Home স্বাস্থ্য প্রতি দেড় সেকেন্ডে ১ জন লোক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

প্রতি দেড় সেকেন্ডে ১ জন লোক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

28

বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা আয়োজনে বিশ্ব হার্ট দিবস পালিত

স্টাফ রিপোটার: নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ‘‘ভালবাসা দিয়ে প্রতিটি হৃদয়ের যত্ন নিন” প্রতিপাদ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) বিশ্ব হার্ট দিবস -২০২৩ পালিত হয়েছে। শনিবার সকাল ৯ টায় (৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩খ্রিষ্টাব্দ) দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও একটি সিএমই আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগ ও শিশু হৃদরোগ বিভাগ।
কর্মসূচির শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি-ব্লকের সামনে থেকে শুরু হয়ে সি-ব্লক অতিক্রম করে বেসিক সাইন্স ভবন, টিএসসি ও এ-ব্লক ঘুরে বি-ব্লকের সামনে শেখ রাসেল ফোয়ারায় গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগ ও শিশু হৃদরোগের বিভাগের শিক্ষক, চিকিৎসক, রেসিডেন্ট, কর্মকর্তা ও নার্সরা অংশগ্রহণ করেন।
শোভাযাত্রা শেষে শহীদ ডা. মিলন হলে আয়োজিত সিএমই আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগ। সেমিনারের প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ^বিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোঃ আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার টিটো। সিএমইতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. চৌধুরী মেশকাত আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এসএম মোস্তফা জামান। সিএমইতে প্যানেল অব এক্সপার্ট হিসেবে মতামত প্রদান করেন ইউজিসি অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মোঃ হারিসুল হক, শিশু হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. তারিকুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক ডা. এসএম ইয়ার ই মাহাবুব, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোঃ রসুল আমিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি ও পেডিয়াট্রিক কার্র্ডিয়াক সার্জারি ইউনিট স্থাপন প্রকল্প পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাখাওয়াত আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. জাহানারা আরজু।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, সব হার্টের রোগীর ইন্টারভেনশন প্রয়োজন নেই। ইদানিং একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে যে তাদের কাছে রোগী আসলেই অপারেশন (ইন্টারভেনশন) করা। প্রসঙ্গক্রমে একটা কথা উল্লেখ করতে চাই যে, আগে চোখের ক্যাটার‌্যাক্ট ( ছানি) হলেই চিকিৎসকরা বলতেন, ক্যাটারেক্ট ম্যাচিউরড হলে ইন্টারভেনশ করো। ইম্যাচিউরড অবস্থায় করা যাবে না । কিন্তু এখন ইম্যাচির্উড অবস্থায়ও করা হচ্ছে। যেটা ইথিক্যালি ঠিক না। চিকিৎসা সেবা প্রদানে অবশ্যই চিকিৎসকদের ইথিকস মেনে চলতে হবে। মাননীয় উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় শিশু হৃদরোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধে কাজ করছে। ইতিমধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু হৃদরোগ বিভাগে ৭ শতাধিক শিশুর হৃদরোগের অপারেশন করা হয়েছে। শিশুরা যাতে রোগে না ভোগেন, শিশুরা যাতে ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহণ না করে সেজন্য মাতৃগর্ভে থাকতেই তা স্ক্রিনিং করে চিকিৎসাসেবা দেয়া কার্যক্রম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু করেছে।
সিএমইতে বলা হয়, প্রতি দেড় সেকেন্ডে ১ জন লোক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশে প্রতিবছর ৫ লাখ ৭২ হাজার ৬০০ জন লোক নন কমিউনিক্যাবল ডিজিজেসে মৃত্যুবরণ করেন। তার মধ্যে ৩০ শতাংশ মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বক্তারা বলেন, হার্ট ব্লক হলেই ইন্টারভেনশন করা যাবে না। অনেক হার্ট ব্লক আছে যেসব ওষুধের দ্বারা ভাল রাখা যায়। হৃদরোগ প্রতিকারের চেয়ে সবাই প্রতিরোধের দিকে অধিক গুরুত্বারোপ করেন। এজন্য নিয়মিত ৩০ মিনিট হাটার পরামর্শ দেয়া হয়। এছাড়াও নিয়মিত ঘুম, লবণ না খাওয়া, স্ট্রেস না থাকা ও ধুমপান না করলে হৃদরোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। ধুমপান নিরোধের আইন প্রয়োগ করা কথা জানানো হয়। বর্তমানে দেশের হৃদরোগীর ব্যাস্থাপনা খুব ভাল হওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মৃত্যুর যেসব কারণ রয়েছে তার মধ্যে হৃদরোগ ১ নম্বর থেকে ৪ নম্বরে নেমেছে। হৃদরোগের প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো সঠিক নিয়মে দৈনন্দিন জীবনযাপন করা। হাসি খুশি থাকাও হৃদরোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। বর্তমানে জীবনে শান্তি কামনায় মেডিটেনশ কাজ করে। শান্তিময় জীবন যাবনে আধুনিক বিশ্বে মেডিটেশনকে গুরুত্ব দেয়া হয়।