Home সারাদেশ প্রবারণা উৎসবে এক হাজার মোমবাতি প্রজ্জ্বলন।। আকাশে উড়িয়েছে ফানুস

প্রবারণা উৎসবে এক হাজার মোমবাতি প্রজ্জ্বলন।। আকাশে উড়িয়েছে ফানুস

40

কলাপাড়ায় রাখাইন পল্লীতে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি।। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইন সম্প্রদায়ের সব চেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা। এ উপলক্ষ্যে রবিবার রাতে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহারে গৌতম বুদ্ধ দেবের স্মরনে এক হাজার মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। পরে বিহার সংলগ্ন মাঠে প্রায় অর্ধশতাধিক রং বেরংয়ের ফানুস আকাশে উড়িয়ে এ উৎসব উদ্যাপন করেন। এসময় আতশবাজি ও নাচে গানে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে রাখনাইন সম্প্রদায়ের যুবক যুুবতীরা। তাদের এ উৎসব দেখতে ভিড় করে পর্যটকসহ স্থানীয়রা। এর আগে সকালে পঞ্চশীল, অষ্টশীল প্রার্থনা,ঘণ্টা বাজানোসহ ধর্মীয় আলোচনা করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন ফল ও হরেক রকমের পিঠাপুলি বৌদ্ধ ভিক্ষুকে প্রদান করেন বৗদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইন সম্প্রদায়ের বয়স্ক নারী পুরুষরা। তবে প্রবারণা উৎসবকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ২৪ টি রাখাইন পল্লীতে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। আলোকসজ্জ্বা করা হয়েছে প্রতিটি বিহার। তবে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এরাতে পল্লীগুলোতে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের মতে, এই দিনে গৌতম বুদ্ধ ধর্ম প্রচার শুরু করেন। এ করানে এই দিনটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এছাড়া গৌতম বুদ্ধের স্মরণে আষাঢ়ী পূর্ণিমাতে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বর্ষাব্রত শুরু হয়ে কার্তিকের এ পূর্ণিমাতে শেষ করেন। এ উৎসবকে ঘিরে বাড়ি বাড়ি তৈরি হয় বাহারি পিঠা, পুলি, পায়েশ। গৃহে অতিথি আপ্যায়নসহ রাখাইনরা এই দিনে পরিষ্কার কিংবা নতুন পোশাকে বিহারে গমন করে। একই সাথে পালন করা হয় বিভিন্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান। তবে ফানুস উৎসব এখন সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। এ অনুষ্ঠান চলবে সোমবারবিকেলে এ উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে। বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
গোড়া আমখোলা পাড়ার রাখাইন যুবক তেননেন বলেন, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব এই প্রবারণা পূর্ণিমা। এ উৎসব ঘিরে প্রতিটি রাখাইন পল্লীর ঘরে ঘরে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। প্রতিবছর প্রবারণা উৎসবে হরেক রঙের কাগজ আর বাহারি ডিজাইনের তৈরি ফানুস রাতের আকাশে উড়ান হয়। আর এ ফানুস উড়ানো দেখতে দুর-দুরান্ত থেকে লোকজন এসে মিলিত হন। প্রায় এক মাস আগে থেকেই ফানুস উড়ানোর প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
মিশ্রিপাড়া সীমা বৌদ্ধবিহারের ভিক্ষু ও গৌতম বুদ্ধ পাঠাগারের গবেষক উত্তম ভিক্ষু বলেন, আত্মশুদ্ধি ও অশুভকে বর্জন করে সত্য ও সুন্দরকে বরণেই এ উৎসব। প্রবারনা পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে বৌদ্ধ বিহারে প্রথমে পঞ্চশীল, অষ্টশীল প্রর্থনা, ঘণ্টা বাজানোসহ ধর্মীয় আলোচনা এবং বিভিন্ন পিঠা দান করা হয়েছে।
কুয়াকাটা শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার ভিক্ষু উপাধক্ষ্য ইদ্রবংশ ভিক্ষু বলেন,প্রতিবছরই এই সময় আকাশে ফানুস উড়িয়ে এবং ধর্মীয় নানা আয়োজনের মাধ্যমে গৌতম বুদ্ধ দেবকে স্মরণ করা হয়। প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব উপলক্ষ্যে বিভিন্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, উপজেলার ২৪ টি রাখাইন মন্দিরে প্রবারণা উৎসব পালন করার জন্য ৫০০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। রাখাইনরা যাতে এ উৎসব ভালোভাবে পালন করতে পারে, সে জন্য সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।