Home রাজনীতি নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া সংকটের সমাধান নেই: বাম জোট

নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া সংকটের সমাধান নেই: বাম জোট

45

স্টাফ রিপোটার: বাম গণতান্ত্রিক জোট আয়োজিত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, বর্তমান রাজনৈতিক সংকট দূর করতে, সংঘাতের হাত থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচাতে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা শুরু করতে হবে। এছাড়া একতরফা নির্বাচনের প্রচেষ্টা দেশকে আরো সংঘাতের দিকে ঠেলে দিবে। এধরনের পরিস্থিতিতে দেশি-বিদেশি আধিপত্যবাদী অপশক্তি মাথাচাড়া দেওয়ার সুযোগ পাবে। নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া সংকটের সমাধান নেই।
নেতৃবৃন্দ বিরোধী দলের সভা সমাবেশে হামলা-মামলা ও অহেতুক নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, জনগণের কন্ঠরোধের এধরনের অপচেষ্টা করে কেউ অতীতে ক্ষমতায় থাকতে পারেনি; এ সরকারও পারবে না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, জনজীবনে নাভিশ্বাস। নিত্যপণ্যের মূল্যে কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। জনগণকে অসহায় করে লুটেরারা পকেট ভারী করছে। সরকারের উন্নয়নের গল্প সাধারণ মানুষের কাছে ফানুস এ পরিণত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে চলমান আওয়ামী সরকারের দুঃশাসনের অবসানের সাথে ব্যবস্থা বদলের সংগ্রাম অগ্রসর করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার যেনতেন প্রকারে আরেকটি নির্বাচন পার করাতে চায়। জনগণের দাবি উপেক্ষা করে এধরনের অপচেষ্টার ফল শুভ হবে না। এধরনের অপচেষ্টা রুখতে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষকে রাজপথে সংগ্রামে শরিক হয়ে গণআন্দোলন, গণসংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।
নেতৃবৃন্দ রাজনৈতিক সহিংসতায় সাধারন মানুষ, পুলিশ, সাংবাদিক নিহত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এর সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের জন্য কারোর মৃত্যু কাম্য নয়। অথচ পাল্টাপাল্টির নীতিহীন রাজনীতি মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে।
বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়নের প্রতিবাদে, সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের দেশব্যাপী সমাবেশ বিক্ষোভে আজ ৩০ অক্টোবর ২০২৩ বিকেল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জোটের সমন্বয়ক বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেনর প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)’র সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাসদ (মার্কসবাদী)’র সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির নেতা শহিদুল ইসলাম সবুজ, সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী। সমাবেশ পরিচালনা করেন সিপিবির সম্পাদক অ্যাড. আনোয়ার হোসেন রেজা।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, এই সংকটে একাত্তরের ঘাতক জামাত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশি আধিপত্যবাদী শক্তি নানা ধরনের অপতৎপরতা চালানোর সুযোগ নিচ্ছে। ক্ষমতাসীন দল ও শুধুমাত্র ক্ষমতাশ্রয়ী রাজনৈতিক গোষ্ঠীর মদদে তারা এই অপতৎপরতার সুযোগ পাচ্ছে। নেতৃবৃন্দ নীতিনিষ্ঠ বাম গণতান্ত্রিক শক্তির পতাকাতলে সমবেত হয়ে আওয়ামী দুঃশাসনের অবসানে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে সচেতন দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ জনমত উপেক্ষা করে একতরফা নির্বাচনের ঘোষণা না দিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান। জনগণের দাবি উপেক্ষা করে একতরফা নির্বাচনের ঘোষণা দিলে দেশব্যাপী নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে এবং ৪ নভেম্বর দেশব্যাপী বিক্ষোভ সংগঠিত করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
সমাবেশ থেকে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আগামী ৪ নভেম্বর দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পল্টন মোড়ে এসে শেষ হয়।