Home রাজনীতি পররাষ্ট্রনীতির ভারসাম্যহীন অবস্থা দেশবাসীসহ সারাবিশ্বের সামনে উন্মোচিত : রব

পররাষ্ট্রনীতির ভারসাম্যহীন অবস্থা দেশবাসীসহ সারাবিশ্বের সামনে উন্মোচিত : রব

49

স্টাফ রিপোটার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন একসময় ভারত সফরে যাচ্ছেন, যখন দেশের পররাষ্ট্রনীতির ভারসাম্যহীন অবস্থা দেশবাসীসহ সারাবিশ্বের সামনে উন্মোচিত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব।

রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি।

রব বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও অগণিত মানুষের আত্মত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন দেশের সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যখন পার্শ্ববর্তী দেশের সরকারকে অনুরোধ করা হয়, তখন বোঝা যায় দেশটির পররাষ্ট্র নীতি আর যাই হোক মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং জনগণের গণতান্ত্রিক আশা-আকাঙ্ক্ষার ওপর প্রতিষ্ঠিত নয়। এরই মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আত্মমর্যাদাহীন ও অকূটনীতিপ্রবণ বক্তব্যে জনগণ শঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বহির্বিশ্বের সঙ্গে কৌশলগত মিত্রতা বজায় রাখাও আধুনিক পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম লক্ষ্য। দেশের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি হবে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা, অন্যান্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান ও নিপীড়িত জনগণের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামের প্রতি সমর্থন দেওয়া এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শক্তি প্রয়োগ পরিহার করা।

জেএসডি সভাপতি বলেন, অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, বৈশ্বিক সংকট এবং করোনা উত্তর ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশ জটিল আকার ধারণ করেছে। বিশ্ব রাজনীতিতে ‘বন্ধুসুলভ’ অথবা ‘শত্রুভাবাপন্ন’ খেলায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হতে হবে দূরদর্শী, উইন-উইনভিত্তিক ও ভারসাম্যমূলক।

‘প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে আমাদের উভয়ের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদিসহ সম্পর্ক হবে পারস্পরিক সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা ও বন্ধুত্বপূর্ণ। পারস্পরিক লক্ষ্য অর্জনে বন্ধুত্বের মেরুকরণ অবশ্যই একমুখী না হয়ে দ্বিমুখী হবে। ট্রানজিট ও তিস্তাসহ ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি ব্যবস্থাপনার অবিচ্ছেদ্য অধিকারকে সুরক্ষা এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধ করাই হবে ভারতের সঙ্গে আমাদের মর্যাদাপূর্ণ সম্পর্কের ইতিবাচক পদক্ষেপ।’

তিনি আরও বলেন, এছাড়াও ভূ-রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সার্কের আওতায় বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, ভারত (পশ্চিমবাংলা বিহার মেঘালয় আসাম ত্রিপুরা মনিপুর অরুণাচল নাগাল্যান্ড ও মিজোরাম), মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চল এবং চীনের কুনমিং প্রদেশ নিয়ে ‘উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোট’ গড়ে তুলতে হবে। গোটা উপমহাদেশে এ ধরনের চারটি ‘উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোট’ গঠিত হতে পারে।

রব বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে এটা অর্জন করা মোটেই অসম্ভব নয়। সে লক্ষ্যে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারের বিপরীতে অবস্থান না নিয়ে জনগণের অভিপ্রায় ভিত্তিক রাজনীতি ও পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করতে হবে। আর তা অনুসরণ করতে না পারলে দেশের অভ্যন্তরে ও ভূ-রাজনীতিতে বড় ধরনের ঝুঁকি সৃষ্টি হবে, যা আমাদের স্থিতিশীলতা ও সার্বভৌমত্বকে হুমকিতে ফেলবে।