Home সারাদেশ প্রচণ্ড গরম ও লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন

প্রচণ্ড গরম ও লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন

29

চাষাবাদ ব্যাহত

ডেস্ক রিপোর্ট: বিভিন্ন স্হানে প্রচণ্ড গরম ও লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়া এ সময় নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর:

নিয়ামতপুর (নওগাঁ): বৃষ্টিহীন আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবণ এলেও ভারী বৃষ্টির দেখা নেই নিয়ামতপুরে। অনাবৃষ্টি, প্রচণ্ড গরম বিপর্যস্ত জনজীবন। এছাড়া মাঠে পানি না থাকায় আমন মৌসুমের চাষাবাদ বন্ধ রয়েছে। যেগুলো আমন ধান লাগানো হয়েছে সেগুলো বাঁচানোর জন্য সেচ পাম্পের ওপর নির্ভর করছে।

নিয়ামতপুর স্বাস্হ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরমে জ্বর, ঠান্ডা, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন, নিয়ামতপুর স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার প্রণব কুমার সাহা। নিয়ামতপুর উপজেলার মিজানুর রহমান বলেন, ভরা বর্ষাকালেও আমাদের মাঠে পানি নেই। এ সময় আমন ধান লাগানোর জন্য জমি প্রস্ত্তত করতে হয়। জমিতে পানি না থাকায় আমরা হালচাষ করতে পারছি না। অটোভ্যানচালক মতি মিয়া বলেন, রোদের যে তাপ মনে হচ্ছে গায়ের চামড়া পুড়ে যাচ্ছে। যদিও ভ্যান পায়ে ঠেলতে হয় না, তবুও রোদের কারণে রাস্তায় থাকাটাই কঠিন।

চিরিরবন্দর (দিনাজপুর): চিরিরবন্দরে অতিরিক্ত তাপদাহ ও লোডশেডিংয়ে নাকাল হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। সন্ধ্যার পর ভূতুরে অবস্হা উপজেলা সদর গ্রামাঞ্চলের হাটবাজার। আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবণ শুরু হলেও আকাশের বৃষ্টি না হওয়ায় অতিরিক্ত তাপদাহ এবং বিদু্যতের আট ঘণ্টা লুকোচুরি খোলায় উপজেলার মানুষ অতিষ্ঠ। গত মঙ্গলবার থেকে এলাকাভিত্তিক ১ ঘণ্টা লোডশেডিং হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকে রাত অবধি কয়েক বার বিদ্যুৎ থাকছে না। গড়ে চিরিরবন্দর উপজেলায় ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। সঠিকভাবে অফিস-আদালত, ব্যবসাবাণিজ্য, ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল-কলেজ ও বাড়িতে পড়াশোনা করতে পারছে না। লোডশেডিং-এ বৈদ্যুতিক পাখা, ফ্রিজসহ বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে পড়ছে বলে গ্রাহকরা অভিযোগ তুলেছেন। দিনাজপুর পল্লী বিদু্যত্ সমিতি-১ রাণীরবন্দর জেনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বলেন, যতটুকু পাচ্ছি ততটুকুই সঠিকভাবে সরবরাহ করছি।

বদলগাছী (নওগাঁ): বদলগাছীতে বর্ষা মৌসুমেও নেই বৃষ্টি। প্রচণ্ড তাপদাহে পুড়ছে কৃষকের সোনালি ফসল ও রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পটোল, লাউ, শাক, কলা, বেগুনসহ শতশত একর জমির সবজি ফসল তাপদাহে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সে খোঁজ নিয়ে জানা যায় অতিরিক্ত গরমে পেটের ব্যথা, ডাইরিয়া, জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ সব বয়সি মানুষ। উপজেলা চাংলা গ্রামের কৃষক জাকির হোসেন, আব্দুস ছালাম, হাইদুলসহ অনেকে বলেন, এই এলাকায় সবজি ও ধানের ক্ষেত বেশি হয়। কিন্ত ভ্যাপসা গরমে আমন ধান রোপণ করতে পারছি না। এছাড়া সবজি ফসলের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার হাসান আলী বলেন, প্রচণ্ড খরার কারণে আমন ধান রোপণ করতে পারছেন না কৃষকেরা। বরেন্দ্রের গভীর নলকৃপ চালু করা হয়েছে, এতে কৃষকদের আমন চাষে খরচ অনেক বেশি পড়ে যাবে। অতিরিক্ত খরার কারণে ফুলের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্হ্যও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. কানিস ফারহান বলেন, এই গরমে হাসপাতালে ডাইরিয়া রোগি বেশি ভর্তি হচ্ছে এবং সবাইকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বাইরের কোনো খোলা খাবার না খাওয়ার জন্য।
-ইত্তেফাক