর্মঘট নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আলাদা আইন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে যা শ্রমিকদের যৌথদরকষাকষির অধিকারের টুঁটি চেপে ধরবে। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ধর্মঘটের অধিকারহরণ কে আড়াল করতে প্র¯Íাবিত আইনে লে-অফের কথা যুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এটি শ্রমিকদের কাছে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার প্রচেষ্টার সমতুল্য কারণ লে-অফের ঝক্কি মালিদরে কাঁধ থেকে নামিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক আগেই শ্রম আইনে ১৩ (১) ধারা যুক্ত করা হয়েছে। মজুরিসহ শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির আন্দোলন কে দমন করতে মালিকরা এখন কারখানা লে-অফ করেনা বরং ১৩(১) ধারার ক্ষমতাবলে তাৎক্ষনিক ভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়। অর্থাৎ প্রস্তাবিত আইনে লে-অফকেও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে যুক্ত করা হলেও তা মালিকদের উপর কার্যকর হবেনা বরং শিল্প সম্পর্কের দুর্বল পক্ষ শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে অপব্যবহারের সম্ভাবনা শতভাগ। প্রস্তাবিত আইনে যেকোন খাতকে অত্যাবশ্যক পরিষেবা হিসাবে ঘোষণার এবং ঘোষিত বিশেষ পরিস্থিতির মেয়াদ ইচ্ছামত বাড়ানোর সুযোগ রাখায় এই আইন মালিকদের সস্থা শ্রম শোষণ কে প্রতিবাদহীন করার হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহারিত হওয়ার সম্ভাবনা আর শ্রমিকদের উদ্বেগ আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, পরিস্থিতি এমনই ভয়াবহ যে মন্ত্রী মহোদয়গণ ও স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছেন জিনিস পত্রের দাম যে হারে বেড়েছে সেইহারে মজুরি বাড়েনি, শ্রমজীবী মানুষ কষ্টে আছে। তাই দেশের শিল্প সম্পর্ক কে স্থিতিশিল করতে, সুস্থ ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং শিল্পের বিকাশ নিশ্চিত করতে অবিলম্বে নিত্যপণ্যের বাজারমুল্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে শ্রমিকদেও মজুরি পুণ:নির্ধারণ করেন। শিল্পের বিকাশে ন্যায্য শ্রমিক আন্দোলন কে দমন পরিকল্পনার পরিবর্তে শ্রম অধিকারসমুহের শতভাগ বাস্তবায়ন করার কাঠামো গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন।