Home রাজনীতি নির্বাচন ও আন্দোলনে জোর

নির্বাচন ও আন্দোলনে জোর

35

ডেস্ক রিপোর্টঃ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও আন্দোলনকে সামনে রেখে ঘর গোছাতে ব্যস্ত আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। দুদলেরই নজর ঢাকা মহানগরের দিকে। ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন। তাই নভেম্বরেই ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলন শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকমান্ড। আর সেপ্টেম্বর থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সম্মেলন করবে দলটি। পাশাপাশি আগামীদিনের আন্দোলনে অতীতের ব্যর্থতার তকমা মুছতে চায় ঢাকা মহানগর বিএনপি। এ লক্ষ্যে যোগ্য ও ত্যাগীদের সমন্বয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে আন্দোলনমুখী নেতৃত্ব। ইতোমধ্যে দুই সিটির সব ওয়ার্ডে গঠন করা হয়েছে আহ্বায়ক কমিটি। শিগগিরই ঘোষণা করা হবে সব ইউনিট কমিটি। এরপর কাউন্সিলের মাধ্যমে ওয়ার্ড ও থানা এবং সবশেষ মহানগরের নেতৃত্ব চূড়ান্ত করা হবে

নভেম্বরে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলন

প্রস্তুতি শুরুর নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে শীর্ষ নেতাদের

হাসিবুল হাসান

জাতীয় সম্মেলনের আগেই দলের সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম এবং ঢাকা মহানগর শাখার সম্মেলন শেষ করবে আওয়ামী লীগ। চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে আওয়ামী লীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ। তার আগে সেপ্টেম্বর থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং নভেম্বরে আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শাখার সম্মেলনের কথা ভাবছেন দলটির হাইকমান্ড। এ বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে ইতোমধ্যে এসব সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশনাও দিতে শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন-দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে দল ও সহযোগী সংগঠনকে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত শক্তিশালী করতে চান তারা।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্লেন (অব.) ফারুক খান বলেন, আমরা আমাদের জেলা-উপজেলা সম্মেলন করে যাচ্ছি। আশা করছি আগামী ডিসেম্বরে আমাদের জাতীয় সম্মেলনের আগেই আমরা সব মেয়াদোত্তীর্ণ শাখার সম্মেলন শেষ করত পারব। সেই সঙ্গে আমাদের দলের যেসব সহযোগী সংগঠনের মেয়াদ শেষ হয়েছে, তাদের সম্মেলনও আমরা করে ফেলব। এর মধ্য দিয়েই আমাদের জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতি হয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিও গ্রহণ করছি।

২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের তিন বছর মেয়াদি কার্যনির্বাহী সংসদের মেয়াদ শেষ হবে। তার আগে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা, উপজেলা, থানা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড শাখার সম্মেলন শেষ করতে চায় দলটি। গত কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা তিন মাসের ‘আলটিমেটামের পর সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জোরেশোরে কাজ শুরু করেন। মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা উপজেলার সম্মেলনের পাশাপাশি কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার কাজও চলছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কেন্দ্র থেকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে।

গত ২ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সদস্য সংগ্রহ অভিযান ও সদস্য নবায়ন অনুষ্ঠানে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে শুধু আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন নয়, মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী সংগঠনেরও সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘জাতীয় সম্মেলন জাতীয় নির্বাচনের আগে শুধু আমাদের দলের সংগঠন নয়, শাখা সংগঠন নয়, আমাদের সহযোগী সংগঠন যাদের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে তাদেরও সম্মেলন অনুষ্ঠান করতে হবে। তাদেরও এ ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে।’

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। সে অনুযায়ী তিন বছর মেয়াদি বর্তমান কমিটির সময় আগামী ২৯ নভেম্বর শেষ হবে। দলের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে সবচেয়ে শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু বর্তমানে মহানগর আওয়ামী লীগে বেহাল পরিস্থিতি। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ ইউনিট কমিটি গঠন করতে সক্ষম হলেও পিছিয়ে দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। ‘মাইম্যান’ কমিটিতে বসাতে ইউনিট সম্মেলন শেষ হচ্ছে না। এ ছাড়াও দুই নেতার আলাদা আলাদা বলয় গড়ে ওঠায় দক্ষিণের রাজনীতিও দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। ইউনিট কমিটি গঠনের নয়ছয়ের অভিযোগও জমা পড়েছে দলের হাইকমান্ডে।

আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড বলছে, মহানগরের নেতৃত্ব ঢেলে সাজানো না হলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফসল ঘরে তোলা কষ্টকর হবে। বিএনপি-জামায়াত এখনই হুঙ্কার দেওয়া শুরু করেছে। তারা জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন স্থানে বড় ধরনের শোডাউন দিচ্ছে। এর বিপরীতে কোনো ধরনের শক্তি দেখাতে পারছে না মহানগর আওয়ামী লীগ কিংবা সহযোগী সংগঠন। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা আগামী নভেম্বরের মধ্যে সম্মেলন করার তাগিদ দিলেও মহানগর নেতারা চেয়ার ছাড়তে রাজি নন। তাদের দাবি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে দেরি হওয়ায় তিন বছর সময় পায়নি। সে কারণে আরও কিছু দিন থাকছে চায় দায়িত্বে।

এ বিষয়ে সম্প্রতি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, গত চারটি সম্মেলনে আপনারা দেখেছেন নেত্রী (শেখ হাসিনা) তিন বছর পরপর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন করেছেন। সারা দেশের সব জেলা-থানায় সম্মেলন না হলেও জাতীয় সম্মেলনের ১৫-২০ দিন আগে কিন্তু ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলন হয়ে যায়। সেই কারণে বলি, ঢাকা মহানগরের সম্মেলন কিন্তু আগামী নভেম্বর মাসেই হবে।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছিল ২০১৭ সালের ৪ মার্চ, যুব মহিলা লীগের সম্মেলন হয়েছিল ২০১৭ সালের ১১ মার্চ, তাঁতীলীগের সম্মেলন হয়েছিল ২০১৭ সালের ১৯ মার্চ। তিন বছর মেয়াদি এসব কমিটির সময় শেষ হয়েছে অনেক আগেই। এ ছাড়া আগামী ডিসেম্বরে কৃষক লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মৎস্যজীবী লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ এবং মহিলা শ্রমিক লীগের মেয়াদ শেষ হবে। অন্যদিকে ২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আর ২০১৭ সালের ২১ মে ‘বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ’-এর আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। গঠনতন্ত্র অনুসারে এসব সংগঠনের বর্তমান কমিটির মেয়াদও ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।

দলীয় সূত্রে ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ভ্রাতৃপ্রতিম ও সহযোগী সংগঠনগুলোর জাতীয় সম্মেলনের কথা ভাবা হচ্ছে। তবে তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে ঠিক করে সংশিষ্টদের জানিয়ে দেওয়া হবে। চলতি মাসেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে দলের একটি সূত্র যুগান্তরকে জানিয়েছে। ওই বৈঠকে এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।
ব্যর্থতার তকমা মুছতে চায় ঢাকা মহানগর বিএনপি

ত্যাগীদের দিয়ে আন্দোলনমুখী নেতৃত্ব গড়ার উদ্যোগ

হাবিবুর রহমান খান

অতীতের ব্যর্থতার তকমা মুছে আগামীদিনে আন্দোলনমুখী নেতৃত্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে ঢাকা মহানগর বিএনপি। ইউনিট থেকে থানা পর্যন্ত যোগ্য ও ত্যাগীদের নেতৃত্বে আনতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। এ লক্ষ্যে দুই সিটিতে গঠন করা হয়েছে একাধিক উপকমিটি। ইতোমধ্যে উত্তরের ৭১টি ও দক্ষিণের ৭০টি ওয়ার্ডে নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ভেঙে দেওয়া হয়েছে দুই সিটির সব থানা কমিটি। কাউন্সিলের মাধ্যমে এসব কমিটি দ্রুত পুনর্গঠনে কাজ চলছে। শিগগিরই ওয়ার্ড ও থানা কমিটি গঠন শেষ করা হবে। এরপর কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে পুনর্গঠন করা হবে মহানগর বিএনপি।

জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অতীতে ঢাকা মহানগর বিএনপি আন্দোলন সংগ্রামে শতভাগ সফলতা দেখাতে পারেনি এটা সত্য। তারা চেষ্টা করেছে কিন্তু সরকারের ভয়াবহ নির্যাতনে তা সম্ভব হয়নি। এবার অনেক প্রত্যাশা নিয়ে ঢাকা মহানগরে নতুন কমিটি দেওয়া হয়েছে। এরা পরীক্ষিত নেতা। আন্দোলনমুখী একটা নেতৃত্ব গড়ে তুলতে বর্তমান কমিটি সফল হবে বলে আশা করি। তারা সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের মতে, আন্দোলনের সূতিকাগার হিসাবে পরিচিত ঢাকা। কিন্তু বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে ঢাকা মহানগর বিএনপি কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারেনি। সারা দেশ থেকে ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করা হলেও রাজধানীর ভেতরে এর প্রভাব পড়েনি। তারা মনে করেন, দেশের তৃণমূল পর্যায়ে যেভাবে আন্দোলন হয়েছে তার অর্ধেক ঢাকায় হলে বিজয় ঘরে তোলা সম্ভব হতো। শুধু আন্দোলন নয়, অতীতের কয়েকটি কমিটি মহানগর পুনর্গঠনেও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। কোনো কমিটিই ওয়ার্ড ও থানা কমিটি করতে পারেনি। ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকার বিরোধী আন্দোলন ব্যর্থতার অভিযোগে ঢাকা মহানগরকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। ওই বছর ১৮ জুলাই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে আহ্বায়ক ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলকে সদস্য সচিব করে ৫২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু অভ্যন্তরীণ নানা কোন্দলে সেই কমিটি সফলতা দেখাতে পারেনি। দীর্ঘদিনেও তারা পুনর্গঠন করতে পারেনি থানা ও ওয়ার্ড কমিটি। এ পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকাকে দুভাগ করে সংগঠনে গতি আনার উদ্যোগ নেয় বিএনপির হাইকমান্ড। ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল ঢাকা মহানগরকে দুভাগ করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। হাবীব উন নবী খান সোহেলকে সভাপতি ও কাজী আবুল বাশারকে সাধারণ সম্পাদক করে দক্ষিণে ৭০ সদস্যের এবং এমএ কাইয়ূমকে সভাপতি ও আহসান উল্লাহ হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে উত্তরে ৬৬ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু এ কমিটিও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। আন্দোলন-সংগ্রামের পাশাপাশি থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনেও ততটা সফলতা দেখাতে পারেনি তারা। মহানগর কমিটির বারবার ব্যর্থতার পর অনেক প্রত্যাশা নিয়ে ২ আগস্ট ঘোষণা করা হয় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি। দক্ষিণে আব্দুস সালামকে আহ্বায়ক ও রফিকুল আলম মজনুকে সদস্য সচিব করে ৪৯ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করা হয়। আর উত্তরে ৪৭ সদস্যের কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয় আমানউল্লাহ আমানকে এবং সদস্য সচিব সাবেক ফুটবলার আমিনুল হক।

নতুন কমিটি দায়িত্ব পাওয়ার পর ঢাকাকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেয়। ইউনিটি ও ওয়ার্ড পর্যায় থেকে আন্দোলনমুখী নেতৃত্ব গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। যোগ্য ও ত্যাগীদের নেতৃত্বে আনতে উত্তরে আটটি ও দক্ষিণে আটটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। একজন যুগ্ম-আহ্বায়কের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম প্রতিটি জোনের দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতিটি টিম ওয়ার্ডে গিয়ে নেতাকর্মীদের মনোবল, বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থা ও কাদের নেতৃত্বে আসা উচিত এসব বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করবে। উপ-কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা যাতে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারেন সেজন্য কাউকে নিজ এলাকায় রাখা হয়নি। ইতোমধ্যে উত্তর বিএনপির ৭১টি ওয়ার্ডের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত কমিটি নিয়ে কিছুটা অভিযোগ থাকলেও সবমিলিয়ে যোগ্যদের জায়গা দেওয়া হয়েছে বলে জানান মহানগরের নেতাকর্মীরা। মহানগরের সব গ্রুপকে সমন্বয় করে ওয়ার্ড কমিটি করা হয়েছে। ফলে কমিটি ঘোষণার পর তেমন বিদ্রোহ দেখা দেয়নি। ঘোষিত ওয়ার্ডের আহ্বায়ক কমিটিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে ইউনিট কমিটি গঠনের নির্দেশে দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা সেই কাজ প্রায় শেষ করে এনেছেন। ইউনিট কমিটি গঠন করা হলে কাউন্সিলের মাধ্যমে হবে ওয়ার্ড কমিটি। ওয়ার্ড শেষ হওয়ার পরই থানা কমিটি গঠন শুরু হবে।

দক্ষিণে পুরোদমে চলছে পুনর্গঠনের কাজ। ৭৫টি ওয়ার্ডের প্রায় সবটিতেই করা হয়েছে কর্মিসভা। রোববার একযোগে ৭০টি ওয়ার্ডের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে মহানগরকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়ে আমরা কাজ করছি। তবে কাজ দ্রুত করলেও আমাদের মূল লক্ষ্য প্রতিটি কমিটিতে যাতে যোগ্য ও ত্যাগীরা স্থান পান। ইতোমধ্যে আমরা ৭১টি ওয়ার্ডের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছি। তারা চারশ ইউনিট কমিটি গঠনের কাজ প্রায় শেষ করেছে। ঈদের পরেই এসব কমিটি ঘোষণা করা হবে। এরপরই ওয়ার্ড এবং সবশেষ করা হবে থানা কমিটি। সব কমিটি ঠিকমতো করতে পারলে মহানগর নেতৃত্ব আগামীদিনে কিছু একটা করতে পারবে বলে আশা করি। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক তানভীর আহমেদ রবিন যুগান্তরকে বলেন, আগামী দিনের আন্দোলনে কার্যকরী ভূমিকা রাখার মতো করেই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপিকে সাজানো হচ্ছে। যোগ্য ও ত্যাগীরা যাতে বাদ না পড়েন সে ব্যাপারে আমরা বেশ সতর্ক। তৃণমূলের চিত্র তুলে আনতে দক্ষিণ বিএনপিকে আটটি জোনে ভাগ করা হয়েছে। যোগ্য ও ত্যাগীদের সমন্বয়ে গঠন করা হবে সব কমিটি।-যুগান্তর