Home সারাদেশ নাটোরে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ, ৩ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত অন্তত ২৫ জন

নাটোরে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ, ৩ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত অন্তত ২৫ জন

19

বুলবুল আহমেদ নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরে বিএনপির অবস্থান কর্মসুচিতে সরকার দলীয় কর্মীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।এ সময় পুলিশের ওপরও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় তিন যুবদল নেতা গুলিবিদ্ধ হওয়ার দাবি করেছেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ। আহত ওই তিনজন হলেন কাফুরিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফ, যুবদল কর্মী শৈবাল ও রনি ব্যাপারী। এছাড়া আহত হয়েছেন জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চুসহ আরো অন্তত ২০ জন। গুরুতর আহত অবস্থায় শরিফকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকীদের নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকেও দাবি করা হয়েছে আওয়ামীলীগ নেতা অ্যাডভোকেট উজ্জল হোসেন সায়েম ও যুবলীগ সাধারন সম্পাদক রুহুল আমিন বিপ্লব বেশ কয়েকজন নেতা কর্মী আহত হয়েছেন। আজ শনিবার দুপুর ২ টায় শহরের উপশহরে একই স্থানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সভা আহ্বান করে। তবে একই স্থানে সভা হওয়া সত্বেও ১৪৪ ধারা জারি করেনি স্থানীয় প্রশাসন।
জানা যায়, শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে শিহরের আলাইপুর এলাকায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি তাদের অবস্থান কর্মসুচী শুরু করে। জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চুর সভাপতিতে অবস্থান কর্মসুচীতে প্রধান অতিথি হিসেবে কেন্দ্রিয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস দুলু বক্তৃতা করার সময় ওই অবস্থান কর্মসুচীতে হামলা চালায় সরকারী দলের নেতা কর্মীরা। সভাস্থলে উপস্থি নেতৃবৃন্দ দলীয় কার্যালয়ের মধ্যে ঢুকে আত্মরক্ষা করেন। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দও শোনা যায়। ঘটনার সময় সরকার দলীয় কর্মীদের মারপিটে ও ইটের আঘাতে কাফুরিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি শরিফ গুরুতর আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে বলে দলীয় সুত্র জানায়। শনিবার দুপুরে শহরের আলাইপুরে জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এঘটনা ঘটে। বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ জানান, তাদের পূর্বঘোষিত কর্মসুচি অনুযায়ী দলীয় কার্যালয়ের সামনে তাদের অবস্থান ধর্মঘট চলছিল। ধর্মঘটস্থলে বক্তব্য রাখছিলেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। এ সময় আলাইপুর উপশহর মাঠে আওয়ামী লীগের ডাকা শান্তি সমাবেশে যাচ্ছিল সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরা। দুলুর বক্তব্য চলাকালে সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। সরকার দলীয় কর্মীদের মারপিটে এবং ইটের আঘাতে যুবদলের এক কর্মী গুরুতর আহত হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনার জন্য বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলূ সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের দায়ী করেছেন। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এদিকে প্রায় একই সময়ে পৌর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল বের করে শহরের মুসলিম ইন্সটিটিউট পেরিয়ে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের দিকে আসতে থাকে। এসময় জেলা বিএনপির কার্যালয়ের অদূরে ছাত্রলীগ সাধারন সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শাহীনের নেতৃত্বে একটি মিছিল এসে পুলিশি বাধা অতিক্রম করে বিএনপি কার্যালয়ের দিকে যায় এবং তারা কার্যালয় লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এসময় বিএনপি কার্যালয়ের ছাদ থেকে পাল্টা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় উভয় পক্ষকে থামাতে পুলিশ ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। সংঘর্ষের সময় বিএনপি কার্যালয়ের সামনে কাফুরিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফ গুলিবিদ্ধ হয় বলে দাবি বিএনপির। দু পক্ষের আরো অন্তত ২৫ জন আহত হয়। সংঘর্ষের সময় জেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানসহ দলের কয়েকজন শীর্ষ নেতা ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত দলীয় কর্মীদের ফিরিয়ে আনেন। পরে তারা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে শান্তি সমাবেশ করে। শান্তি সমাবেশে আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান দাবি করে বলেন,বিএনপি বিনা উস্কানিতে আওয়ামীলীগ কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। তিনি অভিযোগ করেন,জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু গুলিবর্ষন করেছেন। শহিদুল ইসলাম বাচ্চুকে অবিলম্বে গ্রেফতার সহ তার অস্ত্র উদ্ধার করার দাবি জানান তিনি। আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ জানান, বিএনপি’র সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়েছে। তবে পুলিশ গুলির কথা স্বীকার করেনি।এই শান্তি সমাবেশে সংরক্ষিত আসনের মহিলা এমপি রত্না আহমেদ, অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, সৈয়দ মোর্তুজা আলী বাবলু,অ্যাডভোকেট মালেক শেখ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করেন