Home কৃষি পণ্যের দাম নির্ধারণ নয়, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে :কৃষিমন্ত্রী

পণ্যের দাম নির্ধারণ নয়, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে :কৃষিমন্ত্রী

33

ময়মনসিংহ অফিসঃ কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, লোকজনকে দেখানোর জন্য আন্দোলনের প্রতিযোগিতায় নেমেছে বিএনপি। তারা প্রতিদিন উস্কানিমূলক কথাবার্তা, স্লোগান ও কর্মসূচি দিচ্ছে। রাস্তাঘাট অবরোধ-আটকে মানুষের চলাফেরায় ভোগান্তি সৃষ্টি করছে। তারা অহেতুক পুলিশের উপর আক্রমণ করে। প্রতিদিন আন্দোলন কর্মসূচি দেয়ার মতো কোন কারণ নেই। সরকারের দায়িত্ব মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা। সেটিই সরকার করছে।

আজ সোমবার সকালে ময়মনসিংহে টাউন হলে এডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে বিদ্যমান শস্যবিন্যাসে তেল ফসলের অন্তর্ভুক্তি এবং ধানের অধিক ফলনশীল জাতসমূহের উৎপাদন বৃদ্ধি শীর্ষক কর্মশালায় যোগদানের আগে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বিএনপি আন্দোলনে কোন দিন সফল হয় নি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন,২০১৪ সালে বিএনপি একটানা তিন মাস আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও, গাড়ি ভাংচুর, মানুষকে পুড়িয়ে মারাসহ তাণ্ডব চালিয়েছিল। তখনও তারা সফল হয় নি। খালেদা জিয়া লজ্জাবনত মাথায়, মুখে কালিমা মেখে ঘরে ফিরে গিয়েছিল। তিন মাসেও সফল হয় নি। আর এখন উস্কানিমূলক ও উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তাণ্ডব সৃষ্টি করে সফল হতে পারবে না। তাদেরকে জনগণ প্রতিহত করবে।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজপথের মানুষ, তাদেরকে রাজপথের আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, আমরাও রাজপথের মানুষ। আওয়ামী লীগের প্রায় সব নেতাকর্মীই রাজপথে আন্দোলন করেছে, জেল খেটেছে, মামলা-মোকদ্দমা মোকাবেলা করেছে। আগামী দিনেও যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করবে।

পন্যের দাম নির্ধারণ করে দেয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, পণ্যের দাম নির্ধারণ নয়, বরং কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারীদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা উচিত। খোলাবাজার অর্থনীতেতে পণ্যের দাম একদম নির্ধারণ করে দিয়ে তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আমরা একটা ইন্ডিকেটর দিতে পারি যে, দাম এত টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। তবে কঠোরভাবে বাজার মনিটর ও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মিলমালিকেরা হঠাৎ করে দাম বাড়িয়ে বিরাট মুনাফা করার চেষ্টা করে। তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে, লাইসেন্স বাতিল করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, এসব বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং কৃষি মন্ত্রণালয় সম্মিলিতভাবে সবসময় আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমন্বয় করে কাজ করে।

পরে মন্ত্রী বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আয়োজিত কর্মশালায় যোগ দেন। এসময় তিনি বলেন, আমন উৎপাদনে অনিশ্চয়তা কেটে গেছে। আর কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমনে উৎপাদন গতবছরের তুলনায় বেশিও হতে পারে।

সামনের দিনগুলোতে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট বেড়ে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে বিভিন্ন সংস্থা যে পূর্ভাবাস ও সতর্কবাণী দিচ্ছে, এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রস্তুতির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার খাদ্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় সঠিক পথে রয়েছে। গত ১৩ বছরে খাদ্যের কোন সংকট হয় নি। এমনকি করোনা ও যুদ্ধের অভিঘাতের মধ্যেও খাদ্য নিরাপত্তার দিক থেকে দেশ অনেক ভাল অবস্থানে আছে। সামনের দিনগুলোতে যাতে সমস্যা না হয়, সেজন্য খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে জোর দিচ্ছি।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম। এতে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু, সংসদ সদস্য কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, বিএডিসির চেয়ারম্যান এএফএম হায়াতুল্লাহ, ব্রির মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, বিনার মহাপরিচালক মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, বারির মহাপরিচালক দেবাশীষ সরকার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।