Home সারাদেশ ধেঁয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মোখা।। সাগর উত্তাল।।

ধেঁয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মোখা।। সাগর উত্তাল।।

79

দৃষ্টি ফেইসবুক কিংবা বিভিন্ন গনমাধ্যমে।। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সাগর পাড়ের মানুষ।। মাছধরা ট্রলার নিরাপদ আশ্রয়ে

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি: ধেঁয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। এর প্রভাবে উপক‚লীয় পটুয়াখালীর কলাপাড়য় গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সাগর পাড়ের মানুষ। শনিবার সকাল থেকেই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। বাতাসের চাপ কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। নদ-নদীর পানির উচ্চতা দেড় থেকে দুই ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর বেশ উত্তাল রয়েছে। গভীর সমুদ্রে জেলেরা মাছ ধরা বন্ধ করে সকল ট্রলার মৎস্য বন্দর মহিপুর আলীপার আড়ৎ ঘাট সহ বিভিন্ন পয়েন্টে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে।
এদিকে কয়েকদিন ধরে ঘুর্নিঝড় মোখা নিয়ে মানুষের দৃষ্টি ফেইসবুক কিংবা বিভিন্ন গনমাধ্যমে থাকলেও শুক্রবার রাতে হঠাৎ করে পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৮ নাম্বার মহাবিপদ সংকেত ঘোষনা করায় মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে পৌরশহর সহ উপজেলার বিভিন্ন বাজার গুলোতে হঠাৎ করে মানুষের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে।
মানুষ সাধ্যমত কেউ এক সপ্তাহ কিংবা তিন দিনের শুকনা খাবার,গ্যাসলাইট, আলু ,ডাল কিনে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। নদী সংলগ্ন বাসা-বাড়ী কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদেরও দেখা গেছে ব্যস্ততম সময় কাটাতে। তাদের অধিকাংশের ভয় জলোচ্ছ¡াস নিয়ে। অপরদিকে,বসতঃবাড়ীর মানুষজন তাদের আসবাবপত্র অপেক্ষাকৃত উঁচুস্থানে নিতে আপ্রান চেষ্টা চালিয়েছেন। ঘূর্ণিঝড় মোখা’র শঙ্কায় রীতিমতো দুশ্চিন্তায় উপক‚লীয় কৃষকরা। এমন পরিস্থিতিতে পাকা বোরো ধান ছাড়াও রবিশস্যসহ সংগ্রহ উপযোগী ফসল দ্রæত কাটা এবং আউশের চাষ ও আউশের বীজতলা রক্ষায় পরামর্শ দিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। তাই কৃষকরা আগে ভাগেই দিন রাত সমান তালে নিজ নিজ ক্ষেতের ফসল তুলতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছেন।
এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষক তাদের গবাদিপশু নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছেন। সাগরে মাছ শিকাররত হাজার হাজার জেলে তাদের ট্রলার নিয়ে ফিরেছেন নিরাপদে।
২০০৭ সালে ১৫ নভেম্বর সুপার সাইক্লোন সিডর হঠাৎ পাঁচ মিনিটের জলোচ্ছ¡াসে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে মানুষের জীবন-মান । দীর্ঘ ১৬ বছর অতিবাহিত হলেও অনেকে সেই ক্ষতি পুশিয়ে উঠতে পারেনি। সেই ক্ষতির আশংকা থেকে রেহাই পেতে মানুষ হঠাৎ ৮ নাম্বার মহাবিপদ সংকেতকে ভয়াবহ সংকেত মনে করেই আতংকিত হয়ে পড়েছিল। এমন সংকেতে মানুষ যেন চরম বিপদের মুখোমুখি না হয়, সে কারনেই বিভিন্ন ধর্মাবালম্বী মানুষ নিজ নিজ উপসনালয়ে প্রার্থনার পাশাপাশি মানত করতে দেখা গেছে।
ঘুর্নিঝড় মোখা মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন ১৭৫ টি সাইক্লোন শেল্টার সহ ১৯টি মুজিব কিল্লা নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। এছাড়া শুকনা খাবার এবং মেডিকেল টিম প্রস্তত রেখেছে।
এছাড়া সিপিপি উপজেলার ১৫৮টি টিমের ৩১৬০ জন সদস্যদের সক্রিয় অবস্থানে রয়েছে। বিভিন্ন টিম লিডাররা মাইকিং করে জনসাধারনকে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য বার্তা দিয়ে যাচ্ছে বলে সিপিপি উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো.জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, জন সাধারনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১৭৫ টি সাইক্লোন শেল্টার এবং ১৯ টি মুজিব কিল্লা রেডি রাখা হয়েছে। এছাড়া শুকনা খাবার এবং বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা সহ মেডিকেল টিম সক্রিয় থাকবেন বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।